কাটমানি ইস্যুতে তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানকে নিশানা করে ‘বাপবাপান্ত’ও করলেন বিধায়ক। —নিজস্ব চিত্র।
প্রকাশ্য সভায় বিরোধীদের অভিযোগকে কার্যত সিলমোহর দিলেন তৃণমূল বিধায়ক। কাটমানি ইস্যুতে তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানকে নিশানা করে ‘বাপবাপান্ত’ও করলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট পশ্চিমের তৃণমূল বিধায়ক গিয়াসউদ্দিন মোল্লা। উত্তর কুসুমগ্রাম পঞ্চায়েতে ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচিতে গিয়ে গিয়াসউদ্দিনের প্রশ্ন, ‘‘আর কত খাবেন? হাতে আর মাত্র ৩ মাস।’’
সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে সমস্ত রাজনৈতিক দল নিজেদের সংগঠন মজবুত করতে মরিয়া। এই সময়ে দাঁড়িয়ে মগরাহাটে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল চলে এল প্রকাশ্যে। গিয়াসউদ্দিনের হুঁশিয়ারি-ভিডিয়ো ইতিমধ্যে সমাজমাধ্যমে ভাইরাল। যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি।
কেন হঠাৎ এমন বলতে গেলেন তিনি? গিয়াসউদ্দিনের কথায়, ‘‘দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসুচিতে পঞ্চায়েতে গিয়েছিলাম। কিন্তু পঞ্চায়েত অফিসে তালা মেরে রাখা হয়েছিল। প্রধান, উপপ্রধান, পঞ্চায়েত সদস্য— কেউই আসেননি। সব সদস্যকেই সুবিধা-অসুবিধার কথা বলি। কিন্তু কেউ আসেননি।’’ এর পরেই গিয়াসউদ্দিনের সংযোজন, ‘‘পঞ্চায়েত কি বাপের সম্পত্তি? আর তিনটে মাস বাকি আছে (পঞ্চায়েত ভোটের দিকে ইঙ্গিত করে)। কত বাপের বেটা আমরা দেখে নেব।’’ এখানেই থামেননি তৃণমূল বিধায়ক। বলেন, ‘‘বাপ সাইকেল নিয়ে ঘুরে বেড়াত। বাপ জন্ম দিয়েছে, কর্ম করেছে? কর্ম করেছে গিয়াসউদ্দিন মোল্লা। গিয়াসুদ্দিন মোল্লা কর্ম করতেই সে খারাপ। আপনারা উত্তর কুসুমের লোক। আপনারা যদি ঠিক থাকেন ৩ মাস পরে পঞ্চায়েত হবে। পঞ্চায়েতের বুথে বুথে আমরা ভাল এবং শিক্ষিত লোকদের টিকিট দেব।’’
অন্য দিকে, বিধায়কের মন্তব্যের পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিতে দেরি করেননি উত্তর কুসুমের পঞ্চায়েত প্রধান কুতুব লস্কর। তিনি বিধায়কের নাম না নিয়ে তাঁকে ‘ভদ্রলোক’ বলে সম্বোধন করে বলেন, ‘‘যা বলেছেন তা মিথ্যে কথা। আমি জনগণের দ্বারা নির্বাচিত। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সততার সঙ্গে কাজ করছি। আগামিদিনে কী হবে তার উত্তর জনগণই দেবেন। কে কী বলল তা নিয়ে আমার কিছু যায়-আসে না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ছুটির দিনের কর্মসূচি নিয়ে আমায় আগে থেকে কিছু জানানো হয়নি।’’
এই বিষয়ে কটাক্ষ করার সুযোগ হাতছাড়া করেনি বিরোধীরা। বিজেপি নেতা সুফল খাটু বলেন, ‘‘রাজ্যের পঞ্চায়েতগুলি দুর্নীতির আখড়া হয়ে গিয়েছে। প্রায় সময় এই দুর্নীতি বিষয়ে সরব হতে দেখা গিয়েছে রাজ্যের বিরোধী দলগুলিকে। বিধায়কের কথাতে সেটাই স্পষ্ট হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy