শ্রমিক মহল্লায় চোলাই বিক্রির প্রতিবাদ করায় গুলি করে খুনের চেষ্টা হল চন্দননগরের গোন্দলপাড়া চটকলের এক শ্রমিককে। রবিবার বিকেলের ঘটনা। সুরজবলী চৌধুরী নামে ওই শ্রমিক তখন চটকলের গেটের সামনে একটি দোকানে চা খাচ্ছিলেন। দুষ্কৃতীরা তাঁকে গুলি করে পর পর দু’টি বোমা ফাটিয়ে চম্পট দেয়। সুরজবলীকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে এক ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচারের পরে তাঁর বুকের বাঁ দিক থেকে গুলিটি বের করেন চিকিৎসকেরা।
হুগলির পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরী জানান, এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ওই শ্রমিক মহল্লারই বাসিন্দা অলোক যাদব। তার নামে থানায় চোলাই বিক্রি, চুরি, ছিনতাই-সহ নানা অপরাধমূলক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ঘটনার পরে সে এলাকা ছেড়ে পালায়। তার খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অলোক আগে ওই চটকলেরই শ্রমিক ছিলেন। একটি খুনের ঘটনায় তার নাম জড়িয়ে যাওয়ায় বছর দুয়েক আগে চটকল কর্তৃপক্ষ তাকে বরখাস্ত করেন। পরে অবশ্য অলোক সেই মামলা থেকে বেকসুর খালাস পায়। কিন্তু সে এলাকায় চুরি-ছিনতাই এবং চোলাই বিক্রি শুরু করে বলে অভিযোগ। অলোককে কয়েকবার গ্রেফতারও করে পুলিশ। কিন্তু জামিন পেয়ে সে ফের অপরাধমূলক কাজকর্ম এবং লুকিয়ে চোলাই বিক্রিও চালাতে থাকে বলে অভিযোগ। চটকলের ‘বিম’ বিভাগের শ্রমিক বছর বত্রিশের সুরজবলী স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে এর প্রতিবাদ করতেন।
এ দিনের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সুরজবলীর সঙ্গে অলোক এবং তার দুই শাগরেদের প্রথমে বচসা হয়। অলোকই গুলি চালায়। রক্তাক্ত অবস্থায় সূরযবলি হেঁটেই বাড়ি ফেরার চেষ্টা করেন। কিন্তু কিছুটা এগিয়েই লুটিয়ে পড়েন। হাসপাতালে সুরজবলী বলেন, ‘‘এলাকার ছেলেমেয়েদের কথা ভেবে আমি অলোককে মদ বিক্রি করতে বারণ করতাম। সেই আক্রোশেই ও আমাকে খুন করতে চেয়েছিল।’’ সুরজবলীর মা মনোরমাদেবী বলেন, ‘‘ছেলে কাজ নিয়েই থাকত। মদ বিক্রির প্রতিবাদ করার জন্য শ্রমিকদের একজোট করেছিল। তাই ওর উপরে বদলা নেওয়া হল।’’
শ্রমিকেরাও জানান, কয়েক মাস ধরেই অলোক যে ভাবে এলাকায় চোলাই বিক্রি করছিল, তা মানতে পারছিলেন না সুরজবলী। প্রতিবাদ করতেন। থানাতেও যান তিনি। সে জন্যই তাঁর উপরে হামলা হল বলে মনে করেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy