Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

বিষ খাইয়ে খুন মেয়েকে, নবান্নের দ্বারস্থ পরিবার

মিতার পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই ভরসাতেই ফের নবান্নের দ্বারস্থ হল কন্যাহারা আরও এক পরিবার।

মানসী মিস্ত্রি।

মানসী মিস্ত্রি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ডায়মন্ড হারবার শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৬ ০১:৩০
Share: Save:

মিতার পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই ভরসাতেই ফের নবান্নের দ্বারস্থ হল কন্যাহারা আরও এক পরিবার।

মেয়েকে বিষ খাইয়ে খুনের অভিযোগে ইতিমধ্যেই শ্বশুরবাড়ির ছ’জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার উস্তির ওই পরিবারটি। বধূর স্বামী-শ্বশুর ধরা পড়লেও বাকি অভিযুক্তেরা এখনও পলাতক। সকলের শাস্তির দাবিতে মঙ্গলবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছে মানসীর পরিবার।

ঘটনাটি দিন কয়েক আগের। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত বধূর নাম মানসী মিস্ত্রি (২৫)। বছর দেড়েক আগে উস্তির কয়ালপাড়া গ্রামের মানসীর সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল ডায়মন্ড হারবারের সরিষার নীলকান্ত মিস্ত্রির। বিয়ের পর থেকেই অতিরিক্ত পণের দাবিতে ওই তরুণীর উপরে শারীরিক এবং মানসিক অত্যাচার চালাত শ্বশুরবাড়ির লোকজন, এমনটাই অভিযোগ মানসীর বাপের বাড়ির লোকজনের। কিছু দিন আগে মানসী বাপের বাড়ি এসে ১০ লক্ষ টাকা চান। বাবা জ্ঞানদা কয়াল বলেন, ‘‘মেয়ে বলেছিল, দেওরের চাকরির জন্য টাকাটা দরকার। না পেলে ওকে মারধর করা হতে পারে।’’

কিন্তু দিনমজুর বাবা সব বুঝেও মেয়ের কথা রাখতে পারেননি। খালি হাতেই ফিরতে হয়েছিল মানসীকে।

পুলিশে দায়ের করা অভিযোগে জ্ঞানদাবাবুরা জানিয়েছেন, ২৮ সেপ্টেম্বর মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে পুজোর জামাকাপড় দিতে গিয়েছিলেন। সে সময়ে মেয়ে অসুস্থ ছিল। শ্বশুরবাড়ির লোকজন বলে, মানসীর গলায় সংক্রমণ হয়েছে। চিকিৎসার জন্য তাঁকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

মেয়েকে সঙ্গে করে এনে পর দিন ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালে নিয়ে যান জ্ঞানদাবাবুরা। কিন্তু শারীরিক অবস্থা আরও খারাপের দিকেই যাচ্ছিল।

মমতার কাছে আর্জি।—নিজস্ব চিত্র।

মানসীর ভগ্নীপতি অজয় জানার দাবি, মানসীর গলায় কালসিটে দাগ ছিল। মুখ ফোলা ছিল। তাঁদের দাবি, শ্বশুরবাড়িতে মারধর করা হয়েছিল ওই তরুণীকে।

অজয়বাবুর আরও দাবি, অসুস্থ অবস্থায় এসএসকেএমের বিছানায় শুয়ে মানসী জানান, টাকার দাবি না মেটায় স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি, দেওর তাঁকে চেপে ধরে গলায় বিষ ঢেলে দেয়। মারধরও করেছিল। সে সব কথা পাঁচকান হলে খুনের হুমকি দেয়। মানসীর সেই বয়ান তিনি মোবাইলে রেকর্ডিং করে রেখেছেন বলে জানান অজয়বাবু।

নবান্নে দায়ের করা অভিযোগে জ্ঞানদাবাবুরা জানান, বিষ খাইয়ে দেওয়ার কথা মেয়ের কাছে জানতে পেরে জামাইকে টেলিফোন করেছিলেন তাঁরা। সে সময়ে নীলকান্ত দাবি করে, মানসী নিজেই বিষ খেয়েছিল। কিন্তু তারপরেও বিনা চিকিৎসায় মেয়েকে কেন পরের তিনটে দিন ফেলে রাখা হয়েছিল, সে প্রশ্ন তুলছেন জ্ঞানদাবাবুরা।

মানসীকে আমতলার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১ অক্টোবর পাঠানো হয় এসএসকেএমে। ১৪ অক্টোবরে সেখানেই মারা যান ওই তরুণী।

জ্ঞানদাবাবুদের দাবি, এসএসকেএম হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, বিষক্রিয়ার ফলেই ওই বধূর মৃত্যু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Woman killed poison 6 accused
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE