Advertisement
E-Paper

রাজনীতির বলি দুই স্বামীই, পাঁচ সন্তান নিয়ে অসহায় ছাফিরা বিবি

প্রথম স্বামী খুন হয়েছিলেন রাজনীতি করতে গিয়ে। সেই মামলার সাক্ষী থাকায় খুন হলেন দ্বিতীয় স্বামীও। সব মিলিয়ে বিধ্বস্ত মিনাখাঁর দক্ষিণ বাড়গা গ্রামের নিহত তৃণমূল নেতা সাজাহান গাজির স্ত্রী ছফিরা বিবি। শুক্রবার রাতে দুষ্কৃতীরা ঘরে ঢুকে ছাফুরা এবং তার সন্তানদের সামনে গুলি করে খুন করে সাজাহানকে। মৃত্যু নিশ্চিত করতে হাত -পা বেঁধে দেহটি জলে ফেলে দেওয়া হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৪ ০২:০৮
নিহত সাজাহান গাজি। নিজস্ব চিত্র।

নিহত সাজাহান গাজি। নিজস্ব চিত্র।

প্রথম স্বামী খুন হয়েছিলেন রাজনীতি করতে গিয়ে। সেই মামলার সাক্ষী থাকায় খুন হলেন দ্বিতীয় স্বামীও।

সব মিলিয়ে বিধ্বস্ত মিনাখাঁর দক্ষিণ বাড়গা গ্রামের নিহত তৃণমূল নেতা সাজাহান গাজির স্ত্রী ছফিরা বিবি। শুক্রবার রাতে দুষ্কৃতীরা ঘরে ঢুকে ছাফুরা এবং তার সন্তানদের সামনে গুলি করে খুন করে সাজাহানকে। মৃত্যু নিশ্চিত করতে হাত -পা বেঁধে দেহটি জলে ফেলে দেওয়া হয়। মোট ৮ জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করেন এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় ইমান মল্লিক এবং আবু বক্কর মোল্লাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৮ সালে দুষ্কৃতীদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছিল ছফিরার প্রথম স্বামী তথা তৃণমূল নেতা মহিনুর হকের দেহ। সহায় সম্বলহীন ছাফুরার পাশে এসে দাঁড়ায় ওই গ্রামেরই আর এক তৃণমূল নেতা সাজাহান গাজি। মহিনুর হকের খুনে গ্রেফতার হয় ইউসুফ মোল্লা ওরফে হাঁসা-সহ তার সঙ্গীরা। চার বছর জেল খাটার পর বাড়ি ফেরে হাঁসা। ইতিমধ্যে মহিনুরের স্ত্রী ছফিরাকে বিয়ে করে সাজাহান। মহিনুর খুনের মামলার তদারকির দায়িত্ব নেয় সাজাহান। সম্প্রতি গাঁজা-সহ পুলিশের হাতে ধরা পড়ে ফের জেলে যেতে হয় হাঁসাকে। এই মামলায় প্রধান সাক্ষি হয় সাজাহান। ফলে তার উপর আক্রোশ বাড়ে দুষ্কৃতীদের। তাকে নানা ভাবে খুনের হুমকিও দেওয়া হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পুলিশের সঙ্গে বেশ ভালই সম্পর্ক ছিল তাঁর। বাবা নুর আহমেদ গাজি এলাকারই একটি মানবাধিকার সমিতির অঞ্চল সভাপতি। এলাকার মাদক প্রতিরোধেও পুলিশকে সাহায্য করত সাজাহান।

ছোট পাঁচ সন্তানকে নিয়ে এখন অথৈ জলে ছাফিরা বিবি। হাসপাতালে শুয়ে বললেন, ‘‘রাজনীতি করলেই কি তাকে খুন করতে হবে? রাজনীতি কি কাউকে জীবন দিতে পারে না?” গাল বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ে তাঁর।

কী ভাবে সন্তানদের মানুষ করবেন, কী ভাবে তাঁদের লেখাপড়া শেখাবেন, কিছুই জানেন না তিনি। বলেন, ‘‘বড় হয়ে ওরাও যদি বাবার খুনের প্রতিশোধ নিতে চায়, তখন কী হবে? খুন তো চলতেই থাকবে।”

ভেঙে পড়েছেন সাজাহানের বাবা নুর আহমেদ গাজিও। বললেন, ‘‘মহিনুর খুন এবং হাঁসার গাঁজার মামলা থেকে হাত গুটিয়ে নেওয়ার জন্য হাঁসার লোকজনরা প্রায়ই ছেলেকে খুনের হুমকি দিয়ে ফোন করত। বাড়ির সামনেই পুলিশ চৌকি ছিল। আমার ভরসা ছিল। কিন্তু তাতেই বা কী হল?”

যেখানে সাজাহানের মৃতদেহ পড়েছিল, সেই জায়গাটি দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলা থানা এলাকার মধ্যে পড়ে। সাজাহানের আত্মীয়া সাহানারা বিবির দাবি, ‘‘রাতে যখন গুলির শব্দ পাই, তখনই বুঝেছিলাম হাঁসার সঙ্গীরা আক্রমণ করেছে। আমরা ফাঁড়িতে গিয়ে পুলিশের হাত-পা ধরে বলি, তাড়াতাড়ি চলুন, না হলে ওরা সাজাহানকে খুন করে ফেলবে। কিন্তু পুলিশকর্মীরা আমাদের কোন কথা শোনেনি।” যদিও পুলিশ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

গ্রামবাসীদের একাংশের দাবি, সময় মত পুলিশ আসলে হয়তো বেঁচে যেত সাজাহান।

southbengal minakhan shahjahan gazi political murder murder
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy