থানায় দায়ের করা একই অভিযোগের ভিত্তিতে দু’টি পৃথক এফআইআর দায়ের করে আদালতে সমালোচিত হল ডায়মন্ড হারবার থানার পুলিশ। ডায়মন্ড হারবার এসিজেএম আদালতের বিচারক পুলিশকে কারণ দর্শানোরও নির্দেশ দিয়েছেন।
ঘটনার সূত্রপাত সেপ্টেম্বর মাসে। পুলিশ জানিয়েছে, ডায়মন্ড হারবার থানার কুলেশ্বর গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে ঝামেলার জেরে এক গৃহবধূকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ। ১ অক্টোবর ওই ঘটনায় থানায় এফআইআর (কেস নম্বর: ৬৯৬/১৪) দায়ের হয়। তদন্তকারী অফিসারও নিযুক্ত হন মামলায়। অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবী নীলরতন দাস জানিয়েছেন, এই ঘটনার তিন দিন পরে, ৪ ডিসেম্বর ওই একই অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে আরও একটি কেস (৭২৫/১৪) শুরু করে থানা। সে জন্যও আলাদা এক জন অফিসার নিযুক্ত হন।
নীলরতনবাবু জানান, এই ঘটনা আদালতের নজরে আসার পরে বিচারকের কোপে পড়েছে পুলিশ। ১ ডিসেম্বর এসিজেএম আদালতের বিচারক আশিস গুপ্ত একটি অন্তর্বর্তী নির্দেশে বিস্ময় প্রকাশ করে জানিয়েছেন, এটা আইনের অপব্যবহার হিসেবেই ধরা হবে। আইসিকে আজ, মঙ্গলবার আদালতে হাজির হয়ে গোটা ঘটনার লিখিত ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। কেন সংশ্লিষ্ট অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা-ও ব্যাখ্যা করতে বলা হয়েছে আইসিকে। আইসি বিশ্বজিৎ পাত্র অবশ্য কোনও মন্তব্য করেননি। থানা সূত্রে দাবি করা হয়েছে, এমন ঘটনা তাদের জানাই নেই।
এ দিকে, ইতিমধ্যেই একই অভিযোগে দায়ের হওয়া দু’টি পৃথক মামলায় অভিযুক্ত সাত জন দু’বার করে জামিন নিয়েছেন আদালতে। তাঁদেরই এক জন সাহাদাত কাজি বলেন, “আমাদের মধ্যে অনেকেই বাইরে কাজ করেন। কাজকর্ম ফেলে দু’বার বার করে হাজিরা দেওয়া, দু’বার জামিনের টাকা জোগাড় করতে হিমসিম খাচ্ছি। হেনস্থাও হতে হচ্ছে।”
নীলরতনবাবু বলেন, “সংবিধানে মৌলিক অধিকারের মধ্যেই বলা রয়েছে, একই ঘটনায় দু’বার করে এফআইআর করা যায় না। ফৌজদারি কার্যবিধিও এটা সমর্থন করে না। আমরা সেই আবেদনই আদালতের কাছে করেছি।”
একই অফিযোগে দু’বার এফআইআর দায়ের করে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে দাবি করছে গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি এপিডিআর-ও। সংগঠনের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার নেতা আলতাফ আহমেদ বলেন, “থানা প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে এ সব করছে। আমরা ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষী পুলিশকর্মীর শাস্তি দাবি করেছি।” সংগঠনের তরফে জেলা পুলিশ সুপারের কাছেও বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
অন্য দিকে, অভিযোগকারী ব্যক্তি জানিয়েছেন, একবারই লিখিত অভিযোগ করেছিলেন তিনি। আর এক বার থানায় গিয়ে দ্রুত তদন্তের জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, “দু’টি এফআইআর হয়েছে, তা আমরা জানতামই না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy