E-Paper

স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষক চাই, বিজ্ঞপ্তি-বিতর্ক

জেলা ও রাজ্য স্তরের বহু সংগঠনই এই বিজ্ঞপ্তিকে তুলে ধরে রাজ্যে করুণ শিক্ষার হাল সামনে আনতে চাইছেন। রাজনৈতিক দলগুলিও এই প্রসঙ্গে রাজ্য সরকারকেই দুষছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:৪১
(বাঁ দিকে) রাজনগর হাই স্কুলের ভবন এবং জারি করা সেই বিজ্ঞপ্তি (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) রাজনগর হাই স্কুলের ভবন এবং জারি করা সেই বিজ্ঞপ্তি (ডান দিকে)। — নিজস্ব চিত্র।

বীরভূমের উচ্চ-মাধ্যমিক স্তরে স্কুলে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও শিক্ষা বিষয় পড়াশোনার অনুমোদন থাকলেও শিক্ষকের অভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছে এই দু’টি বিষয়ের পঠনপাঠন। পড়ুয়াদের স্বার্থে বিনামূল্যে স্বেচ্ছা শিক্ষাদানে আগ্রহীদের আবেদন করতে বলে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের রাজনগর হাই স্কুলে। এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয়েছে বিতর্ক।

জেলা ও রাজ্য স্তরের বহু সংগঠনই এই বিজ্ঞপ্তিকে তুলে ধরে রাজ্যে করুণ শিক্ষার হাল সামনে আনতে চাইছেন। রাজনৈতিক দলগুলিও এই প্রসঙ্গে রাজ্য সরকারকেই দুষছে। তৃণমূলপন্থী শিক্ষক সংগঠনের দাবি, ভুল করে বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে, ভুল শুধরে নেওয়া হবে।

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগেই উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে পঠনপাঠনের অনুমোদন পায় রাজনগর হাই স্কুল। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি মিলিয়ে ৩৭০ জন পড়ুয়া আছে। স্কুলটি যে বিষয়গুলির অনুমোদন পেয়েছিল, সে সবের শিক্ষক ছিলেন স্কুলে। কিন্তু ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে স্কুলের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক অবসর নেন। স্কুলের এক ইতিহাসের শিক্ষকের শিক্ষা বিষয়েও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকায় তিনিই উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষা বিষয়টি পড়াতেন। কিন্তু ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে তিনিও অবসর নেন। এর পর থেকেই স্কুলে দু’টি বিষয়ের পঠনপাঠনই কার্যত বন্ধ। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে পড়ুয়াদের চাহিদার কারণে বিষয় দু’টিতে পড়ুয়াদের রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হলেও স্কুলে গত বছর এই বিষয় দু’টির কোনও পঠনপাঠন হয়নি। সম্পূর্ণ গৃহশিক্ষকতার উপরে নির্ভর করেই পড়াশোনা করেছে পড়ুয়ারা।

এ বছরও পড়ুয়ারা রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও শিক্ষা বিষয় নিয়ে ইতিমধ্যেই এই স্কুলে পড়ার আগ্রহ জানিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পড়ুয়াদের গৃহশিক্ষকের ভরসায় যেন না থাকতে হয় তার জন্যই গত শনিবার একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কৌশিক দত্ত। আশেপাশের এলাকার কোনও শিক্ষিত যুবক বা যুবতী এই দু’টি বিষয়ে স্বেচ্ছায় শিক্ষাদানে আগ্রহী হলে তাঁদের স্কুলে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। কৌশিক দত্ত বলেন, “শুধুমাত্র পড়ুয়াদের স্বার্থের কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

এই বিজ্ঞপ্তি নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। এবিটিএ-র জেলা সম্পাদক আশিস বিশ্বাস বলেন, “এক দশক ধরে কোনও নিয়োগ না হওয়ায় সব জায়গায় একই পরিস্থিতি। রাজনগর হাই স্কুলের ঘটনা একটি উদাহরণ মাত্র। নিয়োগ না হওয়া, উৎসশ্রী-র মাধ্যমে বদলি— এ সবের ফলে গ্রামীণ স্কুলগুলি এখন শিক্ষক সঙ্কটে ধুঁকছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে কোনও অন্যায় নেই।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

school Birbhum Teachers

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy