ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা এসআইআরের এনুমারেশন ফর্ম (গণনাপত্র) পূরণ করবেন না বলে আগেই জানিয়েছিলেন তাঁরা। এ বার দেশের নাগরিকত্ব ছাড়ার দাবি জানিয়ে ‘সমাজবাদ অন্তর্রাষ্ট্রীয় মাঝি সরকার’-এর দেওয়া পরিচয়পত্র নিয়ে সোমবার বাঁকুড়ার রানিবাঁধ ব্লক অফিসে হাজির হলেন জনা পঞ্চাশেক আদিবাসী। একই কথা বলে পুরুলিয়ার বান্দোয়ান ব্লকের কুকড়ুডাবর গ্রামের আট জনও গণনাপত্র পূরণ করেননি বলে দাবি।
রানিবাঁধের বিডিও অনীশা যশ জানান, প্রশাসন গণনাপত্র পূরণের জন্য সকলকে বোঝানোর চেষ্টা করছে। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারির কথায়, “আমরা সকলের ভুল ভাঙানোর চেষ্টা চালাচ্ছি। কারা তাঁদের প্ররোচিত করছেন, তারও খোঁজ চলছে।” এ দিন বিএলও-সহ প্রশাসনের আধিকারিকেরা কুকড়ুডাবর গ্রামে গিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলেছেন।
প্রশাসন সূত্রে খবর, রানিবাঁধ ব্লকের রাওতোড়া, গোবিন্দশোল, ভেদুয়াশোলের শতাধিক বাসিন্দা গণনাপত্র পূরণ করেননি। তাঁরা ‘সমাজবাদ অন্তর্রাষ্ট্রীয় মাঝি সরকার’-এর নাগরিকত্ব নিতে চান বলে জানিয়েছেন। ব্লক অফিসে হাজির সন্তোষ মান্ডি বলেন, “মাঝি সরকারই প্রকৃত উন্নয়ন করবে। ভোটার কার্ড, আধার স্বেচ্ছায় জমা দিয়ে সেখানে নাম লিখিয়েছি।”
তাঁর আরও দাবি, আধার, ভোটার কার্ড জমা দিয়ে মাঝি সরকারের ঘোষণাপত্র পূরণ করলেই পরিচয়পত্র মিলবে। জেলার প্রায় দু’শো জন ইতিমধ্যে পরিচয়পত্র নিয়েছেন। ওড়িশার ময়ূরভঞ্জে মাঝি সরকারের সদর দফতরে গিয়েছিলেন জানিয়ে গোবিন্দশোলের বাসিন্দা মহন্ত হেমব্রম বলেন, “মাঝি সরকারের ‘নাগরিক’ হলে বাস, ট্রেন, বিমানের ভাড়া লাগবে না। জমি-জায়গার করও মাফ হয়ে যাবে।”
অল ইন্ডিয়া মাঝি পারগানা মান্ডোয়ার পশ্চিমবঙ্গ পনৎ পারগাণা ধনেশ্বর হাঁসদা জানান, কয়েক বছর আগে ঝাড়খণ্ডের একটি আদিবাসী গ্রামেও বাসিন্দাদের ভুল বুঝিয়ে অসাংবিধানিক ‘পাত্থর গাড়ি’ আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা হয়েছিল। ইন্ধনদাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় প্রশাসন। ধনেশ্বর বলেন, “রানিবাঁধেও যাঁরা নিরীহ আদিবাসীদের ভুল বোঝাচ্ছেন, তাঁদের অবিলম্বে চিহ্নিত করে প্রশাসন ব্যবস্থা নিক।” তাঁর বার্তা, ওই নামে কোনও সংগঠন নেই। সবাই এসআইআর প্রক্রিয়ায় যোগ দিন। এসআইআরে সকলের যোগদান আবশ্যক বলে মনে করিয়েছেন ভারত জাকাত মাঝি পারগাণা মহলের পুরুলিয়া জেলা পারগানা রতনলাল হাঁসদাও।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)