তিন থাকের কেক উপহার পেয়েছেন জোজো মুখোপাধ্যায়! তা এত বড় আর ভারী যে, আবাসনের ন’তলায় সেই কেক পৌঁছোতেই পারেনি। মঙ্গলবার গায়িকার জন্মদিন। যোগাযোগ করতেই আনন্দবাজার ডট কম-কে জোজো বলেন, “শ্রীরামপুরের অনুষ্ঠানে কেকটা কাটব।”
সদ্য জেলায় অনুষ্ঠান করতে গিয়ে হেনস্থার শিকার লগ্নজিতা চক্রবর্তী। তাঁর ‘জাগো মা’ গান শুনে মারতে এসেছিলেন আয়োজকদের অন্যতম মেহবুব মল্লিক। জোজো কি জেলায় অনুষ্ঠান করতে ভয় পাচ্ছেন? গায়িকার সাফ জবাব, “ভয় আমি কিছুতেই পাই না। লগ্নজিতার জন্য আমার খারাপ লাগছে। আমরা শিল্পীরা মঞ্চে উঠি সকলকে আনন্দ দিতে। বিনিময়ে যদি এই ব্যবহার পেতে হয়, তা হলে সেটা দুঃখের।”
অন্যান্য দিনের মতোই এ দিনও ব্যস্ততা দিয়েই দিনের শুরু হয়েছে জোজোর। ফাঁকে ফাঁকে এসে পৌঁছেছে রকমারি উপহার। “আমার মেয়ে কেক পাঠিয়েছে। সেটা হয়তো বাড়িতে কাটব। আমার এক ভীষণ প্রিয় বোন প্রতি বছর তিনতলা সমান কেক পাঠায়। পাগলের মতো ভালবাসে। ওর কেক বাড়িতে তুলতেই পারিনি। ওটা মঞ্চানুষ্ঠানের পরে সবাইকে নিয়ে কাটব।” এ ছাড়াও পেয়েছেন, ফুলের তোড়া, শুভেচ্ছা কার্ড-সহ অনেক কিছু।
জন্মদিনে পাওয়া জোজোর উপহার। ছবি: সংগৃহীত।
কথায় কথায় নিজের ছেলেবেলায় ফিরে গিয়েছেন শিল্পী। বলেছেন, খুব ছোটবেলায় বাবা আর মা আলাদা হয়েছেন। কিন্তু, আমি দু’জনের আদরই পেয়েছি। মা খুব ধুমধাম করে আমার জন্মদিন পালন করতেন। পাড়ায় প্যান্ডেল করে হুল্লোড় হত। বাবা আবার আমার ১৮ বছরের জন্মদিন বড় করে পালন করেছিলেন। এ ভাবেই কেউ না কেউ আমার জন্মদিন মনে রাখেন, পালন করেন। আমি মাত্র একবার নিজের জন্মদিন পালন করেছি। যে বছর চল্লিশে পা দিলাম।”
জোজোর বাবা খ্যাতনামী অভিনেতা মৃণাল মুখোপাধ্যায়। তিনিও খুব ভাল গাইতেন। বাবার মতো গায়িকাও অভিনয় করেছেন। প্রভাত রায়, সন্দীপ রায়, অঞ্জন দত্তের ছবিতে কাজ করেছেন চুটিয়ে। আবার দেবাংশু সেনগুপ্তের পরিচালনায় ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন। কেন তিনি নায়িকা-গায়িকা হলেন না? জোজোর কথায়, “সমস্যা একাধিক। এক, দুটো পেশাই এমন যে দিনরাত তার পিছনে দিতে হবে। সেটা আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না। দুই, আমি তখন গায়িকা হিসাবে বেশি পরিচিত। আর বিনোদনদুনিয়ায় তখনও অভিনেতারা নিজেদের ধরাছোঁয়ার বাইরে রাখতেই পছন্দ করতেন। এ দিকে আমার প্রায় রোজ মঞ্চানুষ্ঠান। রোজ আমায় দেখা গেলে তো ‘স্টার ভ্যালু’ কমে যাবে।” আরও একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারণ, জোজো একসঙ্গে একাধিক কাজ করতে পারেন না। করতে চানও না। “এক জন্মে একটি নিয়েই খুশি। এ বার আমি গায়িকা হয়েই সন্তুষ্ট।”
আরও পড়ুন:
জোজো তাঁর জন্মদিনের প্রথম কেক কেটেছেন ছেলের সঙ্গে। মেয়ের জন্মের পরে ফের পুত্রসন্তান দত্তক নিয়েছেন। এর পিছনেও কি বিশেষ কারণ ছিল? তিনি বলেছেন, “বরাবরের ইচ্ছা ছিল, সন্তান দত্তক নেব। তাই মেয়ে হওয়ার পরে পুত্রসন্তান দত্তক নিই।” একটু থেমে যোগ করেন, “অনেকে অকারণে অনেক অর্থ অপচয় করেন। আমার তাতে আপত্তি। এর চেয়ে সন্তান দত্তক নিলে কিছু শিশু ঘর পায়। মা-বাবার আদর-ভালবাসা পায়। আমার যদি ক্ষমতা থাকত তা হলে আরও কয়েক জনকে দত্তক নিতাম।”