যানজটে নাজেহাল যাত্রীরা। ছবি:অরুণ লোধ।
বজবজ স্টেশন থেকে ওরিয়েন্ট মোড় পর্যন্ত যেতে দুপুরে সময় লাগে ২০ মিনিট। ওই একই পথ বিকেল পাঁচটার পরে যেতে দ্বিগুণ বা তারও বেশি সময় লেগে যায়। কারণ, চড়িয়াল বাজারের এলাকার তীব্র যানজট।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সকাল ১০-১২টা পর্যন্ত ওই এলাকায় অঘোষিত ‘চাক্কা জ্যাম’ হয়ে যায়। আবার বিকেল চারটের পর থেকে শুরু করে রাত প্রায় দশটা পর্যন্ত পরিস্থিতি একই রকম। কখনও একটু কম, কখনও বা বেশি। কলকাতার সঙ্গে সড়কে যোগাযোগের একমাত্র পথ এই বজবজ ট্রাঙ্ক রোড। বর্তমান নাম মহাত্মা গাঁধী রোড। ব্যস্ত সময়ে রাস্তা পুরোপুরি অটোর দখলে চলে যায়। এ ছাড়াও সাইকেল, বাস, ট্রাক, টেম্পো, দশ-বারো চাকার ট্রেলারের চাপে নাভিশ্বাস অবস্থা হয় চড়িয়াল বাজার এলাকার। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা জানান, এখানে রাস্তার চার মাথার মোড় রয়েছে। একটি রাস্তা চলে গিয়েছে অছিপুরের দিকে। অন্যটি কলকাতার দিকে। আর এক দিক আমতলা-বাঁকড়াহাটের পথে। অন্য রাস্তা বজবজ থানার দিকে। চারটি রাস্তা দিয়ে আসা যানবাহনের ভিড়ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সারা দিন ধরে অনবরত লরির যাতায়াত।
দীর্ঘ দিনের এই সমস্যায় নাজেহাল যাত্রীরা। ট্রেনের নিত্য যাত্রীরা হাতে দ্বিগুণ সময় নিয়ে বেরোন। এক বার ট্রেন বেরিয়ে গেলে অপেক্ষা আধ ঘণ্টার। নিত্যযাত্রীদের মতে, এর অন্যতম কারণ চড়িয়াল বাজার এলাকার যানজট।
বজবজ পুরসভা সূত্রে খবর, এলাকায় সিইএসসি জেনারেটিং স্টেশন, এলপিজি বটলিং প্ল্যান্ট, এফসিআই-এর গুদাম-সহ বেশ কয়েকটি সংস্থা রয়েছে। সেই কারণে সারা দিনই লরির যাতায়াত হয়। তা নিয়ন্ত্রণ করা এক প্রকার অসম্ভব। আরও একটি সমস্যা হল, রাস্তার দু’ধারে লরি দাঁড় করিয়ে চড়িয়াল বাজারের জিনিসপত্র ওঠানো নামানো হয়। এর জন্য সাত মিটার চওড়া বজবজ ট্রাঙ্ক রোড আরও সঙ্কীর্ণ হয়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দা ও পথচারীদের দাবি, ওখানে কোনও ট্রাফিক সিগন্যাল নেই। ওই রাস্তায় ট্র্যাফিক পুলিশ থাকলেও পরিস্থিতির বিশেষ পরিবর্তন হয় না। বজবজ পুরসভার উপ প্রধান গৌতম দাশগুপ্ত জানান, গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তার যানজটের কথা বিবেচনা করে একটি উড়ালপুল তৈরির প্রস্তাব জমা পড়েছে। চড়িয়াল মসজিদ থেকে শুরু হয়ে চড়িয়াল মোড় পেরিয়ে এই উড়ালপুলের নামার কথা। আনুমানিক আধ কিলোমিটার এই রাস্তা মাস তিনেক আগে পিডব্লিউডি পরিদর্শনও করে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রকল্পের অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হবে। এই প্রসঙ্গে রাজ্য ট্র্যাফিক পুলিশের ডিআইজি আনন্দ কুমার বলেন, “বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। দু’টি কারণে ওখানে ট্র্যাফিকের সমস্যা হয়ে থাকতে পারে। একটি, ট্র্যাফিক আইন না মানা। অন্যটি যথাযথ পরিকাঠামো না থাকা। ওই এলাকার পরিস্থিতি দেখে কী ভাবে ট্র্যাফিক ব্যবস্থার উন্নতি করা যায় সেই নিয়ে আলোচনা করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy