রাকিবুল মোল্লার শারীরিক অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল বলে জানাল বসিরহাট জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার মোটর বাইক থেকে লাফিয়ে নামতে গিয়ে পড়ে মাথায় চোট পায় সে। বার কয়েক জ্ঞান হারায়। সিটি স্ক্যানও করাতে হয় বছর দশেকের ছেলেটির। বুধবারও সে ভর্তি হাসপাতালে। তবে অবস্থা তুলনায় ভালর দিকে বলেই জানিয়েছেন চিকিত্সকেরা।
বাদুড়িয়ার পিয়ারা গন্ধর্বপুর হাইস্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার জন্য কয়েক জন সহপাঠীর সঙ্গে মঙ্গলবার সকালে স্কুলে এসেছিল রাকিবুল। তার বাড়ি ওই এলাকাতেই। ফেরার পথে রাকিবুলের চোখে পড়ে, পরিচিত দুই দিদিকে উত্যক্ত করছে মোটর বাইক আরোহী এক যুবক। ছোট মানুষ হয়েও রাকিবুলের বুঝতে দেরি হয়নি, ওই যুবকের আচরণ মোটেই পছন্দ করছে না দিদিরা। প্রতিবাদ করে সে। অভিযোগ, সে সময়ে রাকিবুলকে ধমকে-চমকে জোর করে নিজের বাইকে তুলে নেয় আলি হাসান নামে ওই যুবক। দ্রুত গতিতে বাইক চালিয়ে দেয়। ভয় পেয়ে বাইক থেকে লাফিয়ে পড়ে রাকিবুল চোট পায় মাথায়। আশপাশের লোকজন ছুটে এসে ধরে ফেলে আলিকে। মারধরের পরে তাকে স্কুলের একটি ঘরে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখা হয়। পরে পুলিশ এসে গ্রেফতার করে তাকে। বুধবার বসিরহাট আদালতের বিচারক ওই যুবককে ১৪ দিন জেলহাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক অনুপম দে গোটা ঘটনায় উদ্বিগ্ন। তিনি জানান, অভিভাবক ও শিক্ষকদের নিয়ে এ দিন স্কুলে আলোচনা হয়েছে। সকলকেই সচেতন থাকতে হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে সেখানে। স্কুলে যাতায়াতের পথে যাতে পড়ুয়াদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয়, সে জন্য পুলিশ-প্রশাসনের কাছেও আবেদন জানানো হবে বলে জানান তিনি। বিষয়টি নিয়ে পরে বিস্তারিত বৈঠকে বসবে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
বসিরহাটের ধলতিথার বাসিন্দা আলি হাসান বিবাহিত। তার পরিবারের দাবি, যে ধরনের অভিযোগ আনা হচ্ছে, তা ঠিক নয়। রাকিবুলের পরিবারের পাশেও দাঁড়িয়েছে আলির বাড়ির লোকজন। হাসপাতালেও দেখা গিয়েছে তাঁদের। রাকিবুলের বাবা মনিরুল বলেন, “আমরা অত্যন্ত গরিব পরিবার। একটা ঘটনা ঘটে গিয়েছে। তবে তা নিয়ে খুব বাড়াবাড়ি হোক, তা চাইছি না। আমার ছেলেটাও ছোট। ওর ভবিষ্যত্ পড়ে আছে।” অভিযোগকারী দুই কিশোরীর পরিবারের তরফে এ দিন কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তবে ঘটনায় তাঁরা যে আতঙ্কিত, সে কথা বলেছেন।
ঘটনা যে দিকে গড়াচ্ছে, তাতে কিছুটা অসন্তুষ্ট মনিরুলের পাড়া-প্রতিবেশীরা। তাঁদের অনেকেরই বক্তব্য, এ ধরনের ঘটনায় দোষী যদি সহজে ছাড়া পেয়ে যায়, তবে আইনের শাসন থাকবে না। দুষ্কৃতীরা বেপরোয়া হয়ে উঠবে। আলির কঠোর সাজা চাইছেন তাঁরা। পুলিশের এক কর্তা বলেন, “শ্লীলতাহানি, খুনের চেষ্টা ও অপহরণের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের হয়েছে। সেই মতোই তদন্ত এগোবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy