Advertisement
E-Paper

গাইঘাটায় ছাত্র পিটিয়ে ধৃত ‘বদলি’ শিক্ষক

কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে বেরিয়ে পড়ল কেউটে। বাড়ি ফেরার পরে ঠিক মতো হাঁটতে পারছিল না গাইঘাটার দোগাছিয়া অবৈতনিক প্রাথমিক স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র দীপ। কী হয়েছে জানতে চাইলে অভিভাবকদের সে জানায়, মাস্টারমশাই মেরেছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৪ ০২:২৭

কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে বেরিয়ে পড়ল কেউটে।

বাড়ি ফেরার পরে ঠিক মতো হাঁটতে পারছিল না গাইঘাটার দোগাছিয়া অবৈতনিক প্রাথমিক স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র দীপ। কী হয়েছে জানতে চাইলে অভিভাবকদের সে জানায়, মাস্টারমশাই মেরেছেন। মারের বহর দেখে বাবা সুদেব সরকার বুধবার রাতেই ‘মাস্টারমশাই’ বরুণ রায়ের বিরুদ্ধে থানায় মারধরের অভিযোগ করেন। তাঁকে গ্রেফতার করতে গিয়ে পুলিশ দেখে, বরুণ আসলে ওই স্কুলের শিক্ষকই নন। অসুস্থ কাকার হয়ে স্কুলে পড়াচ্ছিলেন। গত কয়েক মাস আগে স্কুল থেকেই তাঁকে ‘বদলি’ শিক্ষক হিসেবে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।এই ঘটনার নিন্দা করে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক দীপায়ন দাস বলেন, “চূড়ান্ত বেআইনি কাজ হয়েছে।”

বৃহস্পতিবার সকালে বরুণকে বনগাঁ আদালতে তোলা হলে জামিনে ছাড়া পেয়েছেন তিনি।

স্কুলসূত্রের খবর, প্রাকপ্রাথমিক থেকে চতুর্থ শ্রেণি অবধি ওই স্কুলে ১৪৮ জন পড়ুয়া রয়েছে। শিক্ষক রয়েছেন ৩ জন। ২০০৬ সালে শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী বিনোদকৃষ্ণ রায় ওই স্কুলে যোগ দেন। কয়েকটি বাক্য বলার পরেই তাঁর কথা জড়িয়ে যায়। বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন না। স্নায়ুর সমস্যাও রয়েছে। কয়েক মাস ধরে তাঁর সঙ্গে তাঁর ভাইপো বরুণও স্কুলে আসা শুরু করেন। তিনি বসে থাকতেন। বরুণ পড়াতেন। বিনোদকৃষ্ণবাবু জানান, ১৯৯৯ সালে প্রতিবন্ধী কোটায় চাকরি পেয়েছিলেন তিনি। প্রথমে পড়াতেন বনগাঁর গাঁড়াপোতা এলাকার একটি স্কুলে।

স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, মাস ছয়েক আগে অভিভাবক ও স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেই এই সিদ্ধান্ত। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক (টিচার ইন চার্জ) প্রদীপ বিশ্বাসের ব্যাখ্যা, “পড়ুয়ারা বরুণের পড়ানো ভালো বুঝতে পারে। তাই অভিভাবকেরাও ওই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছিলেন। পড়ুয়াদের স্বার্থেই বিষয়টি উচ্চমহলে জানানো হয়নি।’’

যদিও দীপায়নবাবুর বক্তব্য, “আইন অনুযায়ী, কোনও ভাবেই কারওর হয়ে এ ভাবে পড়ানো যায় না। আর স্থানীয় ভাবে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়াও যায় না। গোটা ঘটনাটি সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।”

স্কুল ও পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার স্কুলে যাওয়ার পরে দীপ তার বন্ধু অপুর সঙ্গে খেলা করছিল। খেলতে খেলতে দরজায় ধাক্কা খায় অপু। কানে এবং কপালে চোট পায়। অভিযোগ, এরপরেই ক্লাসে ঢুকে দীপকে বেত দিয়ে বেধড়ক মারে বরুণ। পড়ুয়াদের দাবি, পড়া না পারলেই মারধর করতেন বরুণ। অভিভাবকেরা এই বেআইনি কাজে জড়িতদের শাস্তি দাবি করেছেন।বিনোদবাবুর অবশ্য ব্যাখ্যা, “আমি স্কুলে আসিনি, অথচ ভাইপো পড়িয়েছে, এমনটা কখনও হয়নি।’’

জেলা পুলিশ জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।

gaighata teacher transfer southbengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy