Advertisement
১৯ মে ২০২৪
Jadavpur University Student Death

সেই রাতে ফোন পেয়ে হস্টেলে যান জয়দীপ, পুত্রের গ্রেফতারের খবর শুনেই অসুস্থ মা

যাদবপুরকাণ্ডে পুত্র গ্রেফতার হওয়ার পর রবিবার সকাল সকালই কলকাতার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন বাবা। বেরোনোর আগে তাঁর দাবি, ছেলে জয়দীপ ঘোষ কোনও ভাবেই জড়িত নন।

যাদবপুরকাণ্ডে ধৃত জয়দীপ ঘোষ। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কেতুগ্রাম শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০২৩ ১১:৪৪
Share: Save:

যাদবপুরকাণ্ডে পুত্র গ্রেফতার হয়েছেন শুনেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন মা। বাবা সকাল সকালই কলকাতার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। বেরোনোর আগে তাঁর দাবি, পুত্র জয়দীপ ঘোষ কোনও ভাবেই জড়িত নন।

শনিবার জয়দীপকে গ্রেফতার করেছে যাদবপুর থানার পুলিশ। পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলাও রুজু হয়েছে জামিন অযোগ্য ধারায়। গত ৯ অগস্ট যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের এ-২ ব্লকের তিন তলার বারান্দা থেকে পড়ে গিয়ে প্রথম বর্ষের এক নবাগত পড়ুয়ার মৃত্যু হয়। অভিযোগ উঠেছিল, সেই রাতে পুলিশকে হস্টেলে ঢুকতে বাধা দিয়েছেন হস্টেলের আবাসিকদের একাংশ। তার ভিত্তিতে পৃথক মামলাও রুজু হয়। সেই মামলাতেই গ্রেফতার হন জয়দীপ। পুলিশ সূত্রে খবর, জয়দীপ পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া মহকুমার কেতুগ্রামের বাসিন্দা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী। ‘আন্তর্জাতিক সম্পর্ক’ বিভাগের ছাত্র ছিলেন।

জয়দীপের বাড়ি কেতুগ্রামের কাঁদরা স্টেশনের কাছে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার দু’দিন পর ১২ অগস্ট কাঁদরার বাড়িতে চলে আসেন জয়দীপ। এর পর গত ১৭ অগস্ট, বৃহস্পতিবার তাঁর কাছে একটি নোটিস আসে। নোটিসে অবিলম্বে তাঁকে যাদবপুর থানায় দেখা করার জন্য বলা হয়। চিঠি পেয়েই কলকাতায় চলে যান জয়দীপ। তার পরেই গ্রেফতার হন তিনি। জয়দীপের বাবা বংশীলাল ঘোষ জানান, পুত্রের গ্রেফতারির কথা শুনে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন মা উত্তরা ঘোষ।

গ্রামেই বংশীর মিষ্টির দোকান রয়েছে। ছোটখাটো এই ব্যবসার পাশাপাশি চাষবাসও করেন জয়দীপের বাবা। রবিবার সকালে তাঁর গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, বংশী কলকাতায় যাবেন বলে বাড়ি থেকে বেরোচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ তদন্ত করে দেখুক। আমার ছেলে কোনও ভাবেই জড়িত নয়।’’ জয়দীপরা দুই ভাই। দাদার নাম শুভদীপ ঘোষ। তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র। জয়দীপ যাদবপুরে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে পড়াশোনা করতেন। কাঁদরা স্কুল থেকে পাশ করে প্রথমে বিশ্বভারতী। তার পর যাদবপুর। সেখান থেকে পাশ করেন ২০২১ সালে। বংশী বলেন, ‘‘ছেলে চাকরির পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ও হস্টেলে থাকে না। বিক্রমগড়ে ঘরভাড়া নিয়ে থাকে।’’ বাবার দাবি, ‘‘ঘটনার রাতে আমার ছেলেকে ফোন করে হস্টেলে ডাকা হয়েছিল।’’

পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার দিন রাত ১২টা নাগাদ দু’জন যাদবপুর থানায় আসেন। তাঁরা নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া এবং হস্টেলের আবাসিক বলে পরিচয় দেন। তাঁরা জানান, তার কিছু ক্ষণ আগে এক জন পড়ে গিয়ে আহত হয়েছেন। এর পরেই যাদবপুর থানার পুলিশ হস্টেলের উদ্দেশে রওনা দেয়। গেটের কাছে গিয়ে পুলিশকর্মীরা জানতে পারেন, এক জনকে জখম অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর পরে পুলিশ হস্টেলে ঢুকতে চাইলে তাদের বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যাঁরা পুলিশকে হস্টেলে ঢুকতে বাধা দিয়েছিলেন সেই রাতে, তাঁদের মধ্যেই জয়দীপ অন্যতম। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রেও জানা গিয়েছে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাক্তন সাংসদ তথা বর্তমানে রাজ্যের মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে হেনস্থার ঘটনাতেও জয়দীপের নাম জড়িয়েছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jadavpur University Jadavpur University Student Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE