উদ্ধার: দেগঙ্গার আমিনপুরের একটি বাড়ি থেকে পাওয়া যায় এই তক্ষকটিকেই। নিজস্ব চিত্র
আন্তর্জাতিক বাজারে তক্ষকের দাম কয়েক লক্ষ টাকা— এই গুজবকে হাতিয়ার করে উত্তর ২৪ পরগনা জুড়ে তক্ষক পাচারকারীদের বাড়বাড়ন্ত খুব কম নয়। পুলিশ ইতিমধ্যে কয়েক জনকে গ্রেফতার করে জেলেও পাঠিয়েছে। তার পরেও পাচারকারীদের দৌরাত্ম্য কমেনি। এরই মধ্যে একটি বড় তক্ষককে ধরে কোনও প্রলোভনে পা না দিয়ে সেটিকে বন দফতরের হাতে তুলে দিলেন দেগঙ্গার মানুষ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, কয়েক দিন ধরেই দেগঙ্গার আমিনপুরের বাসিন্দা দিলীপ সেনের বাড়িতে ‘টক টক’ শব্দে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল। গোটা বাড়ি তল্লাশি চালিয়ে দেখা যায়, ঘরে ঘাঁটি গেড়েছে তক্ষকটি। খবর যায় পুলিশ ও বন দফতরে। কিন্তু দিন কয়েক আগে বন দফতরের কর্মীরা এসে তক্ষকটিকে খুঁজে না পেয়ে ফিরে যান।এর পরে মঙ্গলবার রাতে ফের দেখা যায়, দিলীপবাবুদের ঘরে ঘুরে বেড়াচ্ছে বড় একটি তক্ষক। বাড়ির লোকজন ও স্থানীয় কয়েক জন বাসিন্দা সেটিকে ধরে রাখেন। তক্ষকটিকে জল খেতে দেন তাঁরা। জেলা বন দফতরে বিষয়টি জানানো হলে বুধবার বনকর্মীরা তক্ষকটিকে নিয়ে যান। দফতরের এক কর্মী অনিমেষ মণ্ডল জানান, প্রলোভনে পা না দিয়ে বাসিন্দারা তক্ষকটিকে ধরে তার প্রাণরক্ষা করেছেন।বন দফতরের বারাসতের রেঞ্জ অফিসার সুকুমার দাস বলেন, ‘‘উদ্ধার হওয়া তক্ষকটি পূর্ণবয়স্ক। সেটি পাচারকারীদের হাতে পড়লে বহু মানুষ লক্ষ-লক্ষ টাকার বিনিময়ে প্রতারিত হতে পারতেন। বিলুপ্তপ্রায় এত বড় তক্ষকটিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য এলাকার মানুষের ধন্যবাদ প্রাপ্য।’’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দেগঙ্গার চৌরাশির বুড়ির হাট, চাকলার বল্লভপুরের মতো বেশ কিছু এলাকার মানুষজন তক্ষক পাচারে যুক্ত। ভিন্ রাজ্য থেকে আসা কিছু লোক তাঁদের প্রলোভন দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ করছে। অভিযুক্তদের কয়েক জনকে চিহ্নিত করে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ।দিলীপবাবু বলেন, ‘‘আমাদের বাড়িতে তক্ষকের উপস্থিতির খবর ছড়িয়ে পড়েছিল এলাকায়। কিছু মানুষ লক্ষ-লক্ষ টাকার বিনিময়ে তক্ষকটিকে তাদের দিতে বলেছিল। আমরা বিলুপ্ত প্রাণীটিকে বাঁচিয়ে রাখতে বন দফতরের হাতে তুলে দিয়েছি।’’ বন দফতর জানিয়েছে, শীঘ্রই তক্ষকটিকে জঙ্গলে ছাড়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy