দলের কর্মিসভায় পর পর অনুপস্থিত কামারহাটি পুরসভার কাউন্সিলরেরা। আবার কেউ কেউ সভার মধ্যেই উঠে বাইরে বেরিয়ে গিয়েছেন। এই বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে ওই কাউন্সিলরদের উদ্দেশে তোপ দাগলেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। তাঁর হুঁশিয়ারি, এ বার উপস্থিতি এবং অনুপস্থিতির হিসাব নেওয়া হবে। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা হবে। তবে এ জন্য ‘অভিযুক্ত’ কাউন্সিলরদের কেউ কেউ তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগও করতে পারেন বলে মন্তব্য মদনের।
বৃহস্পতিবার কামারহাটির নজরুল মঞ্চে তৃণমূলের কর্মিসভায় মদন ছাড়াও ছিলেন পার্থ ভৌমিক, সৌগত রায়, নির্মল ঘোষ, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়েরা। সাংসদ এবং বিধায়কেরা থাকলেও পুরসভার বেশ কয়েক জন কাউন্সিলর অনুপস্থিত দেখে রেগে যান কামারহাটির বিধায়ক। তিনি বলেন, ‘‘অনেক কাউন্সিলর আছেন, যাঁরা পর পর পাঁচটি মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করেননি! কী ভাবছেন, হরিদাস পাল? এখনই যদি গা থেকে তৃণমূলের জামাটা খুলে নেওয়া হয় এবং কাউন্সিলর পদটা সরিয়ে দেওয়া হয়, তা হলে পাড়ার কুত্তাটাও পায়ে কামড় দেবে।’’ তৃণমূল বিধায়কের এ-ও অভিযোগ, ওই সভায় উপস্থিত ৪০ শতাংশ লোকজন তৃণমূল সরকারের দেওয়া চাকরি করছেন। তার পরেও তাঁরা দলীয় সভায় থাকেন না। তিনি বলেন, ‘‘এর পর কামারহাটিতে এক দিন মিটিং ডাকতে বলব। কারা মিটিংয়ে আসবেন না, তার প্রতিযোগিতা করার জন্য। কান খুলে শুনে নিন, ২৪ ঘণ্টার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি ঘোষণা করে দেন কামারহাটিতে তৃণমূল বন্ধ করে দেওয়া হবে, বাড়িতে থাকতে পারবেন না। তৃণমূল নেতাদের পায়ে এসে পড়তে হবে।’’
এখানেই শেষ হয়নি মদন-বাণ। তিনি অনুপস্থিত কাউন্সিলরদের ‘বিদ্ধ’ করতে গিয়ে বলেন, ‘‘অবিলম্বে এমএলএ (বিধায়কের) অফিসে রিপোর্ট দেবেন। প্রতি তিন দিন অন্তর ওয়ার্ডে থেকে রিপোর্ট নিন। ক’জন কর্মী আসছেন। প্রত্যেকটা ওয়ার্ডে যান, সই দেখান। এমন অনেক কাউন্সিলর আছেন, যাঁরা পর পর পাঁচটা মিটিংয়ে আসেন না।’’ বিধায়কের সংযোজন, ‘‘আমার নামে অভিযোগ হতে পারে দলের কাছে, কর্মিসভায় এই সব বলার জন্য। তার পরেও...।’’
আরও পড়ুন:
কর্মিসভায় উপস্থিতি নিয়ে মদনের বক্তব্য, যাঁরা তৃণমূলের বদান্যতায় চাকরি পেয়েছেন, কাজ করছেন, তাঁদের চেয়ে যাঁরা কিছুই পাননি, দলের জন্য তাঁরা কাজ করছেন। নিঃস্বার্থ ভাবে করছেন। উল্লেখ্য, এর আগে তৃণমূলের পরামর্শদাতা সংস্থা আইপ্যাকের উদ্দেশে সরাসরি ‘তোলাবাজি’ করার অভিযোগ করেছিলেন কামারহাটির বিধায়ক। বিতর্কের সৃষ্টি হয়। দল তাঁর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক ভাবে কোনও পদক্ষেপ করার আগে মদনই ক্ষমাপ্রার্থনা করে চিঠি দেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীকে। তার পর বেশ কিছু দিন দল নিয়ে বিশেষ কিছু বলতে শোনা যায়নি প্রাক্তন মন্ত্রীকে। এ বার নিজের বিধানসভা এলাকায় কাউন্সিলর থেকে কর্মীদের একাংশকে নিশানা করলেন তিনি।