কথা ছিল, আগামী ১৫ মার্চ দলের জেলা সভাপতি এবং চেয়ারম্যানদের নিয়ে বৈঠকে বসবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটার তালিকা যাচাইয়ের কাজে জেলায় জেলায় তৈরি কোর কমিটি স্থগিত হয়ে যাওয়ার পর এ বার অভিষেকের বৈঠকের দিনও বদলে গেল! তৃণমূল সূত্রে খবর, আগামী ১৫ মার্চ, শনিবারের পরিবর্তে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক জেলা ও চেয়ারম্যানদের নিয়ে ১৬ মার্চ, অর্থাৎ রবিবার ভার্চুয়াল বৈঠক করবেন।
রাজ্যে ‘ভুয়ো ভোটার’-এর আশঙ্কার কথা জানিয়ে নেতাজি ইন্ডোরের বৈঠকে দলীয় কর্মীদের পথে নামার বার্তা দিয়েছিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই অনুযায়ীই গত বৃহস্পতিবার জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন দলের রাজ্য নেতৃত্ব। বৈঠকে ঠিক হয়েছিল, সাংগঠনিক জেলাভিত্তিক কমিটি করে দ্রুত ভোটার তালিকার গরমিলের খোঁজে নামা হবে। কিন্তু দুপুরের বৈঠকে গৃহীত সেই সিদ্ধান্ত স্থগিত হয়ে গিয়েছিল রাতেই। দলীয় সূত্রে খবর, কমিটি গঠনের এই প্রক্রিয়া সম্পর্কে ‘অবহিত’ ছিলেন না তৃণমূলনেত্রী। বিষয়টি জানতে পেরে আপাতত তা স্থগিত রাখতে বলেছেন তিনি।
বিষয়টি নিয়ে দলের অন্দরে জলঘোলার পর এ বার অভিষেকের বৈঠকের হঠাৎ দিন পরিবর্তন নিয়েও স্বাভাবিক ভাবেই তৃণমূলের অন্দরে আলোচনা শুরু হয়েছে। দলের তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে এর কারণ জানা যায়নি। তবে অভিষেকের ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে খবর, ১৫ মার্চ দোল রয়েছে। তাই পরের দিন রবিবার তিনি বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ভোটার তালিকা যাচাইয়ের কাজে মমতার গঠিত রাজ্য স্তরের কমিটির সদস্য হলেও বৃহস্পতিবারের বৈঠকে ছিলেন না অভিষেক। দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর নেতৃত্বে সেই বৈঠক হয়েছিল। ওই বৈঠকে অভিষেক-আহূত বৈঠকের সূচি ঘোষণার ‘পদ্ধতি’ নিয়েও বিস্তর আলোচনা হয়েছিল দলের অন্দরে। বৃহস্পতিবার তৃণমূল ভবনের বৈঠকের পরেই জানা গিয়েছিল, অভিষেক ১৫ মার্চ বিকেল ৪টেয় জেলার নেতাদের সঙ্গে ‘ভার্চুয়াল’ বৈঠক করবেন। কিন্তু দলীয় সূত্রে খবর, অভিষেকের বৈঠকের কথা দলের নেতারা পরে জানতে পেরেছিলেন। অনেকেই জেনেছিলেন বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে গাড়িতে উঠে গন্তব্যে যাওয়ার পথে মোবাইল ফোনে সংবাদমাধ্যমের খবর দেখে। আবার অনেকে জানতে পারেন তৃণমূল ভবনের উপর থেকে নীচে নামতে নামতে। ‘পদ্ধতি’ নিয়ে আলোচনা হয়েছিল সেই কারণেই। তৃণমূল সূত্রের খবর, বৈঠকের একেবারে শেষ পর্বে যখন সকলে এক এক করে বেরিয়ে যাচ্ছেন, তখন এক ব্যক্তি নেতৃত্বের কানে কানে গিয়ে কিছু বলেন। তার পরেই অভিষেকের ‘ভার্চুয়াল’ বৈঠকের কথা ঘোষণা করা হয়। বদলে গেল সেই বৈঠকের দিনক্ষণ। পিছিয়ে গেল এক দিন।