E-Paper

পোশাক তৈরি করে নামমাত্র দামে বিক্রি, দুঃস্থদের পাশে সিভিক ভলান্টিয়ার দম্পতি

দোকানের উপরে লেখা ‘‘কাউকে বিনামূল্যে জামা কাপড় দেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই। তাই খুব স্বল্পদামে জামা কাপড় বিক্রি করা আমার নেশা।’’

দোকানে নিজেদের তৈরি পোশাক বিক্রি করছেন অমিত সরকার। বিরাটির পশ্চিম নবনগরে।

দোকানে নিজেদের তৈরি পোশাক বিক্রি করছেন অমিত সরকার। বিরাটির পশ্চিম নবনগরে। ছবি: সুদীপ ঘোষ।

কাজল গুপ্ত

শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০২৫ ০৮:২৩
Share
Save

সরু গলি। তার মধ্যে এক চিলতে দোকান। কিন্তু সেই দোকানই মন কেড়েছে বিরাটির বাসিন্দাদের।

দোকানের উপরে লেখা ‘‘কাউকে বিনামূল্যে জামা কাপড় দেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই। তাই খুব স্বল্পদামে জামা কাপড় বিক্রি করা আমার নেশা।’’ দোকানের পোশাকি নাম, ‘গরিবের বাজার’। এই দোকানের আকর্ষণের অন্যতম কারণ, সেখানে মাত্র ৩ টাকা থেকে ৩০ টাকার মধ্যে ছোটদের রকমারি পোশাক মেলে। ছোটদের পোশাকের সম্ভারই দোকানে বেশি। তবে বড়দের কিছু কিছু পোশাকও নামমাত্র মূল্যে বিক্রি হয় সেখানে।

আকর্ষণের অপর কারণ, ভাড়ায় চলা ওই দোকানের পিছনে রয়েছেন এক সিভিক ভলান্টিয়ার দম্পতি। চারদিকে যখন সিভিক ভলান্টিয়ারদের একাংশের বিরুদ্ধে নানা অপরাধের অভিযোগ ওঠে, সেই সময়েই ওই দম্পতির কাজের মধ্যে আশার আলো দেখছেন সকলে। বিরাটির পশ্চিম নবনগর তেঁতুলতলায় বি আর এ সরণিতে রয়েছে নিমতা থানা এলাকায় কর্মরত সিভিক ভলান্টিয়ার অমিত সরকার এবং বারাসতে কর্মরত, তাঁর স্ত্রী মধুমিতা গঙ্গোপাধ্যায়ের ওই দোকান।

ওই দম্পতি জানান, বাজার থেকে ছাঁট কাপড় কিনে নিজেরাই সেলাই করে পোশাক তৈরি করেন তাঁরা। এর পরে ভাড়ায় নেওয়া দোকানটি থেকে সেই পোশাক বিক্রি করেন। দুঃস্থ, আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষদের কাছে সাধ্যের মধ্য়ে পোশাক পৌঁছে দেওয়াই তাঁদের লক্ষ্য। অমিত এবং মধুমিতা জানান, সিভিক ভলান্টিয়ারের কাজ করে যেটুকু বেতন পান, তা দিয়েই তাঁদের সংসার চলে। মধুমিতার মা এবং পক্ষাঘাতগ্রস্ত বোনের দায়িত্বও তাঁদের। তারই মধ্যে এ ভাবে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ভাবনা কী ভাবে এল?

অমিত জানান, ছোটবেলা থেকে আর্থিক প্রতিবন্ধকতা মধ্যে বড় হয়েছেন তিনি। সেই যন্ত্রণারদিনগুলি তিনি ভোলেননি। ব্যবসা নয়, লাভের চিন্তা নয়, কেবল অন্যের কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব করার জন্যই তাঁদের এই প্রয়াস। এর আগে গেঞ্জি কারখানায় কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েই এই প্রচেষ্টা শুরু করেন দু’জনে।

পোশাক বিনামূল্যে না দিয়ে ন্যূনতম বিক্রয় মূল্য রাখার প্রশ্নে অমিত-মধুমিতা জানান, কারও যাতে আত্মসম্মানে আঘাত না লাগে, তাই তাঁরা বিনামূল্যে না দিয়ে সামান্য মূল্যে পোশাক বিক্রি করেন। এতে ক্রেতাদের মনে হবে না যে কেউ তাঁদের দান করছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা জয়ন্ত দাস কিংবা পার্বতী দাসের কথায়, ‘‘সিভিক ভলান্টিয়ার পদে কাজ করেও নামমাত্র মূল্যে পোশাক বিক্রি করছেন ওঁরা। আজকাল এমন কিছু ভাবাই যায় না। ওই দম্পতি অন্ধকারেও আশার আলো দেখাচ্ছেন।’’

নিমতার ওই দম্পতির পাশে এসে দাঁড়িয়েছে পুলিশও। নিমতা থানার আইসি সঞ্জয় কুণ্ডু জানান, অমিত-মধুমিতা ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের তথা রাজ্য পুলিশের গর্ব। তাঁরা আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষদের পাশে দাঁড়াতে যে সামাজিক দায়বদ্ধতার পরিচয় দিচ্ছেন, তা সমাজের কাছে উদাহরণ হয়ে থাকুক। সঞ্জয় জানান, তাঁরাও সাধ্যমতো ওই দম্পতির পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Civic volunteer Birati

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে আপনার সাবস্ক্রিপশন আপনাআপনি রিনিউ হয়ে যাবে

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।