Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Diamond harbour

পিছমোড়া করে বাঁধা প্রৌঢ়, আটক দুই ছেলে ও স্ত্রী 

সুভাষের অনুমান, তাঁকে খুন করে জমানো টাকা হাতানোর ছক কষেছিল স্ত্রী-ছেলেরা। তাদের আটক করে পুলিশ জানতে চাইছে, সুভাষকে নিয়ে কী করার ফন্দি এঁটেছিল সকলে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ডায়মন্ড হারবার শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:৪৬
Share: Save:

ঘর থেকে গোঙানির আওয়াজ শুনেছিলেন পড়শি ভাড়াটিয়া। পরিস্থিতি দেখতে গিয়েছিলেন বাড়িওয়ালি। অভিযোগ, ভিতর থেকে দরজা ঠেলে রেখে তাঁকে ঢুকতে বাধা দেয় বাড়ির বড় ছেলে। জোর করে ভিতরে ঢুকে বাড়িওয়ালি দেখেন, এক ব্যক্তির হাত-পা পিছমোড়া করে বাঁধা। কম্বল ঢাকা দেওয়া।

খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। পুলিশ এসে সুভাষ হালদার নামে বছর বাহান্নর ব্যক্তিকে উদ্ধার করে। তাঁর দুই ছেলে ও স্ত্রীকে আটক করেছে পুলিশ। লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি থানায়। তবে সুভাষের দাবি, সম্পত্তির লোভে তাঁর এই হাল করেছে স্ত্রী-ছেলেরা।

শনিবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে ডায়মন্ড হারবারের ভগবানপুর গ্রামে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বালিগঞ্জের কসবা কুমোরপাড়া এলাকার বাসিন্দা সুভাষ ইলেকট্রিক মিস্ত্রির কাজ করেন। স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় বছর দু’য়েক আগে দুই ছেলেকে নিয়ে তাঁর স্ত্রী মিঠু ডায়মন্ড হারবারের নাইয়াপাড়ায় বাপের বাড়িতে চলে আসেন।

পুলিশ জানতে পেরেছে, মাস ছ’য়েক আগে ছেলেদের নিয়ে ভগবানপুরে ভাড়া বাড়িতে ওঠে মিঠু। দুর্গা পুজোর সময়ে বছর তেইশের বড় ছেলে ভিকি বালিগঞ্জে গিয়ে বাবার সঙ্গে দেখা করে। তাঁকে এক সঙ্গে থাকার প্রস্তাব দেয়।

দুর্গাপুজো, কালীপুজোর সময়ে সুভাষ স্ত্রী-ছেলেদের সঙ্গে দিন কয়েক কাটিয়ে যান। সপ্তাহখানেক আগে ফের এসেছিলেন। শনিবার সকালে একই বাড়ির আর এক ভাড়াটিয়া ঝিলিক বাড়ির মালিকের স্ত্রী পম্পাকে জানান, রাতে মিঠুদের ঘর থেকে গোঙানির শব্ধ আসছিল।

সে কথার গুরুত্ব না দিয়ে নিজের দোকান খুলতে বেরিয়ে যান। পম্পা। বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ ফিরে এসে মিঠুর ঘরে ঢুকতে যান। সে সময়ে ভিকি ভিতর থেকে দরজা আটকানোর চেষ্টা করে। পম্পা বলেন, ‘‘দরজা ঠেলে জোর করে ভিতরে ঢুকে দেখি, নতুন নাইলনের দড়ি দিয়ে সুভাষবাবুকে কাঠের সঙ্গে পিছমোড়া করে বেঁধে রেখেছে। কম্বল ঢাকা অবস্থায় উবু হয়ে অন্ধকার ঘরে পড়ে রয়েছেন উনি। চিৎকার-চেঁচামিচি করতেই পড়শিরা ছুটে আসেন। পরে দেখা যায়, চওড়া সেলোটেপ দিয়ে গলা থেকে মুখ পর্যন্ত মোটা করে পেঁচানো রয়েছে। দুই পা, দুই হাতও দড়ি দিয়েও বাঁধা।’’ ডায়মন্ড হারবারে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে সুভাষকে। হাসপাতালে শুয়ে তিনি বলেন, ‘‘শুক্রবার দুপুরে ভাত-ডাল-সব্জি রান্না হয়েছিল। দুপুরে খাবারের সঙ্গে আমার স্ত্রী সাদা রঙের কিছু গুঁড়ো মিশিয়ে দেয়। বুঝতে পেরেও কিছু বলিনি। খাওয়ার কিছুক্ষণে পরে আমাকে স্ত্রী, দুই ছেলে এবং এক অপরিচিত ব্যক্তি এসে বেঁধে ফেলে।’’ দুপুর থেকে প্রায় ২৪ ঘণ্টা ওই অবস্থায় ছিলেন তিনি। সুভাষের অনুমান, তাঁকে খুন করে জমানো টাকা হাতানোর ছক কষেছিল স্ত্রী-ছেলেরা। তাদের আটক করে পুলিশ জানতে চাইছে, সুভাষকে নিয়ে কী করার ফন্দি এঁটেছিল সকলে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Diamond harbour Arrest Old man Torture
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE