তপন সর্দারকে আদালত থেকে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।—নিজস্ব চিত্র।
স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে খুন করে ঘরের বাঁশের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখেছিল স্বামী। সেই অপরাধে সোমবার তপন সর্দার নামে ওই ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিলেন বসিরহাট ফাস্ট ট্র্যাক ওয়ান বিচারক অমিত চট্টোপাধ্যায়। সরকার পক্ষের আইনজীবী অরিন্দম গোলদার জানান, তপন সর্দারকে ১০ হাজার টাকা জরিমানারও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
পুলিশ সূত্রের খবর, ২০০৩ সালের মার্চ মাসে মিনাখাঁর বাছড়া মোহনপুরের হরিণখোলা গ্রামের বাসিন্দা বাদল রুইদাসের মেয়ে সতীকে বিয়ে করেছিল তপন। নানা অজুহাতে সে স্ত্রীকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যেত না। ঘটনার রাতে বাদলবাবু এবং তাঁর স্ত্রী বাদুড়িয়ায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিমন্ত্রণে গিয়েছিলেন। সে সময়ে মেয়ে-জামাই ছাড়াও বাড়িতে ছিলেন সতীর ভাই জয়দেব এবং তাঁর এক মাসতুতো বোন লক্ষ্মী। পুলিশের কাছে করা অভিযোগে জয়দেব জানান, রাত পৌনে ১১টা নাগাদ জামাইবাবুর ঘর থেকে দিদির গোঙানির শব্দ শোনা যায়। কী হয়েছে জানতে চাইলে এড়িয়ে যায় জামাইবাবু। খানিক ক্ষণ পরে গোঙানির শব্দ কমে যেতে জয়দেবের সন্দেহ আরও গাঢ় হয়। জামাইবাবুর কাছে দেশলাই চান তিনি। আলো জ্বেলে দেখতে চেয়েছিলেন। জামাইবাবু দেশলাই দিতে অস্বীকার করে। জয়দেব দেশলাই জোগাড় করে টেমি জ্বালিয়ে দেখেন, তপন স্ত্রীকে ঘরের বাঁশের সঙ্গে ঝুলিয়ে দিচ্ছে।
খুনের অভিযোগ পেয়ে পুলিশ গ্রেফতার করে তপনকে। জামিনে ছাড়াও পায় ওই ব্যক্তি। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, তপনের আরও একটা বিয়ে আছে। সে খবর গোপন করেই সতীকে বিয়ে করেছিল। নানা বাহানায় যে কারণে দ্বিতীয় স্ত্রীকে বাড়িতে নিয়ে যেত না। যদিও বিয়ের কয়েক মাস পরে স্বামীর প্রথম বিয়ের খবর জেনে গিয়েছিলেন প্রথম পক্ষের স্ত্রী। গোলমালের ভয়ে রাতের অন্ধকারে সতীর গলা টিপে শ্বাসরোধ করে তাকে খুন করে তপন। দেহ ঝুলিয়ে দিয়ে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করেছিল সে। কিন্তু ধরা পড়ে যায়। এ দিন সাজা শোনার পরে তপন অবশ্য দাবি করে, চক্রান্ত করে তাকে ফাঁসানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy