মেলার উদ্বোধনের দিন গঙ্গাসাগরে এসে হয়রান হলেন বহু পুণ্যার্থী। মঙ্গলবারই ঘন কুয়াশার জেরে কাকদ্বীপের লট ৮ থেকে কচুবেড়িয়া পর্যন্ত মুড়িগঙ্গা নদীতে প্রায় দেড়-দু’ঘণ্টা বন্ধ ছিল ভেসেল পরিষেবা। বুধবার নদীতে চরার কারণে বিকেল সাড়ে ৪টে থেকে লট ৮ চার নম্বর জেটি থেকে প্রায় ১০০ মিটার দূরে যাত্রী বোঝাই ভেসেল আটকে থাকে প্রায় দু’ঘণ্টা।
যাত্রীদের ক্ষোভ, কোটি কোটি টাকা খরচ করে ড্রেজ়িং করার পরেও ভোগান্তি এড়ানো যাচ্ছে না। যদিও প্রশাসনের তরফে দাবি, ভেসেল পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে সব রকম ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘বিষয়টি শুনেছি। চরের ওই অংশ দ্রুত ড্রেজ়িং করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আশা করছি, আর এ ধরনের সমস্যা হবে না।’’
বুধবার সন্ধ্যায় মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত। সঙ্গে ছিলেন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা ও সুন্দরবন পুলিশ জেলার সুপার কোটেশ্বর রাও নালাভাট। এ বছর মেলায় প্রায় ৫০ লক্ষ পুণ্যার্থী আসতে পারেন বলে মনে করছে প্রশাসন। প্রশাসন সূত্রে খবর, এ বার পুণ্যস্নান শুরু হবে ১৫ জানুয়ারি মকর সংক্রান্তির দিন। ওই দিন বেলা ১২টা ১৩ মিনিট থেকে ১৬ জানুয়ারি সকাল ৯টা ১৩ মিনিট পর্যন্ত পুণ্যস্নানের যোগ রয়েছে। মেলার ক’দিন ২২৫০টি সরকারি ও ৫০০টি বেসরকারি বাস চালু থাকবে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। জলপথে ৪টি বার্জ, ৩২টি ভেসেল ও ১০০টি লঞ্চ চলবে। নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে ১০টি অস্থায়ী দমকল চালু হয়েছে। মোতায়েন থাকছে ২৫টি ইঞ্জিন। কলকাতার বাবুঘাট থেকে গঙ্গাসাগর পর্যন্ত বসানো হয়েছে এগারোশো সিসি ক্যামেরা। ড্রোনের সাহায্যে আকাশপথে ও স্পিড বোটে নজরদারি চলবে। মেগা কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে গোটা বিষয়টির উপরে নজরদারি রাখা হবে। গত বারের মতো এ বছরও ১২, ১৩ ও ১৪ জানুয়ারি সমুদ্র-আরতির ব্যবস্থা হয়েছে। এ ছাড়া, মেলায় অস্থায়ী দোকানগুলির খাবারের গুণমান যাচাইয়ের ব্যবস্থা থাকছে। পুণ্যার্থীদের জন্য ৫ লক্ষ টাকার বিমাও চালু করেছে প্রশাসন। মেলা প্রাঙ্গণে ইতিমধ্যে পসরা সাজিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
জেলাশাসক বলেন, ‘‘বুধবার থেকে সরকারি ভাবে মেলা শুরু হয়েছে। পুণ্যার্থীদের সুবিধার জন্য একাধিক পদক্ষেপ করা হয়েছে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)