(বাঁ দিকে) অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, পড়ুয়াদের বিক্ষোভ (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
আরজি করের মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার পর থেকেই উত্তাল গোটা রাজ্য। বিচারের দাবিতে ওই হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তারেরা অবস্থান চালাচ্ছেন সেই প্রথম দিন থেকে। চিকিৎসকদের ধর্না অবস্থানের কারণে চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে বলেও অভিযোগ ওঠে। শুক্রবার এই আরজি কর হাসপাতালে দুর্ঘটনার কবলে পড়া কোন্নগরের এক যুবকের মৃত্যু হয়। অভিযোগ, বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে তাঁর। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সেই কথা স্মরণ করে দিয়ে আন্দোলনকারীদের আবারও কাজে ফেরার আহ্বান জানান। তাঁর কথায়, ‘‘জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি ন্যায্য। তবে তাঁদের এমন ভাবে প্রতিবাদ করার আহ্বান জানাই, যাতে পরিষেবা ব্যাহত না হয়।’’
শুক্রবার সকালে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ তাঁর এক্স হ্যান্ডল পোস্টে কোন্নগরের যুবকের মৃত্যুর কথা জানান। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন যে, সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানতে পেরেছেন, সকাল ৯টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত ওই যুবক পড়ে ছিলেন। তার পরেও আরজি করে তাঁকে ভর্তি নেওয়া হয়নি। শ্রীরামপুর থেকে কলকাতায় রেফার করা হয়। তবে চিকিৎসা হয়নি তাঁর।
কোন্নগরের ওই যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায়। অভিষেক সেই কথাই তুলে ধরেছেন নিজের এক্স হ্যান্ডলে। তিনি লেখেন, ‘‘পথ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ওই যুবক গুরুতর আহত হন। তিন ঘণ্টা রক্তপাত হয়। চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর।’’ জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে সমর্থন করলেও তাঁদের কাজে ফেরার আর্জি জানিয়েছেন তৃণমূলের সেনাপতি। তিনি এ-ও বলেন, ‘‘অবহেলার কারণে মৃত্যু হলে, তা অপরাধযোগ্য হত্যাকাণ্ডের সমতুল। যদি প্রতিবাদ চালিয়ে যেতে হয়, তা গঠনমূলক ভাবে করা উচিত। সহানুভূতি এবং মানবতার সঙ্গে লড়াই চালানো উচিত। যাতে আন্দোলনের কারণে কোনও অবহেলা না হয়, কারও প্রাণের ঝুঁকি না হয়।’’
কোন্নগরের এই ঘটনাকে কেন্দ্র রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় মৃত যুবকের বাড়িতে যান কোন্নগর পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন দাস এবং স্থানীয় কাউন্সিলর বাবলু পাল। স্বপনের অভিযোগ, বিনা চিকিৎসায় মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে যুবকের। গরীব মানুষেরাই অসুবিধায় পড়েন। তাঁর কথায়, ‘‘আজ আমার শহরের এক জনের প্রাণ চলে গেল। চিকিৎসকদের করজোড়ে বলব আপনারা আন্দোলন করুন। দাবিদাওয়া থাকলে সেগুলো বলুন, কিন্তু পরিষেবাটাও দিন। যাতে এই যুবকের মতো আর কারও প্রাণ না চলে যায়।’’
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার ভোরে কোন্নগর বেঙ্গল ফাইন মোড়ের কাছে রাজীব গান্ধী রোডে একটি ডাম্পার চাপা দিয়ে চলে যায় বিক্রম ভট্টাচার্য নামে বছর বাইশের যুবককে। বিবেক নগর এলাকার একটি বাড়িতে মা এবং দিদিমাকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন তিনি। গাড়ি চালাতেন। দুর্ঘটনায় তাঁর পা দু’টি গুরুতর জখম হয়। তড়িঘড়ি তাঁকে শ্রীরামপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়। অভিযোগ, প্রায় তিন ঘণ্টা বিনা চিকিৎসায় পড়ে থেকে সেখানেই মৃত্যু হয় ওই যুবকের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy