Advertisement
E-Paper

চোখের আরাম, কিন্তু পেটে ছুঁচোর ডন-বৈঠক

ঝাড়গ্রামে পর্যটন প্রসারে সরকারি উদ্যোগ ক্রমশ বাড়ছে। কিন্তু কী অবস্থা পরিকাঠামোর। অভিযোগ, সে ভাবে পরিবহণ ব্যবস্থা না থাকায় গাড়ি ভাড়া করতে পকেট ফাঁকা হয়ে যায়। পর্যটন কেন্দ্রগুলির কাছে নেই খাবারের দোকান। হস্তশিল্পীদের তৈরি জিনিস বিক্রির জন্যও নেই পর্যাপ্ত স্থায়ী বিপণন কেন্দ্রও। দোলের আগে সামগ্রিক ভাবে কী ভাবছে প্রশাসন? খোঁজ নিল আনন্দবাজার।পর্যটকদের স্বাগত জানিয়ে পরিকাঠামো উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে প্রশাসন।

কিংশুক গুপ্ত

শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৯ ০৩:১০
বেলপাহাড়ির ঘাগরায় পর্যটকের ঢল। ফাইল চিত্র

বেলপাহাড়ির ঘাগরায় পর্যটকের ঢল। ফাইল চিত্র

টানা ঘণ্টা দেড়েক গাড়িতে সফর করে পর্যটন কেন্দ্রে পৌঁছে মাথায় হাত পর্যটকদের। কাছেপিঠে খাবার দোকান নেই। সামান্য মিনারেল ওয়াটারও মেলে না!

পর্যটকদের স্বাগত জানিয়ে পরিকাঠামো উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে প্রশাসন। দফায়-দফায় পর্যটনমন্ত্রী ঝাড়গ্রামের পর্যটনকেন্দ্রগুলি পরিদর্শন করে যাচ্ছেন। পর্যটকদের জন্য সরকারি সহযোগিতায় বেসরকারি উদ্যোগে ‘হোম স্টে’ চালুর আশ্বাসও দেওয়া হচ্ছে সরকারিস্তরে। কিন্তু বাস্তব ঘটনা হল, ঝাড়গ্রাম জেলার পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে কোনও খাবার দোকান নেই। তাই দীর্ঘপথ উজিয়ে বেলপাহাড়ির ঘাগরা, খাঁদারানি, গাডরাসিনি, কাঁকড়াঝোরের মতো এলাকায় গিয়ে সমস্যায় পড়েন পর্যটকরা। সঙ্গে খাবার ও পর্যাপ্ত পানীয় জল না-থাকলে দুভোর্গের অন্ত থাকে না। চলনসই খাবারের দোকান রয়েছে শিলদা ও বেলপাহাড়ি বাজার এলাকায়। সেখানে পরিস্রুত পানীয় জলের বোতল কিনতে পাওয়া যায়। কিন্তু সেটা আগাম জানা না থাকায় পর্যটকরা এলাকায় পৌঁছে গিয়ে সমস্যায় পড়েন। একই রকম ভাবে গোপীবল্লভপুরের ঝিল্লি পাখিরালয়, হাতিবাড়ি নয়াগ্রামের রামেশ্বর, তপোবনেও খাবার দোকান নেই। গোপীবল্লভপুর বাজার, ছাতিনাশোল, কিংবা নয়াগ্রামের খড়িকামাথানির খাবার দোকানই ভরসা।

এলাকার স্বনির্ভর দলগুলিকে দিয়ে পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে ক্যান্টিন চালু করার জন্য বেশ কয়েকবার প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছিল একাধিক বেসরকারি পর্যটন সংস্থাগুল। এরপর সরকারি উদ্যোগে সাঁকরাইল ও গোপীবল্লভপুরে দু’টি স্বনির্ভর দলকে ক্যাটারিংয়ের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। তারপর আর কিছু হয়নি। পর্যটকরাও বলছেন, মরসুমে ঝাড়গ্রামের পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে ক্যান্টিন চালু করা হলে সেগুলি লাভজনক হবে। স্থানীয় বাসিন্দাদের আগ্রহী করে তোলা হলে তাঁরাও বিকল্প রুজির সন্ধান পাবেন। পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ড এ ব্যাপারে পথ দেখিয়েছে। মাওবাদী নাশকতার সঙ্গে আগে যুক্ত থাকলেও পরে সমাজের মূল স্রোতে ফিরে এসেছে—এমন ব্যক্তিদের পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে খাবারের দোকান করে দিয়েছে ঝাড়খণ্ড পুলিশ-প্রশাসন। এ ক্ষেত্রে সাফল্যও মিলেছে।

এলাকাবাসীর দাবি, স্থানীয়দের পক্ষে খাবার দোকান করার মতো পুঁজি নেই। তাই সরকারি সহায়তা বা অনুদান পাওয়া গেলে অনেকেই আগ্রহী হতেন। বাইরের সংস্থাগুলি ঝাড়গ্রামের পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে খাবার দোকান করার জন্য বিনিয়োগের ঝুঁকি নেয় না। কারণ, ঝাড়গ্রামের পর্যটন মরশুম কেন্দ্রিক। শীতের মরসুম এবং দোলের সময়টা বাদ দিলে অন্য সময়ে সে ভাবে পর্যটকদের ভিড় হয় না। যদিও ঝাড়গ্রামের একটি পর্যটন সংস্থার কর্তা সুমিত দত্ত , একটি অতিথিশালার কর্ত্রী দেবযানী কর্মকার বলছেন, ‘‘পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে সরকারি ভাবে অনুদান দিয়ে খাবার দোকা‌ন চালু করতে সহায়তা করা হলে এলাকার বেকার যুবক-যুবতীরা নিশ্চয়ই আগ্রহী হবেন। তাতে পর্যটক ও এলাকাবাসী উভয়পক্ষই উপকৃত হবেন।’’ ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আয়েষা রানি বলেন, ‘‘স্বনির্ভর দলগুলিকে ক্যাটারিং ট্রেনিং দিয়ে পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে খাবার দোকান চালু করতে উদ্যোগী হব। স্থানীয় গ্রামবাসীরা ওই দোকানগুলি চালিয়ে উপকৃত হবেন।’’

Tourist Spot Jhargram Tourism
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy