Advertisement
E-Paper

হাবরায় ফের ধর্ষণ করে খুন

পুলিশ জানিয়েছে, বছর বত্রিশের ওই যুবতীর বড় বোনকেও ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে—এমনটাই দাবি ছিল পরিবারের। বোনের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন ওই যুবতীর দাদা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৭ ০২:২১
এখান থেকেই উদ্ধার হয় দেহ।—নিজস্ব চিত্র।

এখান থেকেই উদ্ধার হয় দেহ।—নিজস্ব চিত্র।

বছর উনিশ আগে দিদির দেহ উদ্ধার হয়েছিল এক পুকুরের পাশ থেকে। এ বার ওই এলাকারই আরও একটি পুকুর থেকে বোনের দেহ উদ্ধার হল। হাবরার জিওলডাঙা গ্রামের ঘটনা।

পুলিশ জানিয়েছে, বছর বত্রিশের ওই যুবতীর বড় বোনকেও ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে—এমনটাই দাবি ছিল পরিবারের। বোনের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন ওই যুবতীর দাদা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই যুবতী দিদি ও দাদার সঙ্গে কলেজের হস্টেলে থাকতেন। দিদিকে বসত বাড়িতে যাচ্ছি বলে বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন ওই যুবতী। তারপর থেকে তাঁর আর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি।

শুক্রবার বিকেল ৩টে নাগাদ বাড়ির কাছেই পুকুর থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। যেখান থেকে ওই যুবতীর দেহ মিলেছে সেখানে কেউ স্নান করেন না বলে পুলিশ জানিয়েছে। পরনে শুধু চুড়িদারের জামাটি ছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। তাঁর মাথাতে আঘাতের চিহ্ন ছিল বলে পরিবার সূত্রে দাবি করা হয়েছে।

দেহটি ময়না-তদন্ত হয়েছে কলকাতার এনআরএস হাসপাতালে। রিপোর্ট এখনও পুলিশের হাতে এসে পৌঁছায়নি। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মৃতের পরিবারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ধর্ষণ করে খুনের মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।’’ যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে তাদের বিষয়ে তথ্য প্রমাণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও তিনি জানিয়েছেন। স্থানীয় বিধায়ক রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘পুলিশকে বলা হয়েছে দ্রুত ওই মহিলার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করে পদক্ষেপ করতে।’’

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বসত বাড়ি-সহ পাঁচ বিঘে জমি ও তেরো বিঘে চাষের জমি রয়েছে ওই যুবতীদের। কয়েক বছর হল পরিবারের কেউ সেখানে থাকেন না। এলাকার কিছু লোকের সেই সম্পত্তির উপর নজরও ছিল। ওই যুবতী নিয়মিত বসত বাড়িতে যেতেন। বাড়িটি দেখাশোনাও করতেন। তাঁর দিদি ও দাদার কথায়, ‘‘আমাদের সম্পত্তি হাতাতে চেয়েছিলেন অনেকে। কিন্তু বাধা হয়ে যাচ্ছিল বোন। সে কারণে তাঁকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে।’’

কিন্তু নিজেদের বাড়ি থাকা সত্ত্বেও কলেজের হস্টেলে থাকতেন কেন ওই যুবতীর পরিবার? ওই যুবতীর দিদি জানান, বড় বোন মারা যাওয়ার কিছু দিন পরেই মা ও বাবা মারা যান। তারপর ওই জমি ও বাড়ি নিয়ে এলাকারই কিছু লোকের সঙ্গে বিবাদ বাধে। মামলাও হয়। তাঁর কথায়, ‘‘প্রায়ই আমাদের খুনের হুমকি দেওয়া হত।’’ সে কারণে ওই বাড়ি ছেড়ে কলেজের হস্টেলে থাকা শুরু করেন তাঁরা। ওই কলেজেই কর্মরত ওই যুবতীর দিদি।

এমনকী বড় বোনের খুনের পরও তাঁদের হুমকি দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি ওই যুবতীর দাদার। তারপরই বাড়ি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। কিন্তু ওই যুবতী কোনও মতে বাড়ি ছাড়তে চাননি। তাঁকে বুঝিয়ে নিয়ে যাওয়া হলেও তিনি রোজ ওই বাড়ি দেখাশোনা করতে আসতেন। যুবতীর দাদা বলেন, ‘‘এই বিষয়টিই হয়তো মেনে নিতে পারেননি দুষ্কৃতীরা। তাই এই খুন।’’

পুলিশ জানিয়েছে, ওই যুবতীরা ৬ বোন। দুই ভাই। দুই বোন মারা গিয়েছে। তিন বোনের বিয়ে হয়েছে। এখন ওই যুবতীর পরিবার আতঙ্কে রয়েছেন। ওই যুবতীর দিদি বলেন, ‘‘দিদিকে ধর্ষণ করে খুন করা হল। কোনও বিচার পেলাম না। বোনের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটল। বাড়ি থেকে বেরোতে ভয় পাচ্ছি।’’

এলাকাটি পৃথিবা গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে। প্রধান তৃণমূলের লিপিকা দাস। হাবরা ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি জাকির হোসেন বলেন, ‘‘দেহ দেখে আমাদের মনে হয়েছে ধর্ষণ করে খুন করা হতে পারে। যারাই ওই ঘটনায় যুক্ত তাদের কঠোর শাস্তি দাবি করেছি।’’

Crime Rape Murder Habra হাবরা
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy