দু’দিন আগেই দেখা গিয়েছিল তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ’-এর ‘বায়ো’তে দলের নাম নেই। শুধু লেখা রয়েছে সাংসদ এবং সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের পরিচয়। যদিও তাঁর ‘এক্স’ হ্যান্ডলে দলীয় পরিচয় ছিল। বিষয়টি নিয়ে দু’দিন আগেই অভিষেকের দফতরে খোঁজ নিয়েছিল আনন্দবাজার অনলাইন। কারণ, তৃণমূলের অন্দরের বর্তমান সমীকরণের নিরিখে অভিষেকের ফেসবুক পেজ থেকে দলের নাম উধাও হয়ে যাওয়া অন্য ধরনের ‘তাৎপর্য’ বহন করে। কিন্তু একই সঙ্গে ‘এক্স’ হ্যান্ডলে ওই ধরনের কোনও বদল না-হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে অন্য সন্দেহ তৈরি হচ্ছিল।
শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার জানা গিয়েছে, ওই ঘটনায় মেটা কর্তৃপক্ষের কাছে নালিশ জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ। অভিষেকের আইনজীবী সঞ্জয় বসু মেটাকে একটি নোটিস পাঠিয়েছেন। যাতে অভিযোগ করা হয়েছে, ডায়মন্ড হারবারের সাংসদের ফেসবুক পেজে তথ্য বদল করা হয়েছে। ফেসবুক পেজে ‘অবাঞ্ছিত গতিবিধি’ হয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
তৃণমূলের নেতা-নেত্রীদের ফেসবুক পেজ এবং এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডল দেখাশোনা করে পরামর্শদাতা সংস্থা আইপ্যাক। গোড়ায় ওই সংস্থার তরফেও অভিষেকের ফেসবুক পেজের একটি অংশ চিহ্নিত করে জানানো হয়েছিল, দলের নাম রয়েছে। তবে সেটি সরাসরি বায়োতে ছিল না। ছিল নীচের দিকে। তাতে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের যে অফিশিয়াল পেজ, তার ‘হাইপার লিঙ্ক’ ছিল। কিন্তু মেটার কাছে সরকারি ভাবে অভিযোগ জানানোর ঘটনা স্পষ্ট করে দিল যে, অদলবদল হয়েছিল।

—নিজস্ব চিত্র।
অভিষেকের ফেসবুক পেজের বায়োতে দু’দিন আগে দলের নাম না থাকলেও তাঁর ‘এক্স’ হ্যান্ডলে তা ছিল। সাধারণত রাজনৈতিক নেতাদের সমাজমাধ্যমের বায়োতে অদলবদল হলে তা নানা ভাবে ‘ইঙ্গিতবাহী’ হয়ে ওঠে। এক সময়ে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ তাঁর বায়ো থেকে দলের নাম সরিয়ে দিয়ে শুধু ‘সমাজকর্মী’ পরিচয় লিখেছিলেন। তা নিয়ে শাসকদলে কম আলোচনা হয়নি। শাসকদলের সাম্প্রতিক সমীকরণের আলোয় অনেকে অভিষেকের ফেসবুক পেজ থেকে দলের নাম সরে যাওয়াকে দেখতে চেয়েছিলেন। যদিও অনেকে এ-ও প্রশ্ন তুলেছিলেন যে, সচেতন ভাবে ফেসবুক পেজ থেকে দলের নাম সরানো হয়ে থাকলে ‘এক্স’ হ্যান্ডলে দলের নামের উল্লেখ রয়ে গেল কী ভাবে? বিষয়টি পরস্পরবিরোধী।
বুধবার মেটা কর্তৃপক্ষের কাছে নালিশ জানিয়েছেন অভিষেকের আইনজীবী সঞ্জয়। বৃহস্পতিবার দেখা যাচ্ছে অভিষেকের ফেসবুক বায়োতে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের পাশাপাশি দলের নামেরও উল্লেখ রয়েছে। মেটাকে পাঠানো নোটিসে লেখা রয়েছে, অভিষেকের শুভাকাঙ্ক্ষীরা তাঁকে জানানোর পরে তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হন। অভিযোগপত্রে মেটাকে আগের এবং পরের ‘স্ক্রিনশট’ দিয়ে দেখানো হয়েছে, কী বদল হয়েছিল।