E-Paper

সিঙ্গুরের ‘বন্ধ্যা’ জমিতে কারখানার দাবিতে আন্দোলন

ঘটনাচক্রে শুক্রবারই ছিল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের শেষযাত্রা। আর সে দিনই সিঙ্গুরের নতুন ওই কমিটি আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিল।

দীপঙ্কর দে

শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০২৪ ০৭:৩৫
সিঙ্গুরের সেই কারখানা।

সিঙ্গুরের সেই কারখানা। —ফাইল চিত্র।

টাটাদের গাড়ি কারখানার জন্য জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে এক সময়ে তাঁরা আন্দোলন করেছিলেন। এ বার সিঙ্গুরের সেই ‘বন্ধ্যা’ জমিতে শিল্প ফেরানোর দাবিতে পথে নামতে চলেছেন সেই আন্দোলনকারীদেরই একাংশ। ইতিমধ্যে তাঁরা ‘সিঙ্গুর বন্ধ্যা জমি পুনর্ব্যবহার কমিটি’ গড়েছেন। আগামী ৩০ অগস্ট থেকে পথে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হওয়ার কথাও ভেবেছেন তাঁরা।

ঘটনাচক্রে শুক্রবারই ছিল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের শেষযাত্রা। আর সে দিনই সিঙ্গুরের নতুন ওই কমিটি আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিল। ২০১৬ সালের ৩১ অগস্ট সুপ্রিম কোর্ট সিঙ্গুরের জমি চাষিদের ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। আর মাত্র কয়েক দিন পরে তার ৮ বছর পূর্ণ হবে। ওই দিনই আন্দোলন শুরু হবে বলে কমিটি সূত্রের খবর।

‘ইচ্ছুক-অনিচ্ছুক’ নির্বিশেষে বহু চাষি এই আন্দোলনে যোগ দেবেন বলে কমিটির নেতাদের দাবি। কমিটিতে একাধিক নেতা আছেন, যাঁরা মমতার নেতৃত্বে সিঙ্গুর কৃষিজমি বাঁচাও আন্দোলনের সামনের সারিতে ছিলেন। তাঁদেরই এক জন দুধকুমার ধাড়া। তিনি বলেন, ‘‘দেখতে দেখতে আট বছর কেটে গেল। সিঙ্গুরের জমিতে না হচ্ছে চাষ, না হল শিল্প। কয়েক একর জমি চাষযোগ্য অবস্থায় নেই। চাষিদের মত নিয়ে সরকার ওই অংশে কারখানা তৈরি করতে পারে। নতুন কমিটির তরফে সরকারকে এই প্রস্তাবই দেওয়া হবে।’’ তিনি জানান, যে অংশে চাষ সম্ভব, অথচ চাষযোগ্য করা হয়নি, সেই কাজও দ্রুত করার দাবি জানানো হবে।

আট বছর আগে যখন চাষিদের জমি ফিরিয়ে দিতে বলে সুপ্রিম কোর্ট, তখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তা চাষযোগ্য করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সেই মতো কাজও শুরু করে প্রশাসন। কিন্তু এখনও ওই জমির একাংশে চাষ হচ্ছে না। কৃষিজমি আন্দোলনের অন্যতম মুখ মহাদেব দাস বলেন, ‘‘বর্তমান
সরকার পুরো জমি চাষযোগ্য করে ফেরত দেয়নি। জমিতে আরও অনেক সমস্যা রয়েছে।’’

দুধকুমার ইঙ্গিত দেন, সে জন্যই তাঁরা বিকল্পের খোঁজে নামছেন। তিনি জানান, মিটিং-মিছিল করে চাষিদের মত নেওয়া হবে। বিশিষ্টদের মতও শোনা হবে। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘আমরা জমি আন্দোলন করলাম। সরকার পরিবর্তন হল। কিছু মানুষ এর সুবিধা ভোগ করছেন। কিন্তু সিঙ্গুরের কৃষকদের কিছু হল না।’’

এ নিয়ে সিঙ্গুরের বিধায়ক তথা মন্ত্রী বেচারাম মান্নার প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তিনি ফোন ধরেননি। মেসেজের উত্তর দেননি। তৃণমূলের হুগলি-শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা চাঁপদানির বিধায়ক অরিন্দম গুঁইন বলেন, ‘‘কে বা কারা কিসের কমিটি গড়েছে, আমি জানি না। সিঙ্গুর বড় ব্যাপার। আগে খোঁজ নেব। তার পরে মন্তব্য করব।’’

সিপিএমের হুগলি জেলা সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ বলেন, ‘‘চাষযোগ্য নয়, এমন জমিতে শিল্প গড়ে উঠলে ভাল হবে। তবে শিল্প গড়ে তোলার মতো মনোভাব এই সরকারের নেই।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Singur Protest Singur Factory

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy