বাংলাদেশি ১২ জন মৎস্যজীবীকে প্রাণে বাঁচিয়ে সম্মানিত হলেন কাকদ্বীপের বিদ্যানগরের বাসিন্দা, ট্রলারের মাঝি প্রাণকৃষ্ণ দাস। উপকূলরক্ষী বাহিনীর পক্ষ থেকে তাঁকে সম্মানিত করা হয়। ২৮ নভেম্বর কেরলের কোচি শহরে এক অনুষ্ঠানে তাঁর হাতে ‘সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ অ্যাওয়ার্ড ফর ফিশারম্যান, ২০২৩-২৪’ সম্মান তুলে দেওয়া হয়েছে। দিন কয়েক আগে পুরস্কার নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন প্রাণকৃষ্ণ।
মৎস্যজীবী সংগঠন সূত্রে জানা যায়, কাকদ্বীপের মৎস্যবন্দর থেকে ১০ সেপ্টেম্বর একটি ট্রলার ১৭ জন মৎস্যজীবীকে নিয়ে গভীর সমুদ্রে পাড়ি দিয়েছিল। পর দিন প্রাকৃতিক দুর্যোগে সমুদ্র উত্তাল হয়ে ওঠে। ঝুঁকি নিয়ে ওই ট্রলারের মাঝি প্রাণকৃষ্ণ মৎস্যজীবীদের নিয়ে উপকূলের দিকে ফেরার সময়ে ঢেউয়ের মধ্যেই ভাসতে দেখেন দু’জনকে। তাঁদের উদ্ধার করার পরে প্রাণকৃষ্ণ জানতে পারেন, বাংলাদেশের একটি ট্রলার দুর্যোগের জেরে উত্তাল সমুদ্রে ডুবে গিয়েছে।
ওই দু’জন মৎস্যজীবী ছাড়া আরও অনেকে সেখানে ছিলেন। প্রাণকৃষ্ণ বলেন, ‘‘ঝোড়ো হাওয়া আর ঢেউ ভেঙে খুঁজতে শুরু করি বাকিদের। বঙ্গোপসাগরের কেঁদো দ্বীপ থেকে কিছুটা দক্ষিণে, ভারত-বাংলাদেশের জলসীমানায় খোঁজ মেলে আরও ১০ জনের। প্রায় ৩৬ ঘণ্টা কয়েকটি বাঁশ ধরে সমুদ্রে ভেসেছিলেন তাঁরা।’’ ১৩ সেপ্টেম্বর প্রাণকৃষ্ণ সকলকে অক্ষত অবস্থায় নিয়ে পাথরপ্রতিমার ঘাটে পৌঁছন। সে সময়ে বাংলাদেশের ১২ জন মৎস্যজীবী উদ্ধার হলেও এখনও নিখোঁজ এক জন।
পুরস্কার পেয়ে প্রাণকৃষ্ণ বলেন, ‘‘মৎস্যজীবীদের উদ্ধার করার জন্য সম্মান পাওয়ার কথা ভাবিনি। ভাল লাগছে।’’ কাকদ্বীপ মৎস্যজীবী ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিজন মাইতি বলেন, ‘‘এই সম্মান গভীর সমুদ্রে বিপদে-আপদে একে অন্যকে সাহায্য করতে অনুপ্রাণিত করবে।’’
সুন্দরবন পুলিশ জেলার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘দুর্যোগে উদ্ধার হওয়া ১২ জন বাংলাদেশের মৎস্যজীবী বারুইপুর জেলে রয়েছেন।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)