Advertisement
E-Paper

‘সোনা-কাণ্ড’ নিয়ে পাল্টা চ্যালেঞ্জ অভিষেকের, অভিযোগ রাজনৈতিক চক্রান্তের

অভিষেকের স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায় গত ১৫ মার্চ গভীর রাতের বিমানে (অর্থাৎ ১৬ মার্চ ভোর) ব্যাঙ্কক থেকে সোনা এনেছিলেন বলে শুল্ক দফতর যে অভিযোগ এনেছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেও জানিয়েছেন অভিষেক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৯ ০৩:৪৮
সাংবাদিক বৈঠকে অভিষেক। রবিবার। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল

সাংবাদিক বৈঠকে অভিষেক। রবিবার। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল

এতদিন যা গুঞ্জন ছিল, রবিবার তাকেই রীতিমতো সাংবাদিক বৈঠক করে মান্যতা দিলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে বিধিবহির্ভূত ভাবে সোনা নিয়ে আসার যে অভিযোগ শুল্ক দফতর করেছে, তা সম্পূর্ণ অস্বীকার করে বিষয়টিকে কেন্দ্রীয় সরকারের রাজনৈতিক চক্রান্ত বলে পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন অভিষেক। দিল্লির অর্থ মন্ত্রক থেকে এই অভিযোগ করার জন্য শুল্ক দফতরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল বলেও তিনি একটি চিঠি দেখিয়ে দাবি করেন। তাঁর আরও দাবি, তিনি এ ব্যাপারে যে কোনও ধরনের তদন্তের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত।

অভিষেকের স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায় গত ১৫ মার্চ গভীর রাতের বিমানে (অর্থাৎ ১৬ মার্চ ভোর) ব্যাঙ্কক থেকে সোনা এনেছিলেন বলে শুল্ক দফতর যে অভিযোগ এনেছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেও জানিয়েছেন অভিষেক। তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমার স্ত্রী সোনা-সহ ধরা পড়ে থাকলে, শুল্ক দফতর সঙ্গে সঙ্গে তা বাজেয়াপ্ত করেনি কেন? আর কেনই বা সাতদিন পরে এফআইআর করল তারা?’’ দিন দুই আগে এ নিয়ে বিমানবন্দর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন রুজিরা। তাঁর সঙ্গে শুল্ক অফিসারদের ‘দুর্ব্যবহারের’ অভিযোগে ব্যারাকপুর আদালতে মামলাও করেছেন অভিষেকের স্ত্রী।

শুল্ক দফতরের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, এক পুরুষ যাত্রী টানা ১ বছর বিদেশে থাকার পরে ভারতে আসার সময়ে সর্বাধিক ৫০ হাজার টাকার সোনা আনতে পারেন। তার জন্য শুল্ক-কর দিতে হয় না। মহিলা যাত্রী ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সোনায় ছাড় পান। অন্যথায় দেহের গয়না ছাড়া অন্য সোনার উপরে শুল্ক-কর দিতে হয়।

শুল্ক দফতরের এফআইআর-এ বলা হয়েছে, বিমানবন্দরের স্ক্যানিং মেশিনে ধরা পড়েছিল রুজিরাদের সঙ্গে থাকা তিনটি ব্যাগে গয়না রয়েছে। রুজিরার সঙ্গে থাকা সোনার পরিমাণ অবশ্য উল্লেখ নেই এফআইআর-এ। তবে বিভিন্ন মহল থেকে তা দু’ কিলোগ্রাম ছিল বলে অভিযোগ। অভিষেকের দাবি, ‘‘অনেকে বলছেন দু’কেজি সোনা ছিল আমার স্ত্রীর সঙ্গে। মাত্র দু’গ্রাম সোনা ছিল, এটুকুও প্রমাণ করে দেখাক।’’

বিধাননগরে পুলিশের ‘চাপে’ ওই রাতে অভিষেকের স্ত্রীর ব্যাগ পরীক্ষা না করেই ছেড়ে দিতে শুল্ক কর্তাদের বাধ্য করা হয় বলে শুল্ক দফতর অভিযোগ করেছে। অভিষেকের দাবি, ‘‘আমার স্ত্রী ব্যাঙ্ককে চিকিৎসা করিয়ে কলকাতায় ফিরছিলেন। বিমান থেকে অবতরণের মুহূর্ত থেকে শুরু করে কোথাও স্ত্রীর সঙ্গে বিশেষ সহযোগিতা(অভিষেক বোঝাতে চেয়েছেন, পুলিশ বা নিরাপত্তা) ছিল, বিমানবন্দরের সিসিটিভি ফুটেজে তার প্রমাণ দেখাতে পারলে, আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব।’’

শুল্ক অফিসাররা তাঁর স্ত্রীর কাছে ৫০ হাজার টাকা চেয়েছিলেন বলেও অভিষেক এ দিন অভিযোগ করেন। সেই টাকা দিতে রুজিরা অস্বীকার করায় তাঁকে বিমানবন্দরে দীর্ঘক্ষণ হেনস্থা করা হয় বলে অভিষেকের অভিযোগ। রুজিরা ও তাঁর সঙ্গী মহিলার সঙ্গে থাকা তিনটি ব্যাগ পরীক্ষা করতে শুল্ক অফিসারদের বাধা দেন বলে শুল্ক দফতরের এফআইআর-এ বলা হয়েছে। অভিষেকের জবাব, ‘‘শুল্ক অফিসারদের কোনও বাধা দেওয়া হয়নি। উল্টে তাঁদের চাহিদামতো টাকা দিতে না চাওয়ায় আমার স্ত্রীকে গ্রিন চ্যানেল থেকে রেড চ্যানেলে নিয়ে আসা হয়।’’

আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

প্রশ্ন উঠেছে, কোনও যাত্রী একবার বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে গেলে তাঁর সঙ্গে সোনা ছিল কি না, তা কী ভাবে প্রমাণ হবে? বিমানবন্দরে শুল্ক দফতরের ভিতরে যে সিসি ক্যামেরা রয়েছে, তার ছবি থেকে এটা কি বোঝা সম্ভব, কোন যাত্রীর কাছে সোনা রয়েছে, কোন যাত্রীর কাছে নেই? এমনকী, পুলিশের ‘চাপে’ কেন শুল্ক-অফিসাররা অভিষেকের স্ত্রীকে ছেড়ে দিয়েছেন, এই অভিযোগ ঠিক হলে কর্তব্যে গাফিলতির দায় শুল্ক অফিসারদের উপরেই বর্তায় না কি? এর জবাব অবশ্য মেলেনি শুল্ক কমিশনার মনীশ চন্দ্রের কাছে। তাঁর সঙ্গে এ দিন যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। তাঁর মোবাইলে পাঠানো বার্তারও জবাব দেননি।

শুল্ক কর্তাদের উপরে বিধাননগরের পুলিশের ‘চাপ’ দেওয়ার বিষয়টিও কার্যত অস্বীকার করে অভিষেক দাবি করেন, ‘‘বিমানবন্দর থেকে বেরনোর সময়ে রাত ১টা ৫৫ মিনিট নাগাদ আমার ব্যক্তিগত সচিবকে রুজিরা ফোন করে পরিস্থিতির কথা জানান। আমি তখন বাঁকুড়ায় ছিলাম। ঘুমোচ্ছিলাম। স্ত্রী অসুস্থ হতে পারেন, এই ভেবে বিমানবন্দর থেকে বেরনোর পরে ১০ মিনিটের জন্য আমার স্ত্রীর সঙ্গে এক মহিলা পুলিশ ছিলেন।’’

Abhisek Banerjee TMC BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy