—প্রতীকী ছবি।
গ্রামে সালিশি সভা বসিয়ে সোনার হার চুরিতে দোষী ঠাওরানো হয়েছিল এক মহিলাকে। অভিযোগ, তার পরে স্থানীয় একাধিক তৃণমূল নেতার উপস্থিতিতে গণপিটুনির ফরমান জারি হয়। কয়েকশো লোকের সামনেই এক সিভিক ভলান্টিয়ারের নেতৃত্বে ওই মহিলাকে বিবস্ত্র করে ধানের বস্তায় ভরে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
রবিবার রাতে পূর্ব মেদিনীপুরের একটি গ্রাম থেকে এই ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে অচেতন অবস্থায় মহিলাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করায়। অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়েছে। মহিলার পরিজন আতঙ্কে গ্রামছাড়া। চুরির অভিযোগ যারা এনেছিল, তাদের বাড়িতেও এখন তালা ঝুলছে।
আর জি কর কাণ্ডের প্রেক্ষিতে নারী সুরক্ষা নিয়ে যখন তোলপাড় চলছে, তখন এমন একটি ঘটনায় শাসকদলের নেতা থেকে পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ারের নাম জড়ানোয় শোরগোল পড়েছে। তবে সোমবার রাত পর্যন্ত কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়নি। পুলিশও কাউকে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে গ্রেফতার করেনি। তবে স্থানীয় মহকুমা পুলিশ আধিকারিক দেবীদয়াল কুণ্ডু স্বীকার করেছেন, ‘‘আক্রান্ত মহিলাকে রাতে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।’’
ঘটনায় জড়িয়েছে রাজনীতিও। যে গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে, সেখানে দু’টি গ্রাম সংসদ রয়েছে। আক্রান্ত মহিলার বাড়ি যে সংসদে, সেখানে গত পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপি জিতেছে। আর যে পরিবারের তরফে সোনার হার চুরির অভিযোগ করা হয়েছিল, তাদের বাড়ি অন্য সংসদে। সেখানে জিতেছে তৃণমূল। নিগৃহীত মহিলা এ দিন হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে বলেন, ‘‘সালিশি সভায় বলেছিলাম ‘আমি চুরি করিনি’। কেউ শোনেনি। বরং সিভিক ভলান্টিয়ার ও তৃণমূলের নেতারা আমাকে বস্তায় ঢুকিয়ে জলে ফেলে দিতে বলেন। শেষে তা না করে কাপড় খুলে বস্তায় ঢুকিয়ে শুরু হয় গণপিটুনি। তার পরে কিছু মনে নেই।’’
তৃণমূলের জেলা সভাপতি পীযূষকান্তি পণ্ডার কথায়, ‘‘এটা সামাজিক অপরাধ। পুলিশকে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’’ জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি প্রাণতোষ আচার্যের আশ্বাস, ‘‘দলের তরফে আক্রান্ত মহিলার পরিবারকে সব রকম সাহায্য করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy