Advertisement
E-Paper

খেলার জন্য নেওয়া চাঁদায় উপহার দেওয়ার সিদ্ধান্ত

প্রতিটি স্কুল থেকে ৮০০ টাকা করে এবং প্রাথমিক শিক্ষকদের কাছ থেকে ১ হাজার করে চাঁদা নেওয়া হয়েছিল। বিধায়কদের তহবিল, পুরসভা এবং শিক্ষক, এমনকী পার্শ্বশিক্ষকদের থেকেও চাঁদা তুলে জেলা প্রাথমিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু সেই টাকা বেঁচে যাওয়ায় তা দিয়ে উপহার কিনে বিলি করা হচ্ছে ডায়মন্ড হারবার দক্ষিণ চক্রে, অভিযোগ এমনটাই।

শান্তশ্রী মজুমদার

শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:২৬

প্রতিটি স্কুল থেকে ৮০০ টাকা করে এবং প্রাথমিক শিক্ষকদের কাছ থেকে ১ হাজার করে চাঁদা নেওয়া হয়েছিল। বিধায়কদের তহবিল, পুরসভা এবং শিক্ষক, এমনকী পার্শ্বশিক্ষকদের থেকেও চাঁদা তুলে জেলা প্রাথমিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু সেই টাকা বেঁচে যাওয়ায় তা দিয়ে উপহার কিনে বিলি করা হচ্ছে ডায়মন্ড হারবার দক্ষিণ চক্রে, অভিযোগ এমনটাই। তৃণমূল পরিচালিত মহকুমা ক্রীড়া আয়োজক কমিটির দিকেই উঠছে অভিযোগের আঙুল। এ প্রসঙ্গে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান জীবন বৈরাগী বলেন, “আমি বিষয়টি ঠিক জানি না। তবে ক্রীড়া আয়োজনের টাকায় উপহার কিনে বিলি করলে তা সংসদ অনুমোদন করবে না। আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এলে অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে।”

মহকুমা প্রশাসন ও তৃণমূলের মহকুমা শিক্ষা সেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৩ সালে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজনের দায়িত্ব পড়েছিল ডায়মন্ড হারবার দক্ষিণ চক্রের উপরে। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, তৃণমূলের শিক্ষা সেলের স্থানীয় নেতা এবং স্কুল পরিদর্শককে মাথায় রেখেই তৈরি হয়েছিল কমিটি। টাকা খরচের যুগ্ম দায়িত্বে ছিলেন তত্‌কালীন স্কুল পরিদর্শক সুজিত চক্রবর্তী এবং ডায়মন্ড হারবার ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি স্বপ্নারানি হালদার। ক্রীড়া আয়োজনের সব খরচ মিটিয়ে উদ্বৃত্ত প্রায় ৩২ হাজার টাকা খরচ করে বেশ কিছু উপহার কিনে শিক্ষকদের মধ্যে বিলি করা হবে বলে জানা গিয়েছে। বাকি আরও কিছু টাকা রেখে দেওয়া হয়েছে মিষ্টি খাওয়ার জন্য। তত্‌কালীন স্কুল পরিদর্শকের নাম করে ৩০ ডিসেম্বর ২০১৪ সালে ৮০টি স্কুলে প্রায় ৩০০ শিক্ষককে চিঠি দিয়ে ওই উপহার নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

সম্প্রতি এ বিষয়ে মহকুমাশাসকের দফতরেও অভিযোগ দায়ের করেছেন কয়েক জন শিক্ষক-শিক্ষিকা। তাদের মধ্যে সেঁজুতি চক্রবর্তী এবং ঝর্ণা বসাক বলেন, “প্রায় জোর করে শিক্ষকদের কাছ থেকে এই টাকা তোলা হয়েছিল। যাঁরা দিতে অস্বীকার করেন, তাদের শোকজ করে সার্ভিস বুকও সাময়িক ভাবে আটকে দেওয়া হয়েছিল। খেলাধূলার জন্য তোলা টাকা উপহারে খরচা করা ঠিক নয়।” এ বিষয়ে ডায়মন্ড হারবার দক্ষিণ চক্রের তৃণমূল শিক্ষা সেলের নেতা তথা ক্রীড়া আয়োজক কমিটির সদস্য স্বপন দাস বলেন, “কিছু টাকা বেঁচেছে। সে কারণে সর্বসম্মত ভাবে নেওয়া সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই শিক্ষকদের উপহার দেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে এত প্রশ্ন কীসের?”

টাকা খরচ করার দায়িত্বে থাকলেও বিষয়টি প্রায় এড়িয়ে গিয়েছেন স্বপ্নারানিদেবী। তাঁর কথায়, “দীর্ঘদিন আগের কথা। সে কারণে ঠিক মনে পড়ছে না, টাকা কী ভাবে খরচ হয়েছে।” বিষয়টি নিয়ে কিছু জানেন না বলে দাবি করেছেন ডায়মন্ড হারবারের বিধায়ক দীপক হালদারও। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, কমিটির গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের অন্ধকারে রেখে তা হলে কারা এই টাকায় উপহার বিলি করার সিদ্ধান্ত নিলেন? ক্রীড়া আয়োজনে কত টাকা খরচ হয়েছে? কত টাকা বাকি রয়েছে? উপহার কিনতে কত টাকা লেগেছে? এ সব নিয়ে কোনও হিসেবও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদে জমা পড়েনি। এ দিকে, তত্‌কালীন স্কুল পরিদর্শক সুজিত চক্রবর্তীর নাম করে উপহার নেওয়ার চিঠি শিক্ষকদের কাছে পৌঁছলেও তিনি নিজে দাবি করেছেন, এ রকম কোনও চিঠি তিনি লেখেননি।

shantyashree majumdar diamond harbour southbengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy