কৃষ্ণা মাহাতো।
চাষবাসের জন্য এলাকার মহিলা সমিতি থেকে হাজার পঞ্চাশ টাকা ধার করেছিলেন এক বধূ। গরিব আদিবাসী পরিবার। কয়েক কিস্তির টাকা বকেয়া পড়ে গিয়েছিল। অভিযোগ, সমিতির মহিলারা এসে বাড়িতে হুজ্জুত শুরু করে। গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছেন ওই বধূ। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে ভর্তি করা হয়েছে আরজিকর হাসপাতালে। অভিযুক্ত চার মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর মধ্যে এক ব্যাঙ্ক কর্মীও আছেন।
ঘটনাটি হাবরার জানাপুরের। সেখানকার বাসিন্দা দীপু মাহাতো রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করেন। স্ত্রী কৃষ্ণা দিনমজুরি করেন। বছর বাইশের ওই তরুণীর দু’বছরের সন্তান আছে। ভাগে জমি নিয়ে চাষ করবেন বলে কয়েক মাস আগে এলাকার মহিলা সমিতি থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেন কৃষ্ণা। সমিতির সদস্য তিনি নিজেও। শর্ত ছিল, প্রতি সপ্তাহে ১ হাজার টাকা করে শোধ করতে হবে।
গত তিন সপ্তাহ কিস্তির টাকা শোধ করতে পারেননি কৃষ্ণা। মহিলা সমিতির কাছে কিছুটা সময় চেয়েছিলেন। বলেছিলেন, অভাবের কারণে টাকা দিতে পারছেন না।
কিন্তু তাতে কোনও সুবিধা হয়নি। অভিযোগ, সোমবার সকালে সমিতির চার সদস্য বাড়িতে চড়াও হয়ে নানা ভাবে অপমান করেন কৃষ্ণাকে। পরিবারের লোকজনের দাবি, ওই মহিলারা বলেছিলেন, টাকা দিতে না পারলে যেন বিষ খান কৃষ্ণা। মরে গেলে আর টাকাই দিতে হবে না।
পাওনাদারেরা চোটপাট করে বেরিয়ে যাওয়ার পরেই গায়ে আগুন দেন কৃষ্ণা। তাঁর মা পারুলদেবী বলেন, ‘‘টাকা শোধ করতে না পারলে মেয়েকে ওরা মরতে বলে গেল। নানা ভাবে হুমকি দিল। আর তারপরেই মেয়েটা এমন কাণ্ড করে বসল।’’
স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবারের লোকজন কৃষ্ণাকে উদ্ধার করে আরজিকর হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, অবস্থা আশঙ্কাজনক। পরিবারের তরফে অভিযোগ হয় চারজনের নামে। পুলিশ জানায়, ধৃতেরা হল নাজমা খাতুন, অলোকা কর্মকার, কবিতা সর্দার। নাজমার বাড়ি দেগঙ্গার কলসুরে। মঙ্গলবার দুপুরে হাবরার হিজলপুকুর এলাকা থেকে ওই ব্যাঙ্ক কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। বাকিরা জানাপুলের বাসিন্দা। সেখান থেকেই তাদের ধরা হয়। জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় জানান, ঘটনাটিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। মামনি সর্দার নামে বাকি এক অভিযুক্তের খোঁজ চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy