বহরমপুর কাশীশ্বরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী জুলেখা।
আমি তখন দশম শ্রেণি। আচমকা বিয়ের তোড়জোড় শুরু করে বাড়ির লোক। আমি বলি, আগে পড়াশোনা করে স্বনির্ভর হব। তার পরে বিয়ে। কিন্তু আমার কথা কেউ শোনেনি।
যেমনটা শোনেনি দিদির ক্ষেত্রে। নবম শ্রেণিতে পড়ার সময়ে দিদির ইচ্ছে-অনিচ্ছের মূল্য না দিয়ে তার বিয়ে দেওয়া হয়। ওই অভিজ্ঞতা থেকে শিখেছি, আমার জীবনের সিদ্ধান্ত আমি নিজে নেব। অন্য কেউ নয়। বাড়ির লোককে ফের বুঝিয়ে বলি। ওরা আমাকে না জানিয়ে পাত্র পছন্দ করা থেকে বিয়ের দিন পর্যন্ত ঠিক করে ফেলে। পরে জানতে পেরে বিয়েতে অমত জানাই। তার পর থেকেই চলে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার। দিনের পর দিন আমাকে খেতে পর্যন্ত দেওয়া হতো না। ঘরবন্দি করে রাখত। পরে বিয়েতে রাজি হলে তবেই স্কুলে আসার অনুমতি মেলে। স্কুলে এসেই ‘আমি পড়তে চাই’ বলে প্রধান শিক্ষককে গোটা বিষয়টি জানাই। তিনি তখন আমাকে নবগ্রাম ব্লক প্রশাসনিক কর্তাদের কাছে নিয়ে যান। বিষয়টি বাবা-মায়ের কানে পৌঁছায়। তারা আমার সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চায়নি। পরিবার ছেড়ে আমি স্কুলের দোতলায় একটি ঘরে থেকে পড়াশোনা করে মাধ্যমিক পাশ করি। এখন একটা সরকারি হোমে থাকি। আমার কাছে, বাড়ির থেকে হোম ভাল। এখানে কেউ জোর করে বিয়ে দিয়ে দেয় না। পড়তে বাধা দেয় না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy