Advertisement
১৭ মে ২০২৪

ঘর থেকে উদ্ধার দম্পতির মৃতদেহ

অস্বাভাবিক মৃত্যু হল এক দম্পতির। সোমবার সকালে গোপালনগরের বহিলাপোতা এলাকার একটি বাড়ি থেকে স্বামী-স্ত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মৃতদের নাম সুচরিতা সেন (২৩) ও অভিজিৎ সেন (২৪)। ময়নাতদন্তের জন্য দেহ দু’টি বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ দিন সকালে পুলিশ ওই দম্পতির ঘরে ঢুকে দেখে, খাটের উপর চিৎ হয়ে পড়ে রয়েছে সুচরিতার দেহ। পরনে লাল নাইটি। পাশে খাটের আড়ার সঙ্গে গলায় গামছা জড়ানো অবস্থায় ঝুঁকে রয়েছে অভিজিতের দেহ। হাঁটু মোড়া অবস্থায় পা দু’টি মেঝেতে ঠেকানো। পরনে একটি বারমুডা।

কী ভাবে মৃত্যু হল অভিজিৎ ও সুচরিতার, তা নিয়ে ধন্দে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র।

কী ভাবে মৃত্যু হল অভিজিৎ ও সুচরিতার, তা নিয়ে ধন্দে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গোপালনগর শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৪ ০৪:৪৯
Share: Save:

অস্বাভাবিক মৃত্যু হল এক দম্পতির। সোমবার সকালে গোপালনগরের বহিলাপোতা এলাকার একটি বাড়ি থেকে স্বামী-স্ত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মৃতদের নাম সুচরিতা সেন (২৩) ও অভিজিৎ সেন (২৪)। ময়নাতদন্তের জন্য দেহ দু’টি বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এ দিন সকালে পুলিশ ওই দম্পতির ঘরে ঢুকে দেখে, খাটের উপর চিৎ হয়ে পড়ে রয়েছে সুচরিতার দেহ। পরনে লাল নাইটি। পাশে খাটের আড়ার সঙ্গে গলায় গামছা জড়ানো অবস্থায় ঝুঁকে রয়েছে অভিজিতের দেহ। হাঁটু মোড়া অবস্থায় পা দু’টি মেঝেতে ঠেকানো। পরনে একটি বারমুডা। বনগাঁর এসডিপিও মীর সহিদুল আলি বলেন, ‘‘একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ বোঝা যাবে। নির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ পাইনি। পেলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

পুলিশ ও মৃতদের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার স্বামী-স্ত্রী ছাড়া বাড়িতে কেউ ছিলেন না। অভিজিৎবাবুর বাবা অজয়বাবু, মা রমাদেবী ও বোন পূর্ণিমা নদিয়ার গাংনাপুরে অভিজিৎবাবুর মাসি উমাদেবীর বাড়িতে গিয়েছিলেন। অভিজিৎবাবুর মামা রামবাবু স্থানীয় সাতবেড়িয়া এলাকায় থাকেন। তিনি জানান, সোমবার সকাল ৬টা নাগাদ অভিজিৎবাবু তাঁকে ফোন করে জানান, সুচরিতা মারা গিয়েছেন। তিনি অভিজিতের বাবা-মাকে ফোন করে খবর দেন। বেলা ৮টা নাগাদ অজয়বাবুরা ফিরে এসে দেখেন, বাড়ির বারান্দার গ্রিলে তালা দেওয়া। কাঠের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। প্রতিবেশীদের সাহায্যে তাঁরা দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকলে ওই দৃশ্য দেখতে পান। খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। এ দিন অজয়বাবুর বাড়িতে দাঁড়িয়ে রামবাবু বলেন, ‘‘সকালে অভিজিতের ফোনে ঘুম ভাঙে। সে জানায়, তার স্ত্রী মারা গিয়েছেন। আমি ফোন করে ওর বাবা-মাকে খবর দিই।”

মৃতদের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বাবার মিষ্টির দোকানে বসতেন অভিজিৎ। চাকরির চেষ্টা করছিলেন। মোবাইলে মিস্ড্ কলের সূত্রে হাওড়ার বাসিন্দা সুচরিতার সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। সেখান থেকে প্রেম। আট মাস আগে বিয়ে করেন তাঁরা। রবিবার রাতে মিষ্টির দোকান বন্ধ করে তাঁকে বাড়ি ফিরতেও দেখেছিলেন প্রতিবেশীরা।

এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ভিড় উপচে পড়ছে সেনবাড়িতে। গোপালনগর থানার ওসি দীপঙ্কর ভট্টাচার্য মৃতদেহের ছবি তুলছেন। কথা বলতে পারছেন না অভিজিৎবাবুর বাবা-মা। মৃতের বোন পূর্ণিমা বলেন, ‘‘বৌদি খুবই মিশুকে ছিল। বাড়িতে কোনও গোলমাল ছিল না। কীভাবে এমন ঘটনা ঘটল, বুঝতে পারছি না। কয়েকদিন আগে দাদা-বৌদি জামাইষষ্ঠীও করে এসেছে।” তবে প্রতিবেশীদের অনুমান, স্ত্রীর সঙ্গে বিবাদের জেরেই হয়তো তাঁকে খুন করে আত্মঘাতী হয়েছেন অভিজিৎবাবু।

মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর খানেক আগে রাতে মোটরবাইকে করে বাড়ি ফেরার সময়ে কয়েক জন দুষ্কৃতী অভিজিৎকে গুলি করে খুনের চেষ্টা করে। তারা কারা হতে পারে, তা বলতে পারেননি অভিজিৎ। সেই ঘটনার সঙ্গে এই মৃত্যুর কোনও যোগ রয়েছে কি না তা দেখছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE