মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল ছবি।
রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে খুনের হুমকি চিঠি মামলায় গ্রেফতার এক চিকিৎসক-সহ তিন জন। লালবাজার সূত্রে খবর, মূল অভিযুক্ত চিকিৎসক অরিন্দম সেন গত দু’বছর ধরে বিভিন্ন লোককে হুমকি চিঠি পাঠাতেন।
গত ২৬ অক্টোবর, মঙ্গলবার আলাপনের স্ত্রী সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে একটি চিঠি আসে। এক লাইনের চিঠিতে ইংরেজিতে লেখা ছিল, ‘আপনার স্বামী নিহত হবেন। কেউ আপনার স্বামীকে বাঁচাতে পারবে না।’ চিঠিতে সাক্ষর ছিল গৌরহরি মিশ্রের। প্রযত্নে, রাজাবাজার সায়েন্স কলেজের কেমিক্যাল টেকনোলজি বিভাগের মহুয়া ঘোষ। ঘটনাচক্রে সোনালি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।
সেদিনই হেয়ার স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের করে ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ। সোমবার বালিগঞ্জের বিজন সেতু এলাকা থেকে বিজয়কুমার কয়াল নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পেশায় টাইপিস্ট বিজয় পুলিশি জেরায় জানায়, চিকিৎসক অরিন্দম সেনকে সে-ই খুনের হুমকির চিঠি টাইপ করে দিয়েছিল। সন্ধের মধ্যে রাজা রামমোহন রায় সরণির বাসিন্দা অরিন্দমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। একই সঙ্গে গ্রেফতার করা হয় অরিন্দমের গাড়ির চালক রমেশ সাউকেও।
লালবাজার সূত্রে খবর, পেশায় চিকিৎসক অরিন্দম সেন যাদবপুরের কেপিসি মেডিক্যাল কলেজে কাজ করেন। তিনি গাড়ি চালক রমেশের হাত দিয়ে বয়ান পাঠাতেন বিজয়ের কাছে। বিজয় তা টাইপ করে আবার ফেরত দিতেন রমেশকে। রমেশ সেই চিঠি অরিন্দমের বলে দেওয়া ঠিকানায় পোস্ট করতেন। গত দু’বছর ধরে অরিন্দম এ ভাবেই বিভিন্ন মানুষকে হুমকি চিঠি পাঠিয়ে আসছেন বলে পুলিশের দাবি। গত ২৫ অক্টোবর শরৎ বোস রোডের ডাকঘর থেকে ৭টি এমন হুমকি ভরা চিঠি পাঠানো হয়। তার মধ্যে একটি চিঠি গিয়েছিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় ধৃত চিকিৎসক জানিয়েছেন, তিনি মানসিক চাপে ছিলেন। চাপ কমাতেই তিনি বিভিন্ন মানুষকে হুমকি চিঠি দিতেন কি না খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ২৫ তারিখ সোনালি ছাড়াও হুমকি ভরা চিঠি গিয়েছিল এনআরএস-এর অধ্যক্ষ শৈবাল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ মঞ্জু বন্দ্যোপাধ্যায়, ডিরেক্টর অব মেডিক্যাল এডুকেশন দেবাশিস ভট্টাচার্য প্রমুখের কাছে। বেশ কয়েকটি চিঠিতে প্রেরক হিসেবে যে গৌরহরি মিশ্রের নাম লেখা হয়েছিল, সেই ব্যক্তি অরিন্দমের প্রতিবেশী।
মঙ্গলবারই ধৃত তিন জনকে আদালতে তোলা হবে। পুলিশ তাঁদের হেফাজতে নিয়ে জানার চেষ্টা করবে, আর কাকে এমন হুমকি চিঠি দিয়েছিলেন অরিন্দমরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy