E-Paper

লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা জমিয়ে পুজো

মহিলারাই আলোচনা করে উপায় খুঁজে বের করেন। সিদ্ধান্ত নেন, রাজ্য সরকারের লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প থেকে পাওয়া টাকা থেকে কিছু কিছু জমিয়ে মায়ের আরাধনা করবেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:০৮
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

গ্রাম থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে দুর্গা পুজোর আয়োজন হয়। গ্রামের মহিলারা সেখানেই যেতেন অষ্টমীর অঞ্জলি দিতে। কিন্তু ছোটরা ঠিকমতো আনন্দ করতে পারত না। এ বার তাই গ্রামের মহিলারা একত্রিত হয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, গ্রামেই দুর্গা পুজো শুরু করবেন।

কিন্তু পুজো করব বললেই তো হল না। আয়োজন করতে খরচও হাজার হাজার টাকা। কোথা থেকে আসবে সেই টাকা? গ্রামের বেশির ভাগ মানুষের আর্থিক পরিস্থিতি স্বচ্ছল নয়। খেতমজুরি, দিনমজুরি করেন অনেকে। সংসার চালাতে পুরুষদের পাশাপাশি মহিলারাও কাজ করেন। এই পরিস্থিতিতে পুজোর আয়োজন করা সহজ বিষয় ছিল না।

মহিলারাই আলোচনা করে উপায় খুঁজে বের করেন। সিদ্ধান্ত নেন, রাজ্য সরকারের লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প থেকে পাওয়া টাকা থেকে কিছু কিছু জমিয়ে মায়ের আরাধনা করবেন। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া বনগাঁ ব্লকের ছয়ঘড়িয়া পঞ্চায়েতের হরিদাসপুরের পঞ্চাননতলা এলাকায় পঞ্চাননতলা সঙ্ঘের ব্যানারে প্রায় ১৪০ জন মহিলা মিলে এ বার গ্রামে প্রথম দুর্গা পুজোর আয়োজন করছেন। পঞ্চমীর সকালে গ্রামে দেখা গেল, দলবেঁধে প্রতিমা আনতে যাচ্ছেন। কেউ কেউ ব্যানার ফ্লেক্স লাগাচ্ছেন। মহিলারাই ঢাক বাজাচ্ছেন। ফ্লেক্সে বড় বড় লেখা, ‘লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকায় মহিলাদের পুজোর আয়োজন।’

সাবিত্রী বিশ্বাস, মামণি মণ্ডল, মিঠু মণ্ডল, শিপ্রা বসাকেরা জানালেন, গ্রামের কচিকাঁচারা গ্রামেই যাতে আনন্দ করতে পারে, সে কারণেই পুজোর আয়োজন করা। বড়রাও আনন্দ করবেন।

সাবিত্রী বলেন, "আমরা গ্রামে প্রথম বার দুর্গা পুজো করছি। ফলে রাজ্য সরকার পুজো কমিটিগুলিকে যে অনুদান দিচ্ছে তা আমরা পাইনি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা থেকে পুজো করছি। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমাদের আবেদন, আগামী বছর থেকে পুজোর টাকা যাতে আমরা পাই, সেই ব্যবস্থা করা হোক।"
মহিলারা অনেকে জানালেন, লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা থেকে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খরচ, পুজোর জামাকাপড় কেনার খরচও কিছু সামলানো গিয়েছে।

ছয়ঘড়িয়া পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান তথা বনগাঁ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেন, "লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প থেকে পাওয়া অর্থ জমিয়ে মহিলাদের দুর্গা পুজোর আয়োজন প্রমাণ করছে, এই প্রকল্প থেকে পাওয়া টাকায় মহিলারা কতটা আর্থিক ভাবে স্বনির্ভর হয়েছেন। ওই টাকায় পারিবারিক প্রয়োজন মিটিয়েও তাঁরা পুজোয় আয়োজন করতে পারছেন।" বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবদাস মণ্ডল অবশ্য বলেন, "এই বাংলায় লক্ষ্মীরা প্রতি নিয়ত নির্যাতিতা হচ্ছেন। তাঁরা লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা বয়কট করে পুজোয় আয়োজন করছেন। ধন্যবাদ জানাই সেই মায়েদের।"

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bangaon Laxmi Bhandar Scheme

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy