Advertisement
০৬ মে ২০২৪
Bengal Recruitment Case

শিক্ষা দফতর থেকে উধাও নিয়োগ সংক্রান্ত জরুরি ফাইল, জানানো হল সিবিআইকেও

স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতির ঘটনায় ২০২২ সাল থেকেই শুরু হয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্ত। উঠে এসেছে উচ্চ মহলের একের পর এক কর্তাব্যক্তিদের জড়িত থাকার প্রমাণ। তদন্তের সূত্রেই ফাইল চেয়ে পাঠিয়েছিল সিবিআই।

A file related to West Bengal Recruitment scam is missing

নিয়োগ দুর্নীতি মামলা সংক্রান্ত ফাইল চেয়ে পাঠিয়েছিল সিবিআই। গ্রাফিক— সনৎ সিংহ

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২৩ ২০:৩৭
Share: Save:

নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে জরুরি কিছু ফাইল চেয়ে পাঠিয়েছিল সিবিআই। কিন্তু এর মধ্যে একটি ফাইল সিবিআইকে দিতে পারবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে শিক্ষা দফতর। সিবিআই সূত্রে খবর, তাদের বলা হয়েছে, ওই ফাইলটি শিক্ষা দফতরের কাছে নেই। বেশ কয়েক মাস ধরেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

রাজ্যের শিক্ষা দফতরের এই জবাবে বিস্মিত সিবিআই। নিয়োগ দুর্নীতির মতো তদন্তের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলার ফাইল উধাও হয়ে গেল কী করে, তা নিয়েও জল্পনা শুরু হয়েছে। কর্তৃপক্ষ অবশ্য সিবিআইকে জানিয়েছে, ২০২২ সালেই ওই ফাইল নিখোঁজের বিষয়টি চোখে পড়ে তাঁদের। তার পর এ ব্যাপারে বিধাননগর থানা অভিযোগও দায়ের করা হয়েছিল বলে সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে। যদিও তার পর ওই ফাইল খোঁজার জন্য বিধাননগর পুলিশ কী পদক্ষেপ করেছে, তা স্পষ্ট নয়। শিক্ষা দফতরের তরফে এ ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি।

নিয়োগ দুর্নীতির মামলা সংক্রান্ত যে ফাইলটি নিখোঁজ হয়েছে, সেটি গ্রুপ-সি নিয়োগ সংক্রান্ত ফাইল। রাজ্যের মাধ্যমিক স্তরের স্কুলের শিক্ষা কর্মী পদে নিয়োগ হয় এই বিভাগে। সেই বিভাগে নিয়োগ সংক্রান্ত ফাইলটিই হারিয়েছে, বলে সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে।

রাজ্যের প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগ ঘিরে দুর্নীতির অভিযোগে ২০২২ সাল থেকেই শুরু হয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্ত। সেই তদন্তে উঠে এসেছে উচ্চ মহলের একের পর এক কর্তাব্যক্তিদের জড়িত থাকার প্রমাণ। স্বয়ং রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে জেলে যেতে হয়েছে। জেলবন্দি হয়েছেন বিধায়ক তথা রাজ্যে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যও। প্রাথমিক এবং মধ্য শিক্ষা পর্ষদের নিয়োগ সংক্রান্ত শীর্ষ কর্তারাও গ্রেফতার হয়েছেন। তদন্তকারী কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই এখন জানতে চাইছে, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর থেকেও বড় কোনও মাথা এই দুর্নীতিতে জড়িয়ে কি না।

প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী নিজেই এই জল্পনায় ঘি ঢেলেছেন সম্প্রতি। তদন্তকারীদের জেরায় পার্থ জানিয়েছিলেন, তিনি শিক্ষামন্ত্রী হিসাবে শুধু ফাইলে সই করেছেন। শিক্ষাসচিব তাঁর কাছে যে সমস্ত ফাইল এনে সই করার জন্য দিতেন। সেই সব ফাইলেই সই করতেন তিনি। পার্থের এই বক্তব্যের পর সিবিআই জেরার জন্য ডেকে পাঠিয়েছিল রাজ্যের শিক্ষাসচিব মণীশ জৈনকে। তাঁকে ফাইল এবং অন্যান্য নথি নিয়ে সম্প্রতি দু’দিন ডেকে পাঠানো হয় নিজাম প্যালেসে, কলকাতায় সিবিআইয়ের সদর দফতরে।

এর মধ্যেই দিন কয়েক আগে তদন্তের জন্য শিক্ষা দফতরের কাছ থেকে কয়েকটি ফাইল চেয়ে পাঠিয়েছিল সিবিআই। কিন্তু সিবিআই সূত্রে খবর, সেই সমস্ত ফাইলের মধ্যে একটি হারিয়ে গিয়েছে বলে শিক্ষা দফতরের তরফে জানানো হয়েছে তাদের। স্বভাবতই সেই ফাইলের বিষয়বস্তু নিয়ে নানা জল্পনা ছড়িয়েছে।


(এই প্রতিবেদনটি প্রকাশের সময় লেখা হয়েছিল, জরুরি ফাইল খোয়া গিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের দফতর থেকে। যা ঠিক নয়। ভুলটি গোচরে আসার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা তা সংশোধন করেছি। এই অনিচ্ছাকৃত ত্রুটির জন্য পর্ষদ এব‌ং সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে আমরা আন্তরিক ভাবে ক্ষমাপ্রার্থী।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE