Advertisement
০১ মে ২০২৪
Uttarkashi Tunnel Collapse

বাংলার তিন শ্রমিক-সহ সুড়ঙ্গে আটকে ৪০ জন, পাঠানো হয়েছে খাবার, জল

উত্তরকাশীর জেলা প্রশাসন আটকে পড়া ৪০ জন শ্রমিকের রাজ্যওয়াড়ি একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। পশ্চিমবঙ্গের তিন জন ছাড়া সব চেয়ে বেশি শ্রমিক রয়েছেন ঝাড়খণ্ডের, ১৫ জন।

উদ্ধারকাজ পরিদর্শনে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামী।

উদ্ধারকাজ পরিদর্শনে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামী। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:০৫
Share: Save:

ভাল আছেন উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারা-বারকোট নির্মীয়মান সুড়ঙ্গে ধসে আটকে পড়া ৪০ জন শ্রমিক, যাঁদের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের তিন জন রয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলা গিয়েছে। সুড়ঙ্গের মধ্যে খাবার ও জল পাঠানো হয়েছে। নিয়মিত অক্সিজেনও পাঠানো হচ্ছে। তবে তাঁদের বার করে আনতে আরও দু’দিন সময় লাগতে পারে বলে জানাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা। উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামী এ দিন ব্রহ্মখাল-যমুনোত্রী হাইওয়ের উপরে ধসে চাপা পড়া সুড়ঙ্গটির উদ্ধারকাজ পরিদর্শন করেন। সুড়ঙ্গের যতটুকু ধস সরিয়ে পরিষ্কার করা হয়েছে, সেই পর্যন্ত যান তিনি।

উত্তরকাশীর জেলা প্রশাসন আটকে পড়া ৪০ জন শ্রমিকের রাজ্যওয়াড়ি একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। পশ্চিমবঙ্গের তিন জন ছাড়া সব চেয়ে বেশি শ্রমিক রয়েছেন ঝাড়খণ্ডের, ১৫ জন। এ ছাড়া উত্তরপ্রদেশের আট জন, ওড়িশার পাঁচ জন, বিহারের চার জন, উত্তরাখণ্ড ও অসমের দু’জন করে এবং হিমাচল প্রদেশের এক জন রয়েছেন।

সুড়ঙ্গে আটকে থাকা শ্রমিকদের মধ্যে হুগলির পুরশুড়ার হরিণখালির বছর চব্বিশের সৌভিক পাখিরা এবং নিমডাঙির জয়দেব পরামানিক রয়েছেন। সোমবার সকালে পরিবারের লোকজন বিষয়টি জানতে পারেন। সোমবার সন্ধ্যায় জয়দেবের মা তপতী পরামানিক এবং সৌভিকের মা লক্ষ্মী পাখিরা জানিয়েছেন, তাঁদের ছেলের ভয়েস রেকর্ড শোনানো হয়েছে। জানানো হয়েছে, ছেলেরা ভাল আছে। খাবার দেওয়া হচ্ছে ও অক্সিজেন পাঠানো হচ্ছে। সোমবার রাতেই তাঁদের উদ্ধার করা সম্ভব হতে পারে, এমন আশাও দেওয়া হয়েছে।

সৌভিক কলকাতার আশুতোষ কলেজ থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা করেছিলেন। আর জয়দেব নালিকুলের একটি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পাশ করেছিলেন। মাস দশেক আগে বন্ধুদের থেকে উত্তরাখণ্ডের একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরির খবর পেয়ে তাঁরা সেখানে কাজে যোগ দেন। এ রাজ্যের আর এক জন কোচবিহারের বাসিন্দা, নাম মনির তালুকদার।

উত্তরাখণ্ডে গঙ্গোত্রী, যমুনোত্রী, কেদারনাথ ও বদ্রীনাথ— এই চার ধাম পর্যন্ত উন্নত সড়ক পৌঁছে দেওয়ার যে প্রকল্প নরেন্দ্র মোদী সরকার নিয়েছে, পরিবেশের পক্ষে তা কতটা অনুকূল— এ নিয়ে বিতর্ক আছে। পরিবেশবিদেরা মনে করেন, হিমালয়ের সংবেদনশীল বাস্তুতন্ত্র ধ্বংস হবে এর ফলে। সম্প্রতি উত্তরাখণ্ডে একের পর এক ভয়ানক ধস এবং হড়পা বানের জন্য তাঁরা এই প্রকল্পকে অনেকাংশেই দায়ী করছেন। কিন্তু বিরোধিতায় কান না দিয়ে এগিয়ে চলেছে সরকার। যমুনোত্রীর পথে প্রস্তাবিত এই সুড়ঙ্গটি হবে ৪.৫ কিলোমিটার লম্বা। সিল্কিয়ারার দিকে ২.৩ কিলোমিটার এবং বারকোটের দিকে ১.৭ কিলোমিটার সুড়ঙ্গের কাজ প্রায় শেষ। এই অবস্থায় ধস নেমে চাপা পড়ে গিয়েছেন শ্রমিকেরা। কেন্দ্র ও রাজ্যের বিশেষ প্রশিক্ষিত উদ্ধারকারী দল, ইন্দো টিবেটান বর্ডার পুলিশ এবং বর্ডার রোডওয়েজ়ের বাহিনী সমন্বয় করে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে।

উদ্ধারকারীরা জানাচ্ছেন, আপাতত রবারের পাইপের মধ্য দিয়ে খাবার, অক্সিজেন এবং পানীয় জল পোঁছে দেওয়া হচ্ছে আটকে থাকা শ্রমিকদের কাছে। নিয়মিত যোগাযোগ রেখে তাঁদের মনোবল অটুট রাখা হচ্ছে। আপাতত তাঁরা চওড়া একটি স্টিলের পাইপ ভিতর পর্যন্ত পৌঁছে দিতে চাইছেন, যার মধ্য দিয়ে শ্রমিকেরা এক এক করে বেরিয়ে আসবেন। এই প্রয়াস সফল না হলে আরও তিনটি বিকল্প তাঁরা ভেবে রেখেছেন। তবে পুরো ধ্বংস্তূপ সরিয়ে শ্রমিকদের উদ্ধার করতে গেলে অনেক বেশি সময় লাগবে। কারণ দু’দিন ধরে মাত্র ১৫ থেকে ১৭ মিটার ধস পরিষ্কার করা গিয়েছে। তবে উদ্ধারকারীরা নিশ্চিত, সবাইকে নিরাপদে বার করে আনা যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Accident Pushkar Singh Dhami
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE