Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Murder

Murder: হাওড়ার ব্যবসায়ী খুন রায়নায়, কাকার সঙ্গে সম্পত্তি নিয়ে বিবাদে হত্যা বলে অভিযোগ

রায়নায় জমি এবং বাড়ি রয়েছে। ওই সম্পত্তি নিয়ে নিহতের কাকা এবং ভাইদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই বিবাদ এবং মামলা মকদ্দমা চলছে।

নিহত সব্যসাচী মণ্ডল।

নিহত সব্যসাচী মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হাওড়া ও বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০২১ ১৬:৪৪
Share: Save:

বড়বাজারের ত্রিপল ব্যবসায়ী খুন হলেন পূর্ব বর্ধমানের রায়নায়। ঘটনায় ওই ব্যবসায়ীর কাকা এবং তাঁর ছেলেদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ উঠেছে। নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বিপুল সম্পত্তি নিয়ে কাকা এবং তাঁর ছেলেদের সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরেই বিবাদ চলছিল। শুক্রবার হাওড়ার শিবপুরের বাসিন্দা ওই ব্যবসায়ী গিয়েছিলেন তাঁর পৈতৃক বাড়ি রায়নায়। সেখানে তাঁকে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ।

সব্যসাচী মণ্ডল (৩৮) নামে ওই ব্যবসায়ী হাওড়ার শিবপুরের নবীন সেনাপতি লেনের বাসিন্দা। তাঁর বাবা দেবকুমার মণ্ডল বড়বাজারের ত্রিপল ব্যবসায়ী। বাবা অসুস্থ হওয়ায় ব্যবসা এবং সম্পত্তির দেখভাল করতেন সব্যসাচী। তিনি দেবকুমারের একমাত্র সন্তান। রায়নার দেরিয়াপুরে পৈতৃক সম্পত্তি রয়েছে সব্যসাচীর। শুক্রবার তিনি তাঁর এক বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন সেখানে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে বাড়ির ছাদে রান্না হচ্ছিল। সেই সময় সব্যসাচীর গাড়ির চালক তাঁকে ছাদ থেকে নীচে নিয়ে ডেকে নিয়ে যান। এর পর সব্যসাচীকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেন তাঁর বন্ধু রাজবীর সিংহ এবং রাঁধুনি পার্থ সান্যাল। তাঁরাই সব্যসাচীকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। সব্যসাচীকে কুপিয়ে এবং গুলি করে খুন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

এই হত্যাকাণ্ডে অভিযোগ উঠেছে সব্যসাচীর কাকা গৌরহরি মণ্ডল এবং তাঁর দুই ছেলে দীনবন্ধু ও সোমনাথের বিরুদ্ধে। সব্যসাচীর বাবার অভিযোগ, সুপারি কিলার দিয়ে ছেলেকে খুন করিয়েছে তাঁর দুই ভাইপো। তাঁর আরও অভিযোগ, সম্পত্তি নিয়ে চরম বিবাদের জেরেই এই ঘটনা ঘটিয়েছেন তাঁর ভাই এবং ভাইপোরা। এই ঘটনায় সব্যসাচীর গাড়ির চালক এবং রাঁধুনি দু’জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। সব্যসাচীর ছ’মাসের একটি শিশুকন্যা রয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে পূর্ব বর্ধমানের এসডিপিও (দক্ষিণ) আমিনুল ইসলাম খান বলেন, ‘‘পুলিশ সব দিক খতিয়ে দেখছে। তদন্ত এগিয়ে চলেছে। সুপারি কিলার দিয়ে খুন করা হয়েছে কি না তা দেখছে পুলিশ।’’ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সিংহরায় বলেন, ‘‘ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে না আসা পর্যন্ত কী ভাবে খুন করা হল তা বলা সম্ভব নয়। তবে মৃতের বাবার অভিযোগের পরিপেক্ষিতে আমরা সব দিকেই নজর রাখছি। সে ভাবেই তদন্ত শুরু হয়েছে।’’ গুলি করা হয়েছে কি না তা তদন্তকারীদের কাছে এখনও স্পষ্ট নয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সুপারি কিলার কাজে লাগিয়েই খুন করা হয়েছে এমনটা ধরে নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।

শিবপুরের নবীন সেনাপতি লেনে একটি বাড়ি ছাড়াও হাওড়া শহরে আরও কয়েকটি বাড়ি রয়েছে সব্যসাচীদের। এ ছাড়া রায়নায় ৮০ বিঘার বেশি জমি এবং আরও একটি বাড়ি রয়েছে। রায়নার ওই সম্পত্তি নিয়ে সব্যসাচীর কাকা এবং তাঁর খুড়তুতো ভাইদের সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরেই বিবাদ এবং মামলা মকদ্দমা চলছে। এর আগে গত ৮ অগস্ট সব্যসাচীর নবীন সেনাপতি লেনের বাড়িতে বোতলে দাহ্য পদার্থ ভরে তাতে আগুন লাগিয়ে ছোড়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। সেই সময় সব্যসাচী অভিযোগ করেছিলেন, ‘‘আমার কাকা এবং কাকার ছেলেরা আমাকে খুনের চেষ্টা করছে। তারা বহু দিন ধরেই এই চেষ্টা করছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder police Businessman Tarpaulin
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE