দু’পক্ষের মারামারিতে এক যুবকের মৃত্যু ঘিরে সোমবার বিকেলে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল জয়নগরের বকুলতলা থানার বুইচবাটি এলাকা। অপরাধীদের গ্রেফতারের দাবিতে রাস্তায় বসে, দেহ আটকে দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ দেখান এলাকার বাসিন্দারা। পুলিশকে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। স্থানীয় বিধায়ক এলাকায় গেলে তাঁকেও আটকে দেন বিক্ষোভকারীরা। পরে পুলিশের বড় দল এসে অবরোধকারীদের সরিয়ে দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠায়। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত চলছে। সোমবার রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।
ঘটনার সূত্রেপাত রবিবার রাতে। বুইচবাটি গ্রামে একটি রাস্তার মোড়ে পাশের এলাকার কিছু যুবক নিয়মিত মদ্যপান করে বলে অভিযোগ। মত্ত অবস্থায় তারা গালিগালাজ করে। রবিবার রাতে স্থানীয় কিছু যুবক এ সবের প্রতিবাদ করেন। এ নিয়ে বচসা, মারামারি হয়। অভিযোগ, গ্রামের ছেলেদের মারে মত্ত যুবকদের কয়েক জন জখম হন। বোমাবাজি হয় বলেও অভিযোগ। পুলিশ আসে। তখনকার মতো বিষয়টি মিটে যায়।
সোমবার সকালে পাশের এলাকার ছেলেরা ফের গ্রামে এসে আগের রাতে যারা মারধর করেছিল, তাদের উপরে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। মারধরে মহিলা-সহ কয়েক জন জখম হন। মারামারির মধ্যে পড়ে জখম হন সায়েম আলি খান (৩৬) নামে এক যুবক। পরিবার সূত্রের খবর, সায়েম প্রতিবাদীদের দলে ছিলেন না। তাঁর কিছু আত্মীয় ছিলেন। এ দিন তাঁদের না পেয়ে সায়েমকেই বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। তাঁকে নিমপীঠ গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে পাঠানো হয় বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে। সেখান থেকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়েছিল, তবে রাস্তাতেই মৃত্যু হয় তাঁর।
বিকেল নাগাদ সায়েমের দেহ এলাকায় ফিরলে উত্তেজনা ছড়ায়। গ্রামের মানুষ একজোট হয়ে দেহ আটকে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে বকুলতলার পাশাপাশি পাশের কুলতলি থানার পুলিশও আসে।
সায়েমের স্ত্রী হামিদা খান বলেন, “আমার স্বামী সাতেপাঁচে থাকতেন না। দিনমজুরি করে সংসার চলত। ওই রাতে উনি ঘটনাস্থলে ছিলেন না। অথচ, ওঁকে এ ভাবে খুন করা হল। জানি না সংসার কী ভাবে চলবে।”
বিধায়ক বিশ্বনাথ দাসের দাবি, সায়েম তৃণমূল করতেন। যারা মেরেছে, তারা সিপিএম-আইএসএফ করে। যদিও সিপিএম বা আইএসএফ নেতৃত্ব তা মানেননি। স্থানীয় সূত্রের অবশ্য দাবি, দু’পক্ষই তৃণমূলের একই গোষ্ঠীর লোক।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)