Advertisement
০১ মে ২০২৪
wildlife

আফ্রিকার প্রজাতির এক জোড়া নীলকণ্ঠ পাখি ক্যামেরাবন্দি হল দক্ষিণ ২৪ পরগনার গ্রামে!

সাধারণ ভাবে ভারতে তিন প্রজাতির নীলকণ্ঠের দেখা মেলে। এর মধ্যে ইন্ডিয়ান রোলার এবং ইন্দো-চাইনিজ রোলার বছরভরই পশ্চিমবঙ্গে দেখা যায়। উত্তর-পশ্চিম ভারতে পরিযায়ী হয়ে আসে ইউরোপীয়ান রোলার।

A pair of Blue-bellied roller, an African species of bird clicked near Baruipur of South 24 Parganas

নেপালগঞ্জে মেলা সেই আফ্রিকার নীলকণ্ঠের জোড়া। ছবি—ক্ষৌণীশ শঙ্কর রায় এবং সুদীপ্ত সোম।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০২৩ ২০:৩০
Share: Save:

আদতে তারা উত্তর-পূর্ব এবং মধ্য আফ্রিকার বাসিন্দা। সেনেগাল থেকে গণ প্রজাতন্ত্রী কঙ্গো পর্যন্তই গতিবিধি সীমাবদ্ধ। পরিযায়ী প্রজাতি হিসাবেও চিহ্নিত নয় ব্লু-বেলিড রোলার নামের ওই পাখি। কিন্তু নীলকণ্ঠ গোত্রের ওই প্রজাতির এক জোড়াকে সম্প্রতি দেখা গিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার নেপালগঞ্জে! আর তা নিয়েই জল্পনা শহরের পাখিপ্রেমীদের মধ্যে।

হরিদেবপুরের বাসিন্দা সত্যজিৎ দাস মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রথম বার একটি আফ্রিকার নীলকণ্ঠকে ক্যামেরাবন্দি করেছিলেন। কিন্তু ভারতীয় কোনও প্রজাতির নীলকণ্ঠের সঙ্গে মিল খুঁজে না পেয়ে তিনি এলাকায় আর এক পাখি পর্যবেক্ষক কপিল বাগের শরণাপন্ন হন। সত্যজিতের কথায়, ‘‘পাখিটিকে শনাক্ত করার পর বিষয়টি আমি এবং কপিল বিষয়টি আরও কয়েক জনকে জানিয়েছিলাম।’’

তাঁদেরই এক জন, পক্ষী পর্যবেক্ষক সুদীপ্ত সোম বলেন, ‘‘ওই এলাকায় আমরা দু’টি পাখির সন্ধান পেয়েছি। ব্লু-বেলিড রোলারের স্ত্রী এবং পুরুষ একই রকম দেখতে। তাই এরা জোড়া কি না, তা এখনও বলার সময় আসেনি। যদি বাসা বাঁধে এবং প্রজনন করে, তবেই এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে।’’ কপিল জানিয়েছেন, বেশ কয়েক বার ওই এলাকায় গিয়ে দেখেছেন, পরিবেশের সঙ্গে ভাল ভাবে তারা খাপ খাইয়ে নিয়েছে। সাবলীল ভাবে ফড়িং এবং অন্যান্য পতঙ্গ শিকার করে খাচ্ছে।

কিন্তু আফ্রিকার পাখি কী ভাবে এল কলকাতা শহরের উপকণ্ঠে? ‘বার্ডওয়াচার্স সোসাইটি’র সদস্য, পাখি বিশারদ কণাদ বৈদ্য জানিয়েছেন, এই প্রজাতির নীলকণ্ঠ পোষার রেওয়াজ রয়েছে। ভারতেও আইনত ‘বিদেশি পাখি’ হিসাবে এদের পোষায় বাধা নেই। তাঁর কথায়, ‘‘সম্ভবত পাখি দু’টি পোষা অবস্থা থেকে কোনও ভাবে মুক্তি পেয়েছে।’’ তিনি জানান, অতীতেও ‘খাচার পোষা পাখি’ হিসাবে জনপ্রিয় বিদেশি প্রজাতি ‘জাভা স্প্যারো’র ঝাঁক দক্ষিণ ২৪ পরগনার কয়েকটি এলাকায় দেখা গিয়েছে। সে গুলিও নিশ্চিত ভাবে খাঁচা থেকেই ‘মুক্তির ঠিকানা’ খুঁজে নিয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে সম্ভবত পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পেরে তারা হারিয়ে যায়।

কণাদ জানান, সাধারণ ভাবে ভারতে তিন প্রজাতির নীলকণ্ঠের দেখা মেলে। এর মধ্যে ইন্ডিয়ান রোলার এবং ইন্দো-চাইনিজ রোলার বছরভরই পশ্চিমবঙ্গে দেখা যায়। এ ছাড়া, উত্তর-পশ্চিম ভারতে পরিযায়ী হয়ে আসে ইউরোপীয়ান রোলার। কয়েক বছর আগে তাদের একটিকে উত্তর ২৪ পরগনায় দেখা গিয়েছিল। তাঁর কথায়, ‘‘আফ্রিকার এই প্রজাতিটি স্থানীয় জীববৈচিত্রের উপর কোনও প্রভাব ফেলে কি না, তা সমীক্ষা করা প্রয়োজন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE