E-Paper

‘নিস্পৃহতা’ ছেড়ে মমতার সঙ্গে বৈঠকে সেনাপতি অভিষেক, কী কী বিষয়ে আলোচনা দু’জনের মধ্যে?

দলীয় সূত্রে খবর, যে সব বিষয়ে দু’জনের মধ্যে সম্পর্ক ‘শীতল’ হয়ে পড়েছিল, অল্প সময়ের মধ্যেই সেগুলি সম্পর্কে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক স্তরে সিদ্ধান্ত নেবে তৃণমূল কংগ্রেস।

রবিশঙ্কর দত্ত

শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০২৪ ০৮:১৫
(বাঁ দিকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(ডান দিকে)। —ফাইল ছবি।

সঙ্কটের সময়ে ‘বরফ’ গলছে সম্পর্কের।

আর জি কর হাসপাতালের ঘটনাপ্রবাহে উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতে শুক্রবার দীর্ঘ বৈঠক করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় সূত্রে খবর, যে সব বিষয়ে দু’জনের মধ্যে সম্পর্ক ‘শীতল’ হয়ে পড়েছিল, অল্প সময়ের মধ্যেই সেগুলি সম্পর্কে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক স্তরে সিদ্ধান্ত নেবে তৃণমূল কংগ্রেস। এই সূত্রে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রদবদলের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

রাজনৈতিক উত্তাপ তো বটেই, চিকিৎসকের খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় নাগরিক সমাজের ক্ষোভের মুখেও সরকার ও দল নিয়ে বেশ খানিকটা ‘নিস্পৃহ’ই ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক। শুধু তা-ই নয়, এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় গোড়া থেকেই পুলিশ ও প্রশাসনের কিছু ‘ভুল’ পদক্ষেপ নিয়ে দলের অন্দরে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন তিনি। পাশাপাশি, এই রকম সময়ে তাঁর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছিলেন দলেরই একাংশ। নানা চর্চা দানা বাঁধছিল তৃণমূলে। নেতৃত্বের একাংশ মনে করছিলেন, সাংগঠনিক প্রধান হিসেবে অভিষেকের এই ভূমিকায় পরিস্থিতি আরও প্রতিকূল হয়ে উঠছে।

এমতাবস্থায় এ দিন সন্ধ্যায় আচমকাই কালীঘাটে বৈঠকে বসেন মমতা ও অভিষেক। সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় অভিষেক তাঁর মত সবিস্তার জানিয়েছেন তৃণমূল নেত্রীকে। মমতাও আশু কর্তব্যের বিষয়গুলি নিয়ে কথা বলেছেন তাঁর সঙ্গে। দলের এক নেতার কথায়, “এই আলোচনা দল তো বটেই, প্রশাসনের জন্যও ইতিবাচক।”

গত ১৪ অগস্ট আর জি কর হাসপাতালে তাণ্ডবের রাতে পুলিশি হস্তক্ষেপ ও দলমত নির্বিশেষে গ্রেফতারির দাবি করে বার্তা দিয়েছিলেন অভিষেক। তার পরে চিকিৎসকের খুন ও ধর্ষণ নিয়ে প্রশাসনের নানা পদক্ষেপে দলের অন্দরে নিজের অসন্তোষও স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে আগের দু’-এক বারের মতো এ বারেও ‘সরে’ ছিলেন অভিষেক। এই ‘সঙ্কটে’র সময়ে তাঁর ওই ‘নিষ্ক্রিয়তা’ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে নেতৃত্বের তরফে একাধিক বার্তাও গিয়েছে তাঁর কাছে।

দলীয় সূত্রের খবর, আর জি কর নিয়ে পরিস্থিতি উত্তাল হওয়ার পরে তৃণমূলের পরামর্শদাতা সংস্থার প্রধান প্রতীক জৈনের সঙ্গেও দীর্ঘ বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পরেই মমতা-অভিষেক বৈঠকের সলতে পেকেছে। এবং শেষ পর্যন্ত মুখোমুখি আলোচনায় গোটা পরিস্থিতি মোকাবিলায় দলের রণকৌশল নিয়ে কথা হয়েছে। অভিষেক বেরিয়ে যাওয়ার পরে তৃণমূল নেত্রীর কাছে যান দলের নেতা কুণাল ঘোষ। আর জি কর
সংক্রান্ত একটি বিষয়ে তাঁকে ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

অভিষেকের ‘নিস্পৃহতা’য় দলের নীচের তলাতেও অব্যবস্থা স্পষ্ট হতে শুরু করেছিল। সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহের প্রেক্ষিতে অভিষেকের অবস্থান নিয়ে চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছিল দলে। নেতাদের অনেকেই মনে করছেন, অভিষেক এই ভাবে ‘নিস্পৃহ’ থাকলে সরকার-বিরোধী প্রচারকেই সাহায্য করা হবে। ‘সেনাপতি’ হিসেবে অভিষেকের সক্রিয়তা চেয়ে দলেরই একাংশ সমাজমাধ্যমে ‘অনুরোধ’ করতে শুরু করেছেন, যা তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়াতে শুরু করেছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

R G Kar Medical College and Hospital Mamata Banerjee Abhishek Banerjee

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy