Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
school dropouts

Student Marriage: ‘ফার্স্ট গার্ল’ কই, সে তো এখন নতুন বৌ, বর তারই সহপাঠী

 তখন সহপাঠীদের থেকে ঠিকানা নিয়ে মেয়েটির বাড়িতে পৌঁছে যান তাঁরা। তখনই জানা যায়, গ্রামেই বিয়ে হয়েছে মেয়েটির। সে এখন নতুন বৌ। 

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

অভিজিৎ সাহা
কমলাবাড়ি (মালদহ) শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২১ ০৫:২০
Share: Save:

স্কুল খুললেও ক্লাসে গরহাজির ‘ফার্স্ট গার্ল’। এমনকি, মাধ্যমিকের টেস্টেও তার দেখা নেই। তখন আর চুপ করে বসে থাকতে পারেননি শিক্ষকেরা। খোঁজ নিতে যান সেই ছাত্রীর বাড়িতে। কিন্তু বাড়ি নয়, মেয়েটির দেখা মিলল শ্বশুরবাড়িতে। বর তারই সহপাঠী। শিক্ষকরা বোঝানোর পরে পরীক্ষায় বসছে মালদহের কমলাবাড়ি হাইস্কুলের দুই ছাত্রছাত্রীই। কিন্তু একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে, ঘরে ঘরে যদি এই অবস্থা হয়, তা হলে মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স ১৮ থেকে বাড়িয়ে ২১ বছর করলে লাভ হবে কি? শিক্ষকরা দাবি করেছেন, আইন তৈরির পাশাপাশি নাবালিকা বিয়ে রোধে ঢালাও প্রচারও জরুরি।

শহর থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরেই কমলাবাড়ি হাইস্কুল। মাধ্যমিকে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১৮০। করোনা আবহে স্কুল খুললেও ক্লাসে গরহাজির ছিল অধিকাংশ পড়ুয়াই। সেই তালিকাতেই ছিল ক্লাসের ফার্স্ট গার্লও। এক শিক্ষক বলেন, “স্কুল বন্ধের সময়ে অ্যাক্টিভিটি টাস্ক নিয়মিত জমা দিত মেয়েটি। তাই ক্লাসে আসছে না দেখে কিছু মনে হয়নি। কিন্তু টেস্টেও না আসায় সন্দেহ হয়।’’

তখন সহপাঠীদের থেকে ঠিকানা নিয়ে মেয়েটির বাড়িতে পৌঁছে যান তাঁরা। তখনই জানা যায়, গ্রামেই বিয়ে হয়েছে মেয়েটির। সে এখন নতুন বৌ।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক মহম্মদ মতিউর রহমান বলেন, “মেয়েটিকে নিয়ে আমরা যথেষ্ট আশাবাদী। কারণ, পঞ্চম শ্রেণি থেকেই সে ক্লাসের ফার্স্ট গার্ল। পড়াশুনোয় ভাল সে। স্কুল বন্ধ থাকায় তাদের বিয়ে নিয়ে আমরা কোনও তথ্য পাইনি। তাই বিয়েটা ঠেকাতে পারেনি। তবে ফের যাতে পড়ার সুযোগ পায় মেয়েটি, সেই চেষ্টাই করেছি।’’

মেয়েটি নিজে শিক্ষিকা হতে চায়। তার কথায়, ‘‘বাড়ির লোকেরা বিয়ে ঠিক করেছিল।’’ সহপাঠী স্বামীর দাবি, ‘‘আমরা পড়াশুনো করব। দু’জনে একসঙ্গে স্নাতক হব।’’

মেয়েটির বাবা ডেকরেটার্সের কাজ করেন। তিনি বলেন, “লকডাউনে ব্যবসাপাতি ছিল না। পাঁচ ছেলেমেয়েকে নিয়ে সমস্যায় ছিলাম। ভুল করছি
জেনেও ভাল সম্বন্ধ পাওয়ায় গ্রামেই মেয়ের বিয়ে দিয়েছি।” ছাত্রীর শ্বশুর বলেন, “আমিই ছেলে-বৌমাকে নিয়মিত মোটরবাইকে করে স্কুলে দিয়ে আসছি।”

করোনা আবহে এমন ঘটনা যে জেলা জুড়ে হয়েছে, তা অবশ্য মেনে নিচ্ছেন প্রশাসনের কর্তারা। নাবালিকার বিয়ে রোধে প্রচারে এর পর থেকে আরও জোর দেওয়া হবে ও সচেতনতা জারি করা হবে বলে জানিয়েছেন মালদহের অতিরিক্ত জেলাশাসক (শিক্ষা) শম্পা হাজরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

school dropouts Malda
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE