Advertisement
E-Paper

রাস্তায় কলাগাছ ফেলে কয়েক ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চালাল দুষ্কৃতীরা

আগ্নেয়াস্ত্র, কুড়ুল, লাঠি হাতে রাস্তায় কলাগাছ ফেলে গাড়ি থামিয়ে লুঠপাট চালাল এক দল দুষ্কৃতী। কয়েক জন ব্যবসায়ীকে প্রচণ্ড মারধরও করে তারা। এক জন ব্যবসায়ীকে গাছের সঙ্গে গামছা দিয়ে বেঁধে মারা হয় বলেও অভিযোগ। মঙ্গলবার রাতে দেগঙ্গা ব্লকের সোয়াই শ্বেতপুর পঞ্চায়েতের চাতরের বিল-লাগোয়া রাস্তায় কয়েক ঘণ্টা ধরে দুষ্কৃতীরা দৌরাত্ম্য চালালেও পুলিশের দেখা মেলেনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৪ ০১:০৫
সুনসান এই এলাকাতেই ঘটেছে ডাকাতি।—নিজস্ব চিত্র।

সুনসান এই এলাকাতেই ঘটেছে ডাকাতি।—নিজস্ব চিত্র।

আগ্নেয়াস্ত্র, কুড়ুল, লাঠি হাতে রাস্তায় কলাগাছ ফেলে গাড়ি থামিয়ে লুঠপাট চালাল এক দল দুষ্কৃতী। কয়েক জন ব্যবসায়ীকে প্রচণ্ড মারধরও করে তারা। এক জন ব্যবসায়ীকে গাছের সঙ্গে গামছা দিয়ে বেঁধে মারা হয় বলেও অভিযোগ। মঙ্গলবার রাতে দেগঙ্গা ব্লকের সোয়াই শ্বেতপুর পঞ্চায়েতের চাতরের বিল-লাগোয়া রাস্তায় কয়েক ঘণ্টা ধরে দুষ্কৃতীরা দৌরাত্ম্য চালালেও পুলিশের দেখা মেলেনি। বুধবার সকালে পুলিশকর্তারা ঘটনাস্থলে যান। গ্রামবাসীদের বক্তব্য, রাস্তাটির এক ধারে দেগঙ্গা, অন্য পাশে হাবরা থানা এলাকা। সুনসান এই এলাকায় প্রায়শই ডাকাতি, ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটলেও পুলিশ বিশেষ গুরুত্ব দেয় না। জেলা পুলিশের পক্ষে জানানো হয়েছে, তদন্ত শুরু হয়েছে। দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশিও চলছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, হাবরার বিড়া চৌমাথা থেকে বদর হয়ে চাতরা পর্যন্ত ৯ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে পড়ে চাতরের বিল। সোয়াই শ্বেতপুর পঞ্চায়েত এলাকায় চাতরের বিলের এক পাশে দেগঙ্গা অন্য পাশে হাবরা থানা এলাকা। মঙ্গলবার রাত ১টা নাগাদ ওই রাস্তা দিয়ে সাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন দুধ ব্যবসায়ী ইছাপুর গ্রামের বাসিন্দা বাপ্পা ঘোষ। তিনি জানান, হঠাত্‌ চোখে পড়ে রাস্তার মধ্যে কলাগাছ পড়ে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আশপাশ থেকে ১০-১২ জন দুষ্কৃতী বেরিয়ে এসে পথ আটকায়। বাপ্পাবাবু বলেন, “দুষ্কৃতীরা আমার মাথায় রিভলবার ধরে, কেউ কুঢ়ুল তাক করে টাকা চায়। টাকা দিতে দেরি হওয়ায় আমার গামছা কেড়ে নিয়ে তা দিয়ে রাস্তার পাশে বাবলা গাছের সঙ্গে বেঁধে প্রচণ্ড মারধর করে। সঙ্গে থাকা হাজার খানেক টাকা, মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়।”

খানিক ক্ষণের মধ্যেই ওই রাস্তায় এসে পড়ে বিয়ে বাড়ি ফেরত একটি গাড়ি। সেটিকেও থামায় দুষ্কৃতীরা। লুঠপাট চালায়। এ ভাবে আরও কিছু বাইক, সব্জি-বোঝাই ট্রাক-সহ ৮-১০টি গাড়ি আটকায় তারা। দু’আড়াই ঘণ্টা পরে তারা এলাকা ছাড়ে।

দেগঙ্গার অনন্তপাড়ার বাসিন্দা ওহাব আলি, আলি আহমেদ বলেন, “লরিতে সব্জি নিয়ে কলকাতার বাজারের দিকে রওনা দিয়েছিলাম। কুয়াশার জন্য রাস্তা ভাল করে দেখা যাচ্ছিল না। হঠাত্‌ চালক ব্রেক কষে গাড়ি দাঁড়া করানোর পরে দেখলাম, রাস্তার উপরে কলাগাছ ফেলা। তখনই সন্দেহ হয়েছিল। কী করব বুঝে ওঠার আগেই দুষ্কৃতীরা আমাদের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঁশ দিয়ে মারধর শুরু করে। সঙ্গের টাকা, মোবাইল কেড়ে নেয়।” মোটর বাইক আরোহী সওকত আলির কথায়, “এক সঙ্গীকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলাম। চাতরের বিলের কাছে দুষ্কৃতীরা পথ আটকালে ভয়ে সঙ্গী গাড়ি থেকে লাফিয়ে মাঠের মধ্যে দিয়ে পালায়। ওকে না পেয়ে দুষ্কৃতীরা আমাকে প্রচণ্ড মারধর করে। সঙ্গে থাকা ৫ হাজার টাকা, আংটি, মোবাইল কেড়ে নেয়।”

ছিদাম ঘোষ, রহিম মণ্ডল, রঞ্জিত্‌ ঘোষদের মতো স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, বছর তিনেক আগেও একবার চাতরের বিল এলাকায় দুষ্কৃতীরা রাতভর যাত্রীদের উপরে হামলা চালিয়েছিল। ওই ঘটনার পরে পুলিশি টহল শুরু হয়। কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতে টহলদারি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে দুষ্কৃতীদের আনাগোনা বাড়ে। কয়েক মাস আগে ওই বিলে গুলিবিদ্ধ এক যুবকের দেহ মিলেছিল। এরপরে বিল এলাকা থেকে কিছুটা দূরে সিভিক ভলান্টিয়ার রাখা হলেও বিলের নির্জন এলাকা যে কে সেই থেকে যায়। ফলে মাঝে মধ্যেই ছোটখাট ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। রাস্তার দু’ধার দুটি থানা এলাকার হওয়ায় পুলিশ ডাকতে গেলে নানা অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয় বলেও তাঁদের অভিযোগ।

deganga vandalism road blockade southbengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy