E-Paper

পেট্রাপোলে ‘কমেছে’ যাত্রী, চিন্তিত অনেকে

অভিবাসন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন দৈনিক গড়ে দু’হাজার মানুষ পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে পাসপোর্ট-ভিসা নিয়ে যাতায়াত করছেন।

সীমান্ত মৈত্র  

শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০২৫ ০৮:৫১
ফাঁকা দোকানে বসে ব্যবসায়ী।

ফাঁকা দোকানে বসে ব্যবসায়ী। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক ।

গত কয়েক মাসে পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে পাসপোর্ট-ভিসা নিয়ে মানুষের যাতায়াত অনেকাংশেই কমে গিয়েছে বলে দাবি সংশ্লিষ্ট নাা মহলের। এর প্রভাব পড়েছে পেট্রাপোল সীমান্তকেন্দ্রীক অর্থনীতিতে। পেট্রাপোল বন্দরে থাকা মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্র, বেসরকারি বাস পরিষেবা, যানবাহন, দোকান, হোটেল যাত্রীর অভাবে ধুঁকছে।

অভিবাসন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন দৈনিক গড়ে দু’হাজার মানুষ পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে পাসপোর্ট-ভিসা নিয়ে যাতায়াত করছেন। গত বছর ৫ অগস্ট বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগে এই সীমান্ত দিয়ে দৈনিক গড়ে সাড়ে ছ’হাজার মানুষ যাতায়াত করতেন বলে অভিভাবসন দফতর সূত্রের খবর।

বনগাঁ মহকুমার কয়েক হাজার মানুষের মানুষের রুজিরোজগার পেট্রাপোল বন্দরের উপরে নির্ভরশীল। পেট্রাপোল থেকে কলকাতার মধ্যে বেসরকারি বাস চলাচল করে। পেট্রাপোল চেকপোস্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলাদেশি যাত্রীদের নিয়ে পেট্রাপোল থেকে কলকাতার মধ্যে ৩৭টি বাস যাতায়াত করে। সংগঠনের কর্মকর্তা দীপক ঘোষ বলেন, ‘‘যাত্রীর অভাবে বাস পরিষেবা কার্যত বন্ধের মুখে। এখানে ৯টি পরিবহণ সংস্থায় প্রতিটিতে গড়ে ৫০ জন করে কর্মী আছেন। আয় না থাকায় কর্মী ছাঁটাই করতে হচ্ছে।’’

সারি সারি দাঁড়িয়ে আছে একের পর এক বাস। যাত্রীদের দেখা নেই। ফলের দোকানে সাজানো আছে আপেল, কমলালেবু, আঙুর, বেদানা কলা, মুসুম্বিলেবুৃ— ক্রেতার ভিড় নেই। ফাঁকা ফাঁকা অটো, ছোট গাড়ির স্ট্যান্ড। ‘হ্যান্ড কুলি’দের অনেকে দেখা গেল, বাঁশের মাচায় ঘুমোচ্ছেন। কেউ তাস খেলছেন। হোটেল, খাবারের দোকানগুলি খাঁ খাঁ করছে। মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্রগুলি কার্যত শুনশান।

পেট্রাপোল সীমান্ত থেকে অনেক বাংলাদেশি অটো ধরে বনগাঁ স্টেশনে এসে ট্রেন ধরে গন্তব্যে যান। পেট্রাপোল থেকে বনগাঁ স্টেশন পর্যন্ত শ’খানেক অটো যাতায়াত করে। এখন যাত্রীর অভাবে অটো চালকদের রোজগার কমে গিয়েছে বলে জানালেন অনেকে। ছোট গাড়ির চালকদেরও একই অবস্থা।

পেট্রাপোল বন্দরে প্রচুর ফলের দোকান, কসমেটিক্সের দোকান, মনিহারি দোকানস চায়ের দোকান, খাবারের দোকান, হোটেল আছে। বাংলাদেশিরা এখান থেকে কেনাকাটা করেন। এখন দোকানগুলিতে চলছে ক্রেতার অভাব। এক ফলের দোকানি বললেন, ‘‘কার্যত কোনও ক্রেতারই দেখা মিলছে না।’’

যাত্রীদের ব্যাগ, মালপত্র বহন করার জন্য প্রচুর ‘হ্যান্ড কুলি’ আছে। তাঁদেরও রুজিরোজগার ধাক্কা খেয়ে। এক জন বললেন, ‘‘৬ অগস্ট থেকে অনেকেই যাত্রীর অভাবে কাজ ছেড়ে চাষের জমিতে কাজ করতে শুরু করেছেন। এ ভাবে চলতে থাকলে খুবই সমস্যা হবে।’’

একটি কেন্দ্রের মালিক কার্তিক ঘোষ বলেন, ‘‘৬ অগস্টের পরে পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হয়েছিল। আবার যাত্রীর অভাব দেখা যাচ্ছে।’’ বাংলাদেশের সামাজিক, রাজনৈতিক অস্থির পরিস্থিতির জন্যই এমন ঘটছে বলে মনে করছেন অনেকে। তবে বন্দরকেন্দ্রিক অর্থনীতির উপরে নির্ভরশীল কয়েক হাজার মানুষ চাইছেন, দ্রুত দু’দেশের সম্পর্কের উন্নতি হোক, ব্যবসার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হোক।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bangladesh Petrapol

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy