Advertisement
E-Paper

‘আমার হাতটা আর নেই গো’

কচুয়ায় বৃহস্পতিবার রাতে পদপিষ্ট হয়ে জখমদের মধ্যে পৌষী ছাড়াও আরও আট জনকে প্রাথমিক ভাবে নিয়ে আসা হয় ন্যাশনাল মেডিক্যালে।

শিবাজী দে সরকার ও নীলোৎপল বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০১৯ ০১:০৭
অঘটন: হাতের আঙুলে গুরুতর আঘাত নিয়ে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পৌষী মণ্ডল। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

অঘটন: হাতের আঙুলে গুরুতর আঘাত নিয়ে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পৌষী মণ্ডল। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

হাসপাতালের লিফটের সামনে স্ট্রেচারে বসে মহিলা। চোখ-মুখ উদ্‌ভ্রান্ত। মাটিতে বসা আরও তিন জন মহিলা তাকিয়ে তাঁর দিকে। স্ট্রেচারের পাশেই বিস্কুট আর জলের বোতল হাতে দাঁড়িয়ে স্বামী। বোতলটা মুখের কাছে এগিয়ে দিতেই মহিলা চিৎকার করে উঠলেন, ‘‘আমার হাতটা আর নেই গো! কত লোক যে হাতটা মাড়িয়ে গেল!’’ স্বামী আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেও পারলেন না।

কয়েক মিনিট পরেই চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে মহিলার স্বামী লক্ষ্মণকে বেরিয়ে যেতে দেখা গেল। শুধু বললেন, ‘‘ডাক্তারবাবুরা বলেছেন, ওর আঙুল বাদ যাবে। এত লোক মাড়িয়েছে যে, সেটার আর কিছু নেই!’’ বছর বত্রিশের ওই মহিলার নাম পৌষী মণ্ডল। হাসনাবাদ থেকে তিনিও বৃহস্পতিবার গিয়েছিলেন কচুয়া ধাম দর্শনে। হাতে রক্তাক্ত ব্যান্ডেজ নিয়ে শুক্রবার তাঁর ঠাঁই হয়েছিল ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।

কচুয়ায় বৃহস্পতিবার রাতে পদপিষ্ট হয়ে জখমদের মধ্যে পৌষী ছাড়াও আরও আট জনকে প্রাথমিক ভাবে নিয়ে আসা হয় ন্যাশনাল মেডিক্যালে। আহতদের সকলকেই প্রথমে ইমার্জেন্সি বিল্ডিংয়ের ওল্ড ক্যাজুয়ালটি ব্লকে রাখা হয়েছিল। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় বসিরহাটের বর্ষা বিশ্বাসকে আইসিইউ-এ সরানো হয়। ওই ব্লকেই মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি বর্ষার পিসি টুম্পা বিশ্বাস। রয়েছেন হাওড়ার পাঁচলার বাসিন্দা নমিতা সর্দার নামে আর এক মহিলাও। তবে রামকৃষ্ণ দাস, প্রতিমা সরকার ও নীলা সরকার নামে তিন জনকে চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: কচুয়ায় লোকনাথ মন্দিরে মৃত পাঁচ, দায় কার, শুরু হয়েছে চাপান-উতোর

লিফটের সামনে পৌষীর স্ট্রেচার পেরিয়ে ওয়ার্ডের ঘরে ঢুকে দেখা যায়, নমিতা কাঁদছেন। শয্যায় শুয়েই বললেন, ‘‘প্রতি বারের মতো এ বারও পাড়ার সকলের সঙ্গে কচুয়া গিয়েছিলাম। এমন বিপদ হবে ভাবিনি। তবে ঠাকুর প্রাণটা বাঁচিয়েছেন।’’ টুম্পা কথা বলার অবস্থায় নেই। তাঁর এক আত্মীয় বললেন, ‘‘মেয়েটা কথাই বলছে না। আমি এ বার যেতে বারণ করেছিলাম। তবু গেল!’’

হাসপাতালের সুপার সন্দীপ ঘোষ বলেন, ‘‘সকাল পৌনে আটটা নাগাদ আহতদের আসা শুরু হতেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চিকিৎসা শুরু করেছি আমরা। প্রায় সকলেরই মাথায় চোট ছিল। অনেককে সুস্থ করে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকিদেরও দ্রুত সুস্থ করে তোলা হবে।’’

Accident Kachua Injury Stampede Loknath Temple
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy