ছেলের ছবি হাতে ভেঙে পড়েছেন মা। নিজস্ব চিত্র
দড়ি দিয়ে বাঁধা দুই হাত। পা দু’টো বাঁধা লোহার শেকলে। তাতে তালাও ঝুলছে। ক্রমাগত চলছে কিল, চড়, ঘুসি, লাথি। মাটিতে শুয়ে কাতরাচ্ছেন যুবক। বাসিন্দাদের একাংশ বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন। খবর পেয়ে বাড়ির লোকজন গিয়ে অচেতন অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করান। পরে হাসপাতালেই মৃত্যু হয় প্রতাপ মণ্ডল (২৪) নামে ওই যুবকের। চোর সন্দেহে এ ভাবে পিটিয়ে ওই পরিযায়ী শ্রমিককে খুনের ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের মালিওর ১ পঞ্চায়েতের পিপুলতলা এলাকায়। প্রতাপের বাড়ি লাগোয়া এলাকাতেই। তাঁকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে চোর সন্দেহে পিটিয়ে খুন করা হয় বলে পরিবারের অভিযোগ।
চাঁচলের এসডিপিও শুভেন্দু মণ্ডল বলেন, ‘‘ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এ দিন সন্ধেয় এক জনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে পিপুলতলা এলাকায় একটি বাড়িতে ঢুকে প্রতাপ চুরির চেষ্টা করছিলেন বলে অভিযোগ। হইচই শুরু হতে জড়ো হন প্রতিবেশীরা। তার পরেই বেঁধে শুরু হয় মারধর। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন ছুটে যান। ছেলে চোর, তাই পর দিন সকালে পরিবারকে ১৫ হাজার টাকা দিতে হবে বলেও লিখিয়ে নেওয়া হয়। এর পরে অচেতন অবস্থায় তাঁরা প্রতাপকে হাসপাতালে ভর্তি করান। শনিবার রাতে চাঁচল
সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর।
প্রতাপ নাগপুরে শ্রমিকের কাজ করতেন। বাড়িতে বৃদ্ধ মা-বাবা আর দাদা-বৌদির সংসার। দাদা অবদেশ এলাকাতেই টোটো চালান। দিদি পূর্ণিমা বিবাহিত। মাসখানেক আগে প্রতাপ বাড়ি ফিরেছিলেন। কয়েক দিন বাদেই পড়শি আরও কয়েক জনের সঙ্গে তাঁর নাগপুরে কাজে ফেরার কথা ছিল। মা সঞ্জু মণ্ডল বলেন, ‘‘আমার ছেলে চোর নয়। সন্দেহের বশে ওকে পিটিয়ে মারা হয়েছে।’’
বিজেপির মণ্ডল সভাপতি রূপেশ আগরওয়াল, সিপিএম নেতা জামিল ফিরদৌসরা বলেন, ‘‘এমন বর্বরোচিত ঘটনা কোনও সভ্য সমাজে কাম্য নয়।’’
হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়ক তজমুল হোসেন বলেন, ‘‘অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। দোষীরা যাতে উপযুক্ত শাস্তি পায় সেটা পুলিশকে দেখতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy