Advertisement
E-Paper

চাকরি বাতিল প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে মন্তব্য! মমতাকে আদালত অবমাননার নোটিস পাঠালেন আইনজীবী

এ বিষয়ে ইতিমধ্যেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তাঁর বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী চাকরিহারাদের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তাতে বাধা দিতেই এই আইনি নোটিস।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২৫ ১৫:৪০

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

চাকরি বাতিল প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে ‘মন্তব্য’ করায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আদালত অবমাননার নোটিস পাঠালেন এক আইনজীবী। মুখ্যমন্ত্রীকে আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন দিল্লির আইনজীবী সিদ্ধার্থ দত্ত। নোটিসে তিনি জানিয়েছেন, দেশের শীর্ষ আদালতের রায় সকলকেই মেনে নিতে হবে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী এই রায় কার্যকর করবেন না বলেই দাবি ওই আইনজীবীর। তাঁর হুঁশিয়ারি, মুখ্যমন্ত্রী যদি নিজের মন্তব্যের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা না চান, তা হলে তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করা হবে।

যদিও রাজ্য সরকারের তরফে বার বার আইনি পথে এগোনোরই বার্তা দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও সে কথা বলেছেন। বুধবার এ কথা বলেছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। প্রশাসনিক সূত্রের বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্টের রায় কার্যকর করা হবে না বলে আইনজীবী যে দাবি করেছেন, সে রকম কোনও ইঙ্গিত প্রশাসনের তরফে দেওয়া হয়নি কখনও।

মুখ্যমন্ত্রীকে আইনি নোটিস নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। এক্স হ্যান্ডলে করা পোস্টে তাঁর বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে যাঁরা চাকরিহারা, তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁদের চাকরি কী ভাবে ফিরিয়ে দেওয়া যায়, মুখ্যমন্ত্রী সেই চেষ্টা করছেন। সেই প্রক্রিয়ার গতি কমাতেই এই আইনি নোটিস দেওয়া হয়েছে। কুণালের কথায়, ‘‘জটিলতা তৈরি করে প্রক্রিয়ার গতি কমানোর চক্রান্ত। চাকরিহারারা কী চান? মুখ্যমন্ত্রীর চেষ্টা সফল হোক। আপনাদের চাকরি বাঁচুক। না কি এ সব আইনি জট পাকানোর চক্রান্তকারীরা জটিলতা বাড়াক? অবস্থান নিন আপনারা।’’

এ নিয়ে বিরোধীদেরও বিঁধেছেন কুণাল। তিনি লিখেছেন, ‘‘রাম-বাম ভোটে পারে না, কোর্টে জট পাকায়।’’ কুণালের আরও বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বিচারব্যবস্থায় সম্পূর্ণ আস্থা রাখেন। বিচারপতিদের সম্মান দেন। কিন্তু কোনও রায়ে ন্যায়বিচার না হলে বা বহু মানুষের ক্ষতি হলে, সেই অংশ নিয়ে দ্বিমত পোষণ করে পুনর্বিবেচনার কথা বলেন। এর সঙ্গে আদালত অবমাননার কোনও সম্পর্ক নেই। মনে রাখবেন, বিচারপতির চাকরি ছেড়ে বিজেপির সাংসদ হতে গেলেও সাধারণ মানুষের চোখে নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।’’

২০১৬ সালের এসএসসির সম্পূর্ণ প্যানেল সম্প্রতি বাতিল করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। যার জেরে চাকরিহারা প্রায় ২৬ হাজার জন। এই পরিস্থিতিতে চাকরিহারাদের একাংশকে নিয়ে নেতাজি ইন্ডোরে সভা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে নিজের মতামত জানিয়েছিলেন তিনি। বলেছিলেন, ‘‘আমি এই রায় মানতে পারছি না।’’ তবে এর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী এ-ও বলেছিলেন, ‘‘বিচারব্যবস্থার প্রতি আমার আস্থা আছে। আমি বিচারপতিদের সম্মান করি।’’

মুখ্যমন্ত্রীকে আদালত অবমাননার যে নোটিস পাঠানো হয়েছে, তাতে নেতাজি ইন্ডোরের সভায় মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতার কিছু অংশ তুলে দেওয়া হয়েছে। নোটিসে লেখা হয়েছে, গত ৭ এপ্রিলের ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘কারও চাকরি কাড়ার এই অধিকার কারও নেই। আমাদের প্ল্যান— এ রেডি, বি রেডি, সি রেডি, ডি রেডি আর ই রেডি। এই কথা বলার জন্য আমাকে জেলে, হ্যাঁ, ভরে দেওয়া হতে পারে। কিন্তু আই ডোন্ট কেয়ার (আমি পরোয়া করি না)। আপনারা আপনাদের কাজ করুন। কে আপনাদের আটকাচ্ছে? সুপ্রিম কোর্ট? সে ক্ষেত্রে মনে রাখবেন যা-ই বিকল্প হোক, আমরা করব।’’

আইনি নোটিসে বলা হয়েছে, নেতাজি ইন্ডোরের সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘শিক্ষা ব্যবস্থাকে ভেঙে ফেলার জন্য... একটা চক্রান্ত চলছে... একটা পরিকল্পনা চলছে। ৯, ১০, ১১, ১২-তে যাঁরা শিক্ষক, গেটওয়ে অফ হায়ার এডুকেশন তৈরি করছেন, তাঁরা অন্যদের খাতা দেখছেন, তাঁদের মধ্যে গোল্ড মেডেলিস্ট আছেন। তাঁদের জীবনেও ভাল রেজ়াল্ট ছিল। তাঁদের সবাইকে চোর বলে দিচ্ছেন। সবাইকে অযোগ্য বলে দিচ্ছেন। এই বলার অধিকার আপনাকে কে দিল? আমি সরাসরি চ্যালেঞ্জ করছি।’’

প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই রাজ্যের সরকার পোষিত এবং সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলিতে স্থিতাবস্থা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। রাজ্য সরকারও রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে চলেছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যসচিব পন্থ।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy