Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

মাটি পাচারে বাধা দেওয়ায় মারধর, তৃণমূল নেতা ধৃত

এলাকা দিয়ে মাটি-পাচারের ডাম্পার নিয়ে যাওয়ার প্রতিবাদ করেছিলেন গ্রামবাসীরা। সেই ঘটনায় গ্রামবাসীদের মারধরের অভিযোগে উত্তর ২৪ পরগনার শাসনের এক তৃণমূল নেতা ও এক কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার তাদের বারাসত আদালতে তোলা হয়। পরে অবশ্য জামিন পেয়ে যান দু’জনেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:২৩
Share: Save:

এলাকা দিয়ে মাটি-পাচারের ডাম্পার নিয়ে যাওয়ার প্রতিবাদ করেছিলেন গ্রামবাসীরা। সেই ঘটনায় গ্রামবাসীদের মারধরের অভিযোগে উত্তর ২৪ পরগনার শাসনের এক তৃণমূল নেতা ও এক কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার তাদের বারাসত আদালতে তোলা হয়। পরে অবশ্য জামিন পেয়ে যান দু’জনেই।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ধৃতদের মধ্যে মহম্মদ পাপ্পানা ভাঁড় শাসনে তৃণমূলের সহরা গ্রাম কমিটির কোষাধ্যক্ষ। তাঁর স্ত্রী আবার শাসন গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য। অন্য ধৃত মহমম্দ ইমাদুল বেড়েও এলাকায় তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী বলেই পরিচিত। এ দিন বহু চেষ্টা করেও ধৃতদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে বারাসত ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা মহম্মদ ইফতিকারউদ্দিন বলেন, “ওঁদের বিরুদ্ধে মাটি পাচারের মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।”

কৃষিজমির মাটি কোনও অবস্থাতেই কাটা যাবে না এই সরকারি নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বারাসত ২ ব্লকের শাসন এলাকায় প্রায় প্রতিদিন পেল্লায় মাটি কাটার যন্ত্র ঢুকছে। শতাধিক ডাম্পারে করে কাটা মাটি পাচার করা হচ্ছে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের একটা বড় অংশের অনেক দিনের অভিযোগ। ডাম্পারের ধাক্কায় মৃত্যুও ঘটেছে।

স্থানীয় সূত্রের দাবি, সহরা এলাকাতে মাটি কাটা চলছিল। মঙ্গলবার মাটি কেটে ডাম্পারে নিয়ে যাওয়ার জন্য রাস্তা সমান করছিলেন মাটি ব্যবসায়ীরা। কিন্তু সরু রাস্তা দিয়ে বিশাল আকারের মাটি বোঝাই ডাম্পার চললে তঁদের ঘরবাড়ির ক্ষতি হতে পারে বলে আপত্তি তোলে গ্রামের ১০-১২টি পরিবার। তারই জেরে মাটি ব্যবসায়ীদের একাংশ বাসিন্দাদের মারধর করে বলে অভিযোগ। আহতদের মধ্যে নবম শ্রেণির এক ছাত্রী, তার মা ছাড়াও ছিলেন জনা দশেক গ্রামবাসী। শাসন থানায় অভিযোগ করা হয়। এ দিন গ্রেফতার করা হয় ওই দু’জনকে।

শাসনে ভেড়ি ও কৃষিজমি থেকে অবৈধ ভাবে মাটি কেটে পাচারের কাজে তৃণমূলের নেতারা জড়িত বলে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ তুলছেন বাম ও বিজেপি নেতৃত্ব। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মজিদ আলি (মাস্টার) বলেন, “আমরাই আন্দোলন করে এই জমি চাষিদের হাতে তুলে দিয়েছিলাম। সেই জমির মাটি কেটে তৃণমূলের লোকজন পাচার করে চলেছে। তৃণমূলের এই মাটি লুঠের বিরুদ্ধে আমরা ব্যাপক আকারে আন্দোলন করতে চলেছি।”

বারাসত ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মহম্মদ ইফতিকারউদ্দিন মাটি-পাচারে শাসক দলের নেতা-কর্মীদের জড়িত থাকার অভিযোগ মানেননি। তাঁর দাবি, “মাছ চাষের সুবিধার জন্য ভেড়িতে জমা পলি কেটে তুলে ফেলতে হয়। সেই মাটি পাচার নয়, ভেড়ির পাড়ে রাখা হয়। তাই মাটি কাটার যন্ত্র সহারা গ্রামে ঢুকছিল। তাতেই বাধা আসে।” তা হলে শাসনের সর্বত্রই কি ভেড়ির মাটি কাটা চলছে, না হলে মাটি বোঝাই ডাম্পারে এলাকা ছেয়ে গিয়েছে কেন? ইফতিকারউদ্দিনের জবাব, “ডাম্পারে করে মাটি পাচার অন্যত্র হতে পারে। সহরা গ্রামে তেমন কিছু হয়নি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

tmc arrest southbengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE