E-Paper

পাইপ বেয়ে নেমে রক্ষা আগুন থেকে

বটতলা এলাকার বাসিন্দা দাদন সন্ধ্যাবেলা নিজের এক পরিচিতের সঙ্গে দেখা করার উদ্দেশে ঋতুরাজ হোটেলের পাঁচ তলায় গিয়েছিলেন। রাজেশ নামের বছর পঁয়তাল্লিশের ওই ব্যক্তি পেশায় ফিজ়িওথেরাপিস্ট বলে জানিয়েছেন দাদন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৫ ০৯:৩১
রবীন্দ্র সরণির হোটেলে চলছে উদ্ধারকাজ। মঙ্গলবার।

রবীন্দ্র সরণির হোটেলে চলছে উদ্ধারকাজ। মঙ্গলবার। ছবি: সুদীপ ঘোষ।

হোটেলের আগুন থেকে বেঁচে কী করে ফিরলেন বলতে গিয়ে শিউরে উঠছিলেন বছর একান্নর দাদন সিংহ। পাঁচ তলা থেকে পাইপ বেয়ে তিন তলার কার্নিশে পৌঁছন তিনি। সেখান থেকে কিছু না পেয়ে স্তূপীকৃত টিনের উপরে ঝাঁপ মারেন। কোনওমতে রক্ষা পেয়েছেন তিনি। জোড়াসাঁকো থানায় রবীন্দ্র সরণির ঋতুরাজ হোটেলের অগ্নিকাণ্ডের পরে এমনই নানা চিত্র দেখা গেল এলাকায়।

বটতলা এলাকার বাসিন্দা দাদন সন্ধ্যাবেলা নিজের এক পরিচিতের সঙ্গে দেখা করার উদ্দেশে ঋতুরাজ হোটেলের পাঁচ তলায় গিয়েছিলেন। রাজেশ নামের বছর পঁয়তাল্লিশের ওই ব্যক্তি পেশায় ফিজ়িওথেরাপিস্ট বলে জানিয়েছেন দাদন। তিনি গয়া থেকে এসেছিলেন। এই হোটেলে নিয়মিত আসতেন তিনি। এলাকায় পরিচিত ওই ব্যক্তি সন্ধ্যায় কাজ সেরে ফেরার পথে নীচের একটি দোকান থেকে ফুলের মালা কেনেন। ফুলের দোকান থেকে ওই ব্যক্তি আসার খবর পেয়ে পাঁচতলায় তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যান দাদন। রাত ৮টা নাগাদ পাঁচতলায় পৌঁছে ৫১৬ নম্বর ঘরে বেশ কিছু ক্ষণ ধরে ডাকাডাকি করেও ওই ব্যক্তির সাড়া পাননি। ডাকাডাকি করার মধ্যেই দাদন লক্ষ্য করেন হোটেলের লবি ধোঁয়ায় ভরে উঠছে। প্রবল শ্বাসকষ্ট আর ধোঁয়ার মধ্যে তিনি হোটেলের দু’প্রান্তের সিঁড়ি দিয়ে নামার চেষ্টা করতে গিয়ে দেখেন সেখানে আগুনের হল্কা। সঙ্গে সঙ্গে পাঁচ তলার রান্নাঘরের পাশে জানলা ঘুষি মেরে ভেঙে হোটেলের পিছন দিকে বাইরের কার্নিশে বেরিয়ে আসেন তিনি। সেখান থেকে কোনওমতে পাইপ বেয়ে তিনতলার কার্নিশে নেমে আসেন। তার পরে সেখান থেকে লাফ দিয়ে পড়েন নীচে। জমা করা টিনের স্তূপের উপরে পড়ায় তাঁর আঘাত বিশেষ লাগেনি।

কিন্তু, রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করেও রাজেশের খোঁজ পাননি তিনি এবং পরিচিতেরা। ছোট বেলা থেকে শরীরচর্চার অভ্যাস থাকলেও এ ভাবে আগুনের মুখে পড়ে লাফ দিয়ে বেঁচে বেরিয়ে আসাকে দৈব বলে মানছেন তিনি। কতকটা তাঁর মতোই ৪২১ নম্বর ঘর থেকে শাহিল আগরওয়াল এবং রচিত খেমকা সাহস করে বেরিয়ে আসেন। পরে দমকলকর্মীরা তাঁদের উদ্ধার করেন। কিন্তু, রাত পর্যন্ত খোঁজ মেলেনি ৩০১ নম্বর ঘরের বাসিন্দা মুম্বইয়ের শ্যাম পাণ্ডে, ৫০৭ নম্বর ঘরের আকৃতি নওলগেরিয়া, ৪১৯ নম্বর ঘরের রাজেশ কুমার সন্তুকারের মতো পাঁচ জনের।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Accidental Death Kolkata Fire

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy