শিশু পাচারের রাজ্য জোড়া জাল ক্রমশ সামনে আসছে।
এ বার পাচারে জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার হলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফলতার একটি নার্সিংহোমের মালিক ও তাঁর ছেলে। যাঁরা এলাকায় তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত। ফতেপুর থেকে শ্যামল বৈদ্য এবং তাঁর স্ত্রী সাবিত্রীকেও শিশু পাচারে জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শুক্রবার রাতে ফলতার নওদা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ‘জীবনদীপ’ নামে ওই নার্সিংহোমে হানা দেয় পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় নার্সিংহোমের মালিক হরিসাধন খাঁ ও তাঁর ছেলে প্রবীরকে। শনিবার ডায়মন্ড হারবার আদালতে বিচারক হরিসাধনকে ১৪ দিন জেলহাজতে এবং প্রবীরকে ১২ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। শনিবার বিকেলে ধরা পড়েন শ্যামল-সাবিত্রী। এ দিন যাঁরা ধরা পড়েছেন, তাঁরা আবার শাসক দলের কর্মী বলে পরিচিত। প্রবীরের স্ত্রী ২০১৩-র পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের প্রতীকে দাঁড়িয়ে হেরে যান।
জলপাইগুড়ির ঘটনার সঙ্গে ফলতার নার্সিংহোমের কোনও যোগ ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। নার্সিংহোমটির কোনও লাইসেন্স নেই বলে জেনেছে পুলিশ। ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সোমনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নার্সিংহোমটি সিল করার জন্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’ শনিবার এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, নার্সিংহোমের চারতলা বাড়ি বাইরে থেকে তালা বন্ধ।
গত বছর ফলতার চাঁদপালা গ্রামের একটি খালপাড়ের পাশের ঝোপ থেকে পুলিশ তিনটি শিশুকে উদ্ধার করেছিল। সন্দেহজনক এক মহিলাকে জেরা করে জানা যায়, ওই তিনটি শিশু তাঁর বাড়িতেই ছিল। যাদের আনা হয়েছিল জীবনদীপ নার্সিংহোম থেকে। ধরপাকড় শুরুর পরে শিশুদের ফেলে দেওয়া হয়।
তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, জীবনদীপ নার্সিংহোমে মূলত কুমারী মায়েদের গোপনে সন্তান প্রসব করানো হতো। সেই শিশুগুলিকেই বিক্রি করে দেওয়া হতো বলে অভিযোগ।