মাটির বাড়ি ধসে তিন বছরের শিশুর মৃত্যু বাঁকুড়ায়। রবিবার সকালে নিজের বাড়ির উঠোনে খেলা করার সময় একটি দেওয়াল হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে ওই শিশুর শরীরে। গুরুতর জখম অবস্থায় শিশুটিরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। বাঁকুড়ার পাত্রসায়ের ব্লকের ডাংপাড়ায় ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত শিশুর কিরণ লোহার।
চলতি বছর বর্ষার শুরু থেকেই লাগাতার বৃষ্টিতে বাঁকুড়ার নানা জায়গায় বহু মাটির বাড়িই নড়বড়ে হয়ে গিয়েছে। গত কয়েক দিনে বেশ কয়েকটি বাড়ি ভেঙেও পড়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, কিরণের বাড়ির মাটির দেওয়াল গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে হেলে পড়েছিল। সকালে মেয়েটি উঠোনে খেলার সময় সেটি ভেঙে পড়ে।
মৃত শিশুর বাবা বিশ্বনাথ লোহার বলেন, ‘‘আমার স্ত্রী খাবার নিয়ে বার বার মেয়েকে ডাকছিল। কিন্তু মেয়ে খেলায় মশগুল থাকায় খেতে আসেনি। খেলেই যাচ্ছিল। সেই সময় আচমকাই দেওয়ালটি হুড়মুড় করে ওর গায়ের উপর পড়ে যায়।’’ বিশ্বনাথের আক্ষেপ, ‘‘পাকা বাড়ি না থাকায় আমি কয়েক বছর আগে আবাস যোজনায় বাড়ির জন্য আবেদন করেছিলাম। কিন্তু তালিকায় নাম না আসায় পাকা বাড়ি পাইনি। আজ আমার পাকা বাড়ি থাকলে এ ভাবে মেয়েকে হারাতে হত না।’’
দেওয়াল চাপা পড়ে শিশুর মৃত্যুর পরেই এলাকায় ফের আবাস যোজনা নিয়ে তরজায় জড়িয়েছে শাসক এবং বিরোধী শিবির। তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুব্রত দত্ত বলেন, ‘‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঘটনার খবর পেয়েই আমাকে মৃত শিশুটির বাড়িতে যাওয়ার নির্দেশ দেন। অত্যন্ত মর্মান্তিক ঘটনা। আমরা এবং রাজ্যের সরকার সব রকম ভাবে পরিবারটির পাশে আছি। কেন্দ্রীয় সরকার আবাস যোজনায় ইচ্ছেমতো উপভোক্তাদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া এবং দীর্ঘদিন ধরে ওই প্রকল্পে এ রাজ্যের টাকা আটকে না রাখলে আজ পরিবারটিকে এমন দিন দেখতে হত না।’’
সোনামুখীর বিধায়ক দিবাকর ঘরামি বলেন, ‘‘খুব দুঃখজনক ঘটনা। পরিবারকে সমবেদনা জানানোর ভাষা নেই। আবাস যোজনা নিয়ে এ রাজ্যের সরকারের নির্লজ্জ দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের ফল আজ ভুগতে হল পরিবারটিকে। এমনিতে রাজ্য সরকার বলছে, কেন্দ্র টাকা না দিলে রাজ্য নিজের টাকায় সকলকে বাড়ি করে দেবে। আর এমন দুর্ঘটনা ঘটলে তখন কেন্দ্রের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে। তৃণমূলের দ্বিচারিতা মানুষ জেনে গিয়েছে।’’