গ্যালারি নেই, পাঠাগারেই প্রদর্শনী। —নিজস্ব চিত্র।
ক্যানভাসে প্রতিবাদের ভাষা কামদুনি। শিল্পের প্রচার ও প্রসারে সরকারি বঞ্চনার প্রতিবাদ। এমনই জানাচ্ছেন উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত, মধ্যমগ্রাম, দত্তপুকুর-সহ বিস্তীর্ণ এলাকার শিল্পীরা। তাঁদের দাবি, স্থানীয় অনেক শিল্পীর ছবির প্রদর্শনী হয় দেশ-বিদেশে। অথচ নিজেদের এলাকায় গ্যালারি না থাকায় ঘরোয়া প্রদর্শনের সুযোগ হয় না।
আর্ট গ্যালারির দাবি নিয়ে প্রশাসনের দরজায় শিল্পীরা ঘুরেও কোনও সুরাহা পাননি। তাই অভিনব প্রতিবাদের পথে হেঁটে সম্প্রতি একটি পাঠাগারের ঘরে ছবির প্রদর্শনী করলেন তাঁরা। ছবিতে কামদুনির গণধর্ষণ তাই প্রতিবাদের রূপ পেল। গণধর্ষণের শিকার ছাত্রী ছবিতে মৃত নয়। ধারালো দা হাতে সে রুখে দাঁড়িয়েছে প্রতীকী দেবীমূর্তি রূপে।
সম্প্রতি বারাসতের সুভাষ ইন্সস্টিটিউটের পাঠাগারে ১৪ জন শিল্পীর ছবি নিয়ে হয়ে গেল প্রদর্শনী। বারাসতের শিল্পী-সংগঠন ‘রোদ্দুর’-এর আয়োজনে জেলার শিল্পীদের নিয়ে একটি অনুষ্ঠানও হয় সেখানে। বনগাঁর প্রবীণ শিল্পী মনোজ বিশ্বাস বলেন, “জেলার সব শিল্পীদের পক্ষে কলকাতায় গিয়ে প্রদর্শনী করা সম্ভব হয় না। যত্রতত্র প্রদর্শনী করলে বৃষ্টি, ধুলোয় দামী ছবি নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।” শিল্পী শঙ্কর তরফদার বলেন, “ব্যক্তিগত ভাবে কেউ কেউ গ্যালারি তৈরির চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তৈরি করলেই হয় না। রক্ষণাবেক্ষণেরও প্রয়োজন হয়। ফলে সেই উদ্যোগের বিশেষ অগ্রগতি হয়নি।”
এক প্রবীণ শিল্পী জানালেন, এখানে প্রদর্শনী হয় অনুষ্ঠান বাড়িতে বা প্যান্ডেল করে। ছবির উপযুক্ত স্থান নির্বাচন, আলোর যথাযথ ব্যবহার প্রদর্শনীর ক্ষেত্রে আবশ্যিক। এ সব ক্ষেত্রে তা মানা যায় না। ফলে ভাল ছবি মার খায়। শিল্পী সুশান্ত সরকার জানান, একটি গ্যালারি ও জেলার শিল্পীদের ছবি নিয়ে স্থায়ী প্রদর্শশালার দাবিতে শিল্পীরা গত ১২ বছরে কয়েক বার জনপ্রতিনিধিদের দ্বারস্থ হয়েও কোনও লাভ হয়নি।
এই প্রসঙ্গে বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান সুনীল মুখোপাধ্যায় বলেন, “এখানে গ্যালারির প্রয়োজন রয়েছে। তৈরির চিন্তাভাবনা করছি। প্রয়োজনীয় জমি মিলছে না। সে ব্যাপারে খোঁজ চলছে।” যদিও চেয়ারম্যানের আশ্বাসেও আশার আলো দেখছেন না শিল্পীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy